কলকাতা: কুন্তল, চন্দন, তাপস, নীলাদ্রি… পরপর বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই (CBI)। তারপরও প্রশ্ন উঠছে দুর্নীতির মাথা কে? আসল লোককে কেন হেফাজতে নেওয়া হচ্ছে না, সেই প্রশ্ন ঘুরেফিরে আবারও সামনে এল। এবার শ্রী রামকৃষ্ণের কথা শোনা গেল বিচারকের মুখে। বৃহস্পতিবার ব্যাঙ্কশাল কোর্টে সিবিআই-এর বিশেষ আদালতে পেশ করা হয় কুন্তল ঘোষ, তাপস মণ্ডল ও নীলাদ্রি ঘোষকে। এই তিনজনের আইনজীবীরা যখন জামিনের আর্জি জানিয়ে সরব হন, তখন বিচারক অর্পণ চট্টোপাধ্য়ায় কেন্দ্রীয় সংস্থা সিবিআই-কে প্রশ্ন করেন, ‘রামকৃষ্ণের কথা শুনেছেন? গুরু কে হয়? ভক্তের ভগবান। এদের গুরু কে?’ উত্তরে সিবিআই জানায়, সেটাই খোঁজার চেষ্টা করছে তারা। বিচারক আরও বলেন, ‘চেনটা সম্পূর্ণ করুন।
নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় সম্প্রতি যাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁদের কেউ এজেন্ট, কেউ মিডলম্যান হিসেবে কাজ করেছেন বলে অভিযোগ। কিন্তু আদতে কার হাতে টাকা যেত, কে চাকরি দিতেন, সেটাতেই বারবার গুরুত্ব দিচ্ছে আদালত।
কুন্তলের আইনজীবী এদিন প্রশ্ন করেন, ‘এটা বড়সড় ষড়যন্ত্র বলা হচ্ছে। কেউ বলেছে আমি টাকা নিয়ে চাকরি দিয়েছি? আপনি বলছেন এখন। এই মামলার ভবিষ্যৎ কী?’ অন্যদিকে, তাপস মণ্ডলের দাবি, তাঁকে হেফাজতে নেওয়া হলেও জেরা করা হচ্ছে না। গত কয়েকদিনে মাত্র ১ ঘণ্টা জেরা করা হয়েছে বলে জানান তিনি। নীলাদ্রি ঘোষের আইনজীবী প্রশ্ন তোলেন কোনও সরকারি কর্মীকে হেফাজতে নেওয়া হচ্ছে না কেন? ষড়যন্ত্রের কথা বলছেন নীলাদ্রিও। তাঁর বক্তব্য, ‘যে ধারাগুলি আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে আনা হয়েছে সেগুলি টিকবে না।’
সিবিআই-এর আইনজীবী জানান, তদন্ত চলাকালীন এই অভিযুক্তদের তলব করা হয়েছিল। তাঁরা সাহায্য করেননি। মুখোমুখি জেরায় কিছু প্রভাবশালীর নাম উঠে এসেছে বলেও দাবি করেছে সিবিআই। তবে প্রমাণ ছাড়া কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিয়েছে সিবিআই।
উল্লেখ্য, এর আগে নিয়োগ সংক্রান্ত শুনানিতে বিচারক সিবিআই-কে বলেছিলেন, আপনার পনির বাটার মশলা রাঁধতে চাইছেন, অথচ পনির নেই। সেক্ষেত্রে মূল অভিযুক্তদের দিকেই ছিল বিচারকের ইঙ্গিত। বৃহস্পতিবার সেই প্রসঙ্গ তুলে সিবিআই-এর আইনজীবী বলেন, ‘অভিযুক্তরাই বলুক পনির কোথায়?’ তাঁর কথার রেশ ধরে কুন্তলের আইনজীবী শেখ মেহেদি নওয়াজ বিচারককে বলেন, ‘আপনারা পনিরের কথা বলছেন। আসলে তো আগুনটাও নেই।’ অর্থাৎ সিবিআই-এর তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়েই প্রশ্ন তুলে দেন তিনি। এদিন তিনজনেরই জামিনের আর্জি খারিজ হয়ে গিয়েছে। আগামী ৯ মার্চ অবধি জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।