কলকাতা: কেষ্টপুরের দুই ছাত্র খুনে মূল অভিযুক্ত এখনও অধরা। মঙ্গলবারই গ্রেফতার করা হয়েছে চার জনকে। এই ঘটনার পরতে পরতে রয়েছে রহস্য। তদন্তে নেমে পুলিশের হাতে উঠে আসছে চাঞ্চল্যকর বেশ কিছু তথ্য। সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, ৫০ হাজার টাকা দিয়ে একটি সেকেন্ড হ্যান্ড বাইক কেনার কথা ছিল অতনুর। মিনাখাঁ থেকে কর্নাটকের রেজিস্ট্রেশন করা একটি গাড়ি ভাড়া করে মূল অভিযুক্ত সত্যেন্দ্র। ২২ তারিখ সেই গাড়ি নিজের গ্যারেজে নিয়ে আসে সে। উল্লেখ্য, বছর খানেক আগে ওই এলাকায় একটি দোকান ভাড়া নিয়ে অটো পার্সের গ্যারেজ খুলেছিল সত্যেন্দ্র। বাইক কেনার নাম করে অভিষেক ও অতনুকে সেদিন ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে গাড়িতে তাদের নিয়ে রাজারহাটে নিয়ে যাওয়া হয়। রাজারহাটের শোরুমে বাইক পছন্দ না হওয়ায় তারা বাসন্তী হাইওয়ের দিকে রওনা দেয়। পরে সেখানেই গাড়িতে দু’জনকে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। ন্যাজাট ও হাড়োয়া খাল থেকেই উদ্ধার হয় দুই ছাত্রের দেহ। পুলিশ মনে করছে, পরিকল্পিতভাবেই খুন করা হয়েছে দুই ছাত্রকে। মিনাখাঁ থেকে সেলফ সার্ভিসের গাড়ি ভাড়া নিয়ে গিয়েছিল সত্যেন্দ্র। গাড়িতে পাঁচ জন ছিল। ছিল দড়িও। অনুমান যা দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে ওই দুই ছাত্রকে।
সত্যেন্দ্র মূলত বিহারের বাসিন্দা। পাঁচ বছর আগে কেষ্টপুরের এক মহিলাকে ভালবেসে বিয়ে করে। সত্যেন্দ্রর এক মেয়েও রয়েছে। তবে সত্যেন্দ্রর কোনও অপরাধের পাস্ট রেকর্ড নেই। স্থানীয় এক মহিলা বলেন, “সত্যেন্দ্র তো পাড়ার জামাই। ভীষণ ভাল ব্যবহার, খুব মিষ্টি কথা। বাইরে থেকে তো একেবারেই পলিশড্।” সত্যেন্দ্র যে এরকম করতে পারে, তা ভাবতেও পারছেন না স্থানীয় বাসিন্দারা।
পুরনো আক্রোশেই খুন কিনা, সেই বিষয়টিও ভেবে দেখছেন তদন্তকারীরা। অতনু, অভিষেকের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলছেন তদন্তকারীরা। তবে প্রাথমিক তথ্য প্রমাণ হাতে পাওয়ার পর পুলিশ নিশ্চিত, গাড়িতেই একেবারে ঠান্ডা মাথায় জোড়া খুন করে সত্যেন্দ্র। রক্ত মুছে গাড়িটি ফিরিয়ে দেওয়া হয় স্টোরে।
প্রসঙ্গত, গত ২২ অগস্ট থেকে দশম শ্রেণির দুই ছাত্র অতনু ও অভিষেক নিখোঁজ ছিল। পুলিশ নিখোঁজ ডায়েরিও করেছিলেন পরিবারের সদস্যরা। মঙ্গলবার দুই ছাত্রেই দেহ উদ্ধার হয় বসিরহাটে। ঘটনাকে ঘিরে মঙ্গলবার থেকে ক্ষোভে ফুঁসছে কেষ্টপুর।