
কলকাতা: কসবা কাণ্ডের মূল অভিযুক্তের কীর্তির শেষ নেই। কলেজের প্রাক্তনী হয়েও যেমন তাঁর দাদাগিরি, গুণ্ডামি চলত, ছাত্রাবস্থাতেও তাঁর এমনটাই আচরণ ছিল। এমনকী প্রিন্সিপালকেও নানাভাবে হেনস্থা করত। তখনও তাঁর উপদ্রবে কলেজে টেকা দায় ছিল ছাত্রীদের। ২০১৮ সালে বহিষ্কারও করা হয় ৪ বছরের জন্য। ২০২২ সালে সাসপেনশন ওঠার পরে ২০২৩ সাল থেকে ফের কলেজের দাদা হয়ে ওঠে অভিযুক্ত।
কসবার সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে যখন অভিযুক্ত পড়ত, তখন কলেজে তাঁর নানা কীর্তিতে অতিষ্ঠ ছিলেন সকলে। গভার্নিং বডির অনুমতি নিয়ে অভিযুক্তের কলেজে ঢোকা বন্ধ করে দেন তৎকালীন প্রিন্সিপাল দেবাশিস চট্টোপাধ্যায়।
ছাত্র থাকাকালীন অভিযুক্ত প্রিন্সিপালকেও হেনস্থা করতে ছাড়েনি। নানা দাবিতে বিভিন্ন সময়ে রাতভর ঘেরাও করে রেখেছিল প্রিন্সিপালকে। দেবাশিস বাবুর স্ত্রী নবনীতা চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ওঁ (অভিযুক্ত) ছাত্র থাকাকালীন নানাভাবে সমস্যা তৈরি করত। প্রিন্সিপালকে হেনস্থা করত। আমার স্বামী একাধিকবার ব্যবস্থা নিয়েছিলেন। তখন পড়ুয়া ছিল। একই সময়ে দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রেশন করে রেখেছিল। যেটা একেবারেই বেআইনি। রেজিস্টারকেও জানানো হয়েছিল। ওর কাজকর্ম এতটাই খারাপ ছিল যে একাধিকবার থানায় অভিযোগ জানানো হয়েছিল। আমি এইটুকু বলতে পারি যে যখন ছাত্র ছিল, তখন ওর আচরণ একদমই ছাত্রসূলভ ছিল না। অসামাজিক কাজকর্মে যুক্ত ছিল।”
তিনি আরও বলেন, “আমার স্বামীকে কারণে-অকারণে হেনস্থা করত, ঘেরাও করে রাখত। বেআইনিভাবে ভর্তির জন্য চাপ তৈরি করত। বিভিন্ন অনুষ্ঠানের নাম করে অবৈধভাবে কলেজের টাকা নেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া, নানা বেআইনি কাজ করত।”
অভিযুক্তের বিরুদ্ধে একাধিক পদক্ষেপ করা হয়েছিল বলে জানান তিনি। বলেন, “আমার স্বামী থাকাকালীন ওর গতিবিধি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছিল পুলিশি ও আইনি সাহায্যে। যদি সঠিক সময়ে কড়া পদক্ষেপ করা হত, তাহলে ও এই ধরনের নক্কারজনক কাজ করতে পারত না।”
জানা গিয়েছে, ২০১৮ সালে ৪ বছরের জন্য বহিস্কৃত করা হয় অভিযুক্তকে। কলেজ কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, শুধু পরীক্ষা দিতে কলেজে আসবে অভিযুক্ত। ২০২৩ সাল থেকে ফের কলেজের দাদা হয়ে ওঠে সে। কলেজে আসার সঙ্গে সঙ্গে ফের শ্লীলতাহানির অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। ছাত্র পেটানো, শ্লীলতাহানি সহ একাধিক অভিযোগ ছিল। তারপরও কার আশকারায় এত বাড়বাড়ন্ত হল অভিযুক্তের, এটা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে।