কলকাতা, নদিয়া ও ঝাড়গ্রাম: একাধিক জায়গায় পাওয়ার কাটের জেরে নাকাল সাধারণ মানুষ। কলকাতা (Kolkata) থেকে জেলা, গ্রাম থেকে শহর-শহরতলি, সর্বত্রই একই অবস্থা। গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে লোডশেডিংয়ের বহর। বিদ্যুৎ দফতরের SMS আসছে গ্রাহকদের মোবাইলে। সেখানে লেখা হয়েছে প্রাক পুজোর আগে মেন্টেনেন্সের কারণে দিনে ও রাতে বন্ধ থাকবে বিদ্যুৎ। পুজোর সময় নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দেওয়াই বিদ্যুৎ দফতরের লক্ষ্য সেই উদ্দেশ্যেই আপাতত এই কাজ চলবে। যদিও শুধু এই কারণকে মানতে চাইছেন না অনেকে। নতুন প্রকল্প না আসাকেও দুষছেন একাংশ। যেহেতু গত পাঁচ বছরের তুলনায় শহর ও শহারাঞ্চল মিলিয়ে এসির সংখ্যা অনেক বেড়েছে। একই সঙ্গে গরম থেকে রেহাই পেতে এসি ছাড়াও একাধিক বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার বেড়ে গেছে। ফলে বাড়ছে বিদ্যুতের চাহিদা। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবারই ৭০০ মেগাওয়াট কম বিদ্যুৎ দিয়েছে পিডিসিএল। ফলে জেলা জুড়ে বেড়েছে লোডশেডিং। বিশেষজ্ঞদের মতে গত পনেরো বছরে নতুন বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র তৈরি হয়নি। পুরোন প্রকল্পে সমস্যা ক্রমশ বাড়ছে। ফলে পুজো পর্যন্ত আশ্বাস দিলেও আদৌ সমস্যার সমাধান হবে কি না সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
লাগাতার লোডশেডিংয়ের কারণে কারণে বিপাকে পড়েছেন দুর্গা পুজো কমিটির সদস্যরা। বিপাকে রানাঘাট সুভাষপল্লীর তাঁত শিল্পীরাও। গত সাতদিন বিদ্যুৎ এলাকায় ঠিকমতো বিদ্য়ুৎ সরবরাহ নেই। সেই ক্ষোভেই রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন তাঁত শ্রমিক ও স্থানীয় বাসিন্দারা। শুক্রবার সকাল ন’টার কিছু পর থেকে রানাঘাট কৃষ্ণনগর রাজ্য সড়কে অবরোধ শুরু হয়। ঘটনাস্থলে আসেন বিদ্যুৎ দফতরের আধিকারিকরা। খবর যায় পুলিশেও। শেষে বিদ্যুৎ কর্মীদের আশ্বাসে অবরোধ উঠে যায়।
একই ছবি দেখা গিয়েছে ঝাড়গ্রামেও। বৃহস্পতিবার রাতভর দফায় দফায় লোডশেডিং। বিপর্যস্ত জেলার বিস্তৃর্ণ অংশের জনজীবন। প্রবল গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা সাধারণ মানুষের। বৃহস্পতিবার, গতকাল রাত এগারোটা নাগাদ লোডশেডিং শুরু হয় ঝাড়গ্রাম জেলাজুড়ে। ঘণ্টা দুয়েক লোডশেডিং থাকার পর রাত একটার দিয়ে আসে কারেন্ট। কিন্তু, ফের ভোরের দিকে লোডশেডিং হয়। অনেক জায়গাতেই বিদ্যুৎ না থাকায় পানীয় জলের সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। তাতেই ক্ষোভে ফুঁসছেন জেলার মানুষেরা।
রাজ্যের এ অবস্থা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে তিনি বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের দেউলিয়া সরকার পয়সার অভাবে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে কয়লা সরবরাহ করতে পারছে না। তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো প্রয়োজনের তুলনায় উৎপাদন ক্ষমতা কমাতে বাধ্য হয়েছে। যার ফলে এখন ঘাটতির পরিমাণ ১২০০ মেগাওয়াট।” অথচ রাজ্য সরকার বারবার দাবি করছে এ রাজ্যে বিদ্যুৎ এটাই বেশি, যে বাইরের রাজ্যে তা সাপ্লাই করা যাচ্ছে। দিন কয়েক আগেও বিধানসভায় বলেছিলেন অরূপ বিশ্বাস।