
কলকাতা: ১৬ দিন পর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে পা রাখলেন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ভাস্কর গুপ্ত। গত ১ মার্চ ওয়েবকুপার বার্ষিক সাধারণ সভা ঘিরে উত্তপ্ত হয়েছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যকে শারীরিকভাবে হেনস্থার অভিযোগ ওঠে। ঘটনার পর থেকে আর বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে পারেননি তিনি। অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। ভর্তি হতে হয়েছিল হাসপাতালে। অবশেষে ১৬ দিন পর সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ে এলেন ভাস্কর গুপ্ত। আর ক্যাম্পাসে পা রেখেই স্পষ্ট করে দিলেন, কর্মসমিতির বৈঠক ডাকতে সরকারের কাছে আহ্বান জানাবেন তিনি।
এদিন সকাল পৌনে এগারোটা নাগাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকেন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ভাস্কর গুপ্ত। বিশ্ববিদ্যালয়ে পা রেখে সর্বপ্রথম সহউপাচার্য, রেজিস্ট্রার-সহ কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। তারপর গত কয়েকদিনে যে পরীক্ষাগুলি নেওয়া হয়নি, সেই পরীক্ষা পুনরায় নেওয়ার বিষয়ে পরীক্ষা কমিটির সঙ্গে বৈঠকে বসেন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য।
পরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আগের থেকে কিছুটা সুস্থ রয়েছেন। তবে চিকিৎসক তাঁকে বেশ কিছু সাবধানতা অবলম্বন করতে বলেছেন। যাদবপুরে গত কয়েকদিন যা ঘটেছে, তা নিয়ে কি কর্মসমিতির বৈঠক ডাকবেন? কর্মসমিতির বৈঠক ডাকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “অস্থায়ী উপাচার্য হিসেবে কর্মসমিতির বৈঠক ডাকার জন্য সরকারি অনুমতির প্রয়োজন। আমরা সরকারের কাছে কর্মসমিতির বৈঠক নিয়ে আবেদন করব।”
বেশ কিছুদিন ধরেই ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে সরব ছাত্র সংগঠনগুলি। এই নিয়ে এদিন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য বলেন, “আমরা ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পক্ষে। সরকারকেও বিষয়টি আমরা বারবার জানিয়েছি। আমরা মনে করি সম্পূর্ণরূপে ছাত্র ভোট হওয়া উচিত। ছাত্র সংসদ নির্বাচনই একমাত্র সুস্থ পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সহায়ক হবে বলে আমরা মনে করি।” এই মুহূর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা নেই বলে তিনি দাবি করেন। বলেন, দিব্যি ক্লাস হচ্ছে। পড়ুয়ারা পরীক্ষা দিচ্ছেন।
উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়ালে আজাদ কাশ্মীর স্লোগান লেখা দেখা গিয়েছে। এই নিয়ে এদিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ভাস্কর গুপ্ত বলেন, “আমি একটা কথা বলেছি, রাষ্ট্রবিরোধী আমরা কোনও কিছু সমর্থন করি না। কেউই করেন না। কিন্তু, আমাকে যদি নিশ্চিত হতে হয় যে দেওয়ালে আজ এটা লেখা রয়েছে, কাল অন্য কিছু লেখা রয়েছে এবং সেটা আমার ছাত্রই করেছে, তাহলেই তো নিশ্চিতভাবে বলা যায়, আমার ছাত্রই দোষী। রাষ্ট্রের আইন যেভাবে কাজ করবে, সেটা তাকে করতে দিতে হবে। কিন্তু, আমাদের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই।”
যাদবপুরে পুলিশ আউটপোস্ট বসানো নিয়ে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য বলেন, “আমাদের কাছে প্রস্তাব এসেছে ফাঁড়ি ও ব্যারাক তৈরি করার জন্য। আমরা কর্মসমিতির বৈঠকে এ বিষয়টি উত্থাপন করব। সেখানে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে। তবে আমাদের কাছে এত জমি নেই।” প্রসঙ্গত, ২০০০ স্কয়্যার ফিট জায়গা চাওয়া হয়েছে পুলিশ ব্যারাক তৈরি করার জন্য। একইরকমভাবে ২০০০ স্কয়্যার ফিট জায়গা চাওয়া হয়েছে পুলিশ ফাঁড়ি তৈরির জন্য।