কলকাতা: রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্ব বাংলার লোগো কেন, প্রশ্ন তুললেন প্রধান বিচারপতির প্রকাশ শ্রীবাস্তব। জোড়াসাঁকো (Jorasanko) ঠাকুরবাড়িতে বেআইনি নির্মাণ মামলায় আবারও প্রশ্নের মুখে শাসকদল। গত বছরই নভেম্বর মাসে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জোড়াসাঁকোর বাড়ি অর্থাৎ মহর্ষী ভবনে তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় কার্যালয় ভাঙার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ। আদালতের নির্দেশে জোড়াসাঁকোর বাড়িতে তৈরি হওয়া দলীয় কার্যালয় বন্ধ হয়ে গেলেও এখনও বিশ্ব বাংলার লোগো রয়ে গিয়েছে। এই বিষয়টি সোমবার আবারও আদালতের দৃষ্টিতে আনা হয়। সোমবার প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব জানতে চান, বিশ্ব বাংলার লোগো এখনও কেন রয়েছে? লোগো সরাতে রাজ্যের তরফে কী ভূমিকা নেওয়া হয়েছে? শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক কার্যালয় কেন? আদালতের আগের নির্দেশের প্রেক্ষিতে ঠিক কতটা কাজ এগিয়েছে, তা দেখার দায়িত্ব পুরসভার ওপর দেওয়া হয়। পুরসভা ও বিশেষ কমিটি গোটা বিষয়টি তদন্ত করবে বলে প্রধান বিচারপতি জানিয়ে দেন। ২৭ মার্চ থেকে এই তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করবে। ১০ এপ্রিল এই মামলার পরবর্তী শুনানি। আর সেদিন আদালতের সামনে গোটা বিষয়টি তুলে ধরতে হবে তদন্ত কমিটিকে।
জোড়াসাঁকোর একটা অংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসাবে ব্যবহার করা হয়। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসও রয়েছে। এই ভবনেরই একটি অংশে হঠাৎ তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় তৈরি করা হয়। স্বাভাবিকভাবেই সেখানে শুরু হয়েছিল রাজনৈতিক নেতাদের আনাগোনা। একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কীভাবে রাজনৈতিক দলের কার্যালয়, তা নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক তৈরি হয়। এর প্রেক্ষিতে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। হাইকোর্ট আগেই তৃণমূলের এই অফিস সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। পরবর্তীতে দেখা যায়, হোর্ডিং খোলা হলেও দলীয় কর্মীদের আনাগোনা লেগেই থাকত।
এই মামলায় রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে হলফনামা আগেই জমা দেওয়া হয়েছিল। গত নভেম্বরের শুনানিতে হাইকোর্টে ভৎর্সনার মুখে পড়তে হয় শাসকদলকে। প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেছিলেন, “হেরিটেজ বিল্ডিং না হলেও কি যে কেউ গিয়ে কোথাও পার্টি অফিস বানিয়ে ফেলতে পারে?” কলকাতা পুরসভার তরফে জানানো হয়, পুরসভার হেরিটেজ দফতরে বেআইনি নির্মাণ খুঁজে পায়। আদালতের পর্যবেক্ষণ হেরিটেজ নির্মাণ ভেঙে ফেলা যায় না। ভেঙে ফেলা অংশের পুনরুদ্ধার প্রয়োজন। কলকাতা পুরসভার পদক্ষেপ নিয়ে আগেই অসন্তুষ্ট ছিল আদালত। আবারও কাজের গতিপ্রকৃতির বিবরণ জানিয়ে রিপোর্ট জমা করতে বলা হয়েছে পুরসভা ও তদন্ত কমিটিকে।