Refer syndrome: ‘রেফার রোগই’ কাড়ল মেঘনাদকে? কোনও দাওয়াই কি কাজ করছে না?

TV9 Bangla Digital | Edited By: সঞ্জয় পাইকার

Jan 17, 2023 | 8:18 PM

Refer Syndrome: হাসপাতালগুলি পদক্ষেপের কথা বললেও রেফারের ঘটনা যে কমেনি, সম্প্রতি একাধিক ঘটনায় তা প্রমাণিত। মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারপরও, বাঙুর, এসএসকেএম, চিত্তরঞ্জন ঘুরে এনআরএসে মরতে হচ্ছে মেঘনাদদের।

Refer syndrome: ‘রেফার রোগই’ কাড়ল মেঘনাদকে? কোনও দাওয়াই কি কাজ করছে না?
NRS হাসপাতালে মৃত মেঘনাদ চন্দ্র

Follow Us

কলকাতা: মেঘনাদ মঙ্গলবার সন্ধে থেকে বাঙুর হাসপাতাল, এসএসকেএম, চিত্তরঞ্জন হয়ে বুধবার ভোররাতে এনআরএস-এ পৌঁছয়। ততক্ষণে তাঁর প্রাণ ওষ্ঠাগত। পরিবারের দাবি, এনআরএস-এ ভোর ৫টায় পৌঁছয় মেঘনাদ। তারপর দু’ঘণ্টা কেটে গেলেও বেড মেলেনি। ন্যূনতম চিকিৎসা পরিষেবাও পাননি বলে মেঘনাদের পরিবারের অভিযোগ। মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন ২৬ বছরের যুবক। এই মৃত্যুর দায় কার? দিনভর চলল তরজা। যদিও কোনও সদুত্তর মেলেনি। অনেকে বলছেন, ‘রেফার রোগে’ অকালে প্রাণ হারালেন টালিগঞ্জের মেঘনাদ চন্দ্র। এর আগে একাধিক মেঘনাদের প্রাণ কেড়েছে এই ‘রেফার রোগ’। ‘রেফার রোগ’ নিরাময়ে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী নানা দাওয়াই দিয়েছেন। একাধিক নিয়ম জারি করে এই রোগ রোখার চেষ্টা হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের তরফেও। তারপরও কেন মেঘনাদদের প্রাণ যাচ্ছে? যদিও লাখ টাকার প্রশ্ন। একবার দেখে নেওয়া যাক ‘রেফার রোগ’ সারাতে কী কী ধরনের দাওয়াই দেওয়া হয়েছে এত দিনে।

সোমবারই এসএসকেএম-এর ৬৭তম প্রতিষ্ঠা দিবসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, ভোর রাতে আপৎকালীন পরিস্থিতিতে জুনিয়র চিকিৎসকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই ধরনের পরিস্থিতি সামলাতে তাঁরাই সবথেকে বেশি দায়িত্ব নেন। জুনিয়র চিকিৎসকদের প্রশংসা করেছিলেন তিনি। পাশাপাশি এ-ও মনে করিয়ে দেন, একটু মানবিক হতে হবে চিকিৎসকদের। রোগীদের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করতে হবে। পরের দিনই এনআরএস-এ দেখা গেল উল্টো চিত্র। মৃত মেঘনাদের পরিবারের দাবি, সকাল ৭টা পর্যন্ত কোনও চিকিৎসাই শুরু হয়নি। বিনা চিকিৎসা মেঘনাদ মারা গিয়েছে বলে অভিযোগ। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, কোনও গাফিলতি ছিল না, অনেক আগেই চিকিৎসা শুরু হয়ে গিয়েছিল।

‘রেফার রোগ’ সারাতে মুখ্যমন্ত্রী শুধু পরামর্শই দেননি, হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন একাধিকবার। মমতাকে বলতে শোনা গিয়েছে, যিনি রেফার করবেন, তাঁকেই রোগীর দায় নিতে হবে। কোন কোন কেসে রেফার হচ্ছে এবং গর্ভবতী মায়ের মৃত্যু কেন হয়েছে, সব রেকর্ড রাখতে হবে। স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগমকে আরও কঠোর হওয়ার পরামর্শ দেন মুখমন্ত্রী। এরপরই স্বাস্থ্য দফতর নড়েচড়ে বসে। রেফার সংক্রান্ত একাধিক নিয়ম জারি করা হয়। চিকিৎসা পরিষেবাকে ‘এসেনশিয়াল’ এবং ‘ডিজায়ারেবল’ ক্যাটগরিতে ভাগ করা হয়। ৩৬৮টি ‘এসেনশিয়াল’ এবং ৬৭টি ‘ডিজায়ারেবল’ পরিষেবা চিহ্নিত করে বলা হয় কোন কোন পরিষেবায় রেফার করা যাবে আর কোনটিতে নয়। যথেচ্ছ রেফার আটকাতে জেলা হাসপাতালগুলিতে সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হয়।

গত বছর অগস্টে আরও একটি নিয়ম জারি করা হয় স্বাস্থ্য দফতর থেকে। কোন রোগীকে কোথায় রেফার করা হচ্ছে স্বাস্থ্য দফতরের পোর্টালে আপডেট করতে হবে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালকে। তার সঙ্গে রেফারের কারণও লিখে দিতে হবে। শুধু রোগীর নাম নয়, যে অ্যাম্বুল্যান্সে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তার নম্বরও নথিভুক্ত করতে হবে। এই সব তথ্য প্রতি মাসে অডিট করে দেখবে স্বাস্থ্য দফতর।

শুধু অডিট নয় আর একটু পিছিয়ে গেলে দেখা যাবে, রেফার আটকাতে বিভিন্ন জেলার হাসপাতালে নিয়ম করে পরিদর্শন করেছেন স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা। কী কারণে রেফার করা হচ্ছে, তার ফাঁক-ফোঁকরগুলি চিহ্নিত করে দ্রুত নিরাময়ের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু বাস্তবে যে কোনও চিত্র পাল্টায়নি, সম্প্রতি একাধিক রেফারের ঘটনায় তার প্রমাণ। এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারপরও, বাঙুর, এসএসকেএম, চিত্তরঞ্জন ঘুরে এনআরএসে মরতে হচ্ছে মেঘনাদদের।

Next Article