
কলকাতা: আবার তৃণমূলের অন্দরে গৃহযুদ্ধ। দুই সাংসদের প্রকাশ্যে লড়াই। একজন তো মুখের অপর আবার নাম করে বলেই দিলেন, তিনি অপরজনকে ঘৃণা করেন। শুধু তাই নয়, ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও আক্রমণ শানাতেও ছাড়েননি। কথা হচ্ছে শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে নিয়ে। শনিবার নাম না করে কল্যাণকে ‘নারী বিদ্বেষী’ বলে আক্রমণ করেছিলেন মহুয়া। তারই পাল্টা এবার সরসরি নাম প্রকাশ করে কৃষ্ণনগরের সাংসদকে তোপ দাগলেন কল্যাণ। স্পষ্ট ভাষায় বললেন, “আমি নারীবিদ্বেষী নই। তবে একজন নারীকে ঘৃণা করি। তিনি মহুয়া মৈত্র।”
কী নিয়ে এত গণ্ডগোল।
কসবার গণধর্ষণের ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূল। দল যখন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নেবে স্পষ্ট জানায়, সেই সময় সাংসদ কল্যাণ বলে বসেন, “একজন বন্ধু যদি বান্ধবীকে ধর্ষণ করে তা হলে নিরাপত্তা কী করে দেবে? কলেজের ভিতরে যদি করে সেখানে পুলিশ কীভাবে থাকবে? শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পুলিশ থাকবে? নিরাপত্তা তো সহকর্মীরা দেবে। কিন্তু তারাই তো রেপ করছে।”
ঠিক তার পরপরই বিধায়ক মদন মিত্র আবার বললেন, “কাউকে সঙ্গে নিয়ে গেলে হয়ত এমনটা হত না।” বিষয়টি নিয়ে হইচই শুরু হলে সঙ্গে-সঙ্গে তৃণমূল পোস্ট করে পরিষ্কার জানায়, এর দায় সম্পূর্ণ বক্তাদের। আর সেই পোস্টকেই শেয়ার করেন মহুয়া। নাম না করে তিনি লেখেন, ‘নারীবিদ্বেষ দলীয় সীমানা দেখে না। কিন্তু যারা এমন মন্তব্য করেন, তাদের নিন্দা করতেও তৃণমূল কংগ্রেস পিছপা হয় না।’
কল্যাণ কী বলেছেন?
মহুয়ার নারীবিদ্বেষী মন্তব্য শুনতেই বেজায় চটেছেন কল্যাণ। ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন, “ও বলেছে তো আমি নারীবিদ্বেষী? তাই তো? ঘটনা হচ্ছে, উনি কি দেড় মাসের হানিমুন শেষে ফিরেছেন ভারতে? আর ফিরেই পিছনে লাগা শুরু করে দিয়েছেন? আমি আমি নারীবিদ্বেষী নই। সবচেয়ে বেশি কথা আমি তাঁদের জন্য বলি। আর মহুয়া মৈত্র এতটাই নারীবিদ্বেষী কৃষ্ণনগর সংসদীয় এলাকার ভাল কোনও মহিলা নেত্রীকে উঠতে দেন না।”
বস্তুত, সামনের বছরই বিধানসভা ভোট। তার আগে কসবার ঘটনায় কার্যত মুখ পুড়ছে তৃণমূলের। তার মধ্যে দলের অন্দরের এই গণ্ডগোল অস্বস্তি আরও বাড়াচ্ছে বলে মত রাজনৈতিক মহলের।