
কলকাতা:
কলকাতা: “নিয়োগ দুর্নীতিতে আসল অপরাধী কে সবাই জানে, আমার জীবদ্দশায় তারা ধরা পড়বে বলে তো মনে হয় না। আমি তো নিজে ধরতে যেতে পারব না।” এজলাসে বসেই এমন মন্তব্য করলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তবে, নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত কোনও মামলার শুনানিতে একথা বলেননি বিচারপতি। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এই মন্তব্য নজিরবিহীন বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
দুপুর ১২ টা ৪৫ মিনিট নাগাদ এক ব্যক্তি বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে আসেন। তিনি নিজেকে সুনীল ভট্টাচার্য বলে পরিচয় দেন। বিচারপতিকে তিনি জানান, নাকতলার বাসিন্দা হলেও কর্মসূত্রে ওড়িশায় থাকেন। তিনি বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর দাবিও করেন। তাঁর বক্তব্য, নাকতলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সারমেয়দের জন্য যে ফ্ল্যাট আছে, তা এলাকার সবাই জানে, কিন্তু পুলিশ জানত না। অবাককাণ্ড!
বিচারপতিকে জনৈক ব্যক্তি বলেন, “আমি এবং আমার ৯২ বছরের মা আপনার ফ্যান। বাংলা জুড়ে আপনার আরও অনেক ফ্যান রয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “আপনি একজন নমস্য ব্যক্তি। আসল অপরাধীদের ধরতে হবে।”
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে সেসময় বেশ কিছু নস্ট্যালজিক হতে দেখা যায়। এরপর তিনিও তাঁর এক পূর্ব অভিজ্ঞতার বর্ণনা দেন। তিনি বলেন, “৬ বছর আগে ওড়িশা থেকে আসার সময় ট্রেনে এক ব্যক্তি ব্যাঙ্গ করেছিলেন। সে ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করেছিলেন, আপনি পশ্চিমবঙ্গে থাকেন? আপনাদের ওখানে টাকা নিয়ে কলেজে ভর্তি হয়? আমাকে মাথা নিচু করে শুনতে হয়েছে।”
বিচারপতি আরও বলেন, “কয়েক বছর আগে আমার একজন ক্লার্ক ছিলেন ঘনশ্যাম বলে, তার মেয়েকে মেদিনীপুরের একটি কলেজে ইংরেজি নিয়ে স্নাতক স্তরে ভর্তির জন্য আড়াই লক্ষ টাকা চাওয়া হয়েছিল। এই তো অবস্থা।” এরপরই বিচারপতি উল্লেখ্যযোগ্য মন্তব্য, “নিয়োগ দুর্নীতিতে আসল অপরাধী কে সবাই জানে, আমার জীবদ্দশায় তারা ধরা পড়বে বলে তো মনে হয়না। আমি তো নিজে ধরতে যেতে পারব না।” ওই ব্যক্তির দিকে তাকিয়ে বিচারপতির দৃঢ় মন্তব্য, “সবাই মিলে চেষ্টা করে এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।”