
কলকাতা: বইমেলা শেষ হয়েছে। কিন্তু, কলকাতা হাইকোর্টে গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতির (APDR) মামলার নিষ্পত্তি হল না। বুধবার প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যের বেঞ্চ জানিয়ে দিল, বইমেলায় এপিডিআরের স্টল না পাওয়ায় গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব হয়েছে কি না, তা শুনবে হাইকোর্ট। তিন সপ্তাহ পর মামলার পরবর্তী শুনানি হবে বলে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছে।
গত ২৮ জানুয়ারি কলকাতা বইমেলা শুরু হয়েছিল। শেষ হয়েছে গত ৯ ফেব্রুয়ারি। ৪০-৪৫ বছর পর এবার বইমেলায় স্টল দিতে পারেনি এপিডিআর। বইমেলায় স্টল দেওয়া নিয়ে গিল্ড এপিডিআরের আবেদন খারিজ করার পর মানবাধিকার সংগঠনটি কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়। স্টল বসাতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করে। বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে গিল্ড জানিয়েছিল, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে লাইসেন্স, রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট ও ক্যাটালগ জমা দিতে পারেনি এপিডিআর। এই নথিগুলি থাকলেই সাধারণত বইমেলায় স্টল বসানোর অনুমতি দেওয়া হয়। গিল্ডের বক্তব্য মেনে নিয়ে এপিডিআর-ও জানায়, তাদের কোনও লাইসেন্স কিংবা রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট নেই। এরপর এপিডিআরের আবেদন খারিজ করে দেন বিচারপতি সিনহা।
প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় এপিডিআর। সেই মামলার শুনানিতে এদিন প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, যেহেতু মেলা শেষ হয়ে গেছে তাই আপাতত কিছু করার নেই। ডিভিশন বেঞ্চ বলে, মেলা শেষ হয়ে যাওয়ায় APDR-কে স্টল না দেওয়ার মামলায় কোনও তাড়াহুড়ো নেই। তবে স্টল না পাওয়ায় গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব করা হয়েছে কি না, তা শুনবে আদালত।
এদিন গিল্ডের আইনজীবী বলেন, “গিল্ডের নিজস্ব আইন আছে। এখানে রাজ্যের কিছু করার নেই। প্রতিবছর এই রুল পরিবর্তন হতে পারে।”
এপিডিআরের আইনজীবী ঝুমা সেন বলেন, দীর্ঘ চার দশকের উপর এপিডিআর প্রতিবছর বইমেলায় স্টল দিয়ে এসেছে। কিন্তু এবার রেজিস্টার্ড সংগঠন নয় বলে এপিডিআর-কে স্টল না দেওয়ায় প্রশ্ন উঠছে গণতান্ত্রিক অধিকার নিয়ে। গণতান্ত্রিক অধিকার নিয়ে প্রশ্নের সুযোগ রয়েছে বলে মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি। তিন সপ্তাহ পরে এই নিয়ে শুনানি হবে।
এই নিয়ে এপিডিআরের সাধারণ সম্পাদক রঞ্জিত শূর বলেন, “গত ৪০-৪৫ বছর ধরে আমরা বইমেলায় এপিডিআরের নামে স্টল দিচ্ছি। গণতান্ত্রিক অধিকার, মানবাধিকারের উপর আমরা অনেক বই প্রকাশ করি। আমাদের রেজিস্ট্রেশন নেই। তারপরও এতদিন স্টল পেয়ে এসেছি। এই প্রশ্ন এতদিন উঠেনি। এবার ইচ্ছাকৃতভাবে আমাদের স্টল দেওয়া হয়নি। এটা তো বইমেলা। আর বই তো মতপ্রকাশের মাধ্যম। এটা তো গণতান্ত্রিক অধিকার। সেই অধিকার হরণ করা হয়েছে।”