কলকাতা: আর আশা নেই বাঁচার। সব মায়া উঠে গিয়েছে জীবন থেকে। আজই সব চুকেবুকে যাক। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, মুখে এসবই বিড়বিড় করতে করতে দমদমের কাছে রেল লাইন ধরে হাঁটছিল লোকটা। হুঁশ নেই কোনওদিকে। পিছনে যে জান্তব গর্জন করতে করতে আস্ত একটা ট্রেন আসছে সেসবে ছিল না ভ্রুক্ষেপ। সেই মাতালকে দেখেই শিয়ালদহ থেকে যাত্রা শুরুর কিছু সময়েই মধ্যেই দাঁড়িয়ে গেল আপ কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেস। লাইনের পাশে থাকা লোকজনেরা অবশ্য বলছেন, ও তো আত্মহত্যা করতেই লাইনে উঠেছিল। ঘটনায় জোর শোরগোল দমদম স্টেশন চত্বরে।
এদিন রাত ৮টা ৩৫ মিনিট নাগাদ শিয়ালদহ থেকে জলপাইগুড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয় 13149 আপ কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেস। ঘড়িতে তখন ৮টা বেজে ৫০ কী ৫৫ হবে। দমদম পেরিয়ে পরবর্তী স্টেশনের উদ্দেশ্যে ছুটে চলেছে ট্রেন। সিগন্যাল গ্রিন। পথে কোনও বাধা নেই। তবে দমদমের সিগন্যালে একটু গতি কমেছে ট্রেনের। সবে ব্যাগপত্র ধীরে ধীরে গুছিয়ে রেখে জমিয়ে বসতে শুরু করেছেন যাত্রীরা। কেউ রাতের খাওয়ার তোড়জোড় করছেন। কেউ আবার জমিয়ে আড্ডায় ডুব দিয়েছেন। তখনই আচমকা তীব্র শব্দ করে ব্রেক কষল ট্রেনটা। সকলের চোখেমুখেই আতঙ্কের ছাপ। কী হল, কেন হল, কেউ কিছু বুঝে উঠতে পারছেন না। সিগন্যাল তো গ্রিন, তাও কেন দাঁড়িয়ে গেল ট্রেন? কৌতূহলী প্রশ্নের ঝিলিক সকলের চোখেমুখে। এরইমধ্যে এল খবরটা। সামনের দিকের কামরা থেকে একজন মুখ বাড়িয়ে বললেন, আরে দাদা! মাতালের কাণ্ড দেখুন। রেল লাইনে মাথা দিতে যাচ্ছিল।
সূত্রের খবর, দমদম জংশনের কাছে ট্রেনের গতি কম থাকায় দূর থেকেই টলমল পায়ে ওই ব্যক্তিকে হেঁটে যেতে দেখেন ট্রেনের চালক। দেখা মাত্রই দ্রুত ট্রেন থামিয়ে দেন তিনি। তড়িঘড়ি লাইনে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা ওই ব্যক্তিকে সরিয়ে আনেন। তাঁরাই জানাচ্ছেন আত্মহত্যা করতেই ট্রেনের সামনে এগিয়ে গিয়েছিলেন ওই মদ্যপ ব্যক্তি। যদিও তাঁর নাম-পরিচয় এখনও জানা যায়নি। এদিকে আচমকা ট্রেন দাঁড়িয়ে যাওয়ায় ওই সময় দমদমে থাকা অন্যান্য ট্রেনগুলিরও ঢুকতে কিছুটা দেরি হয়। শোরগোল পড়ে যায় স্টেশন চত্বরে।