কলকাতা: পুজো মিটতেই হু-হু করে শহরে বাড়ছে করোনা (Corona) সংক্রমণ। শনিবার রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর প্রকাশিত কোভিড বুলেটিন জানাচ্ছে,গত ২৪ ঘণ্টায় বাংলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৭৪-এ। আর এক লাফে কলকাতার আক্রান্তের সংখ্যাও বেড়েচে। এর মধ্যে দেখা দিয়েছে পরিসংখ্যান নিয়ে বিভ্রান্তি।
রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর প্রকাশিত কোভিড বুলেটিন বলছে গত ২৪ ঘণ্টায় শুধু কলকাতা (Kolkata) করোনা আক্রান্ত হন ২৬৮ জন। শুক্রবার এই সংখ্যাটা ছিল ২৪২ জন। কিন্তু এই তথ্যের সঙ্গে মিলছে না কলকাতা পুরসভা (Kokata Municipality)-র দেওয়া দৈনিক করোনা আক্রান্তের লিস্ট! বুধবার পুরসভা বলছে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমিত হয়েছেন ৪৪৯ জন। কেন প্রশাসনের দুই তরফ দুই রকম তথ্য দিচ্ছে? শুরু হয়েছে বিতর্ক।
এই প্রেক্ষিতে নিজেদের ব্যাখ্য়া দিয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। সেখানে বলা হচ্ছে, অনেকগুলো করোনা পজিটিভ কেসের পুনরাবৃত্তি হয়েছে। সেগুলো বাদ দিতে হবে। চূড়ান্ত স্ক্রিনিংয়ের পর তা বাতিল করা হবে বলে জানাল তারা।
শনিবার এক বিবৃতিতে স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, কলকাতার আশেপাশের জেলাগুলি থেকে অনেকে নিজেদের ঠিকানা দিচ্ছেন কলকাতা বলেই। কলকাতার বিভিন্ন বেসরকারি ল্যাবে এই পরীক্ষাগুলি হয়েছে। পরে আক্রান্ত বা তাদের পরিবারকে ফোনে যোগাযোগের মাধ্যমে আসল ঠিকানা যাচাই করা হয়। তারপর জেলাগুলির পুনরায় ম্যাপিং হয় বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আমরা নিয়মিত এই প্রক্রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা জানাই এবং এটা কিছুটা সময়সাপেক্ষ। আমরা কেবল চূড়ান্ত পরিসংখ্যানই ঘোষণা করি। আমরা জানি না যে এর মধ্যে কোন কর্তৃপক্ষ বা কেউ কী পরিসংখ্যান দেখিয়েছে বা কোথা থেকে তা এসেছে, তা আমাদের জানার বাইরে।” এমনকি কলকাতা পুরসভার দেয় তথ্যেরও দায়িত্ব তারা নিতে চায়নি। এদিকে এই প্রেক্ষিতে পুরসভার প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি। তবে প্রশাসনের মধ্যেই করোনা রিপোর্টে দু’রকম তথ্য নিয়ে বিভ্রান্তিতে পড়েছেন অনেকেই। উল্লেখ্য, এর আগে টিকাকরণ নিয়ে কলকাতা পুরসভা ও রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের টানাপোড়েন দেখা গিয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতরের শনিবারের বুলেটিন অনুযায়ী, ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত বাংলার মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হল ১৫,৮৫,৪৬৬। পাশাপাশি গত ২৪ ঘণ্টায় বাংলায় করোনার বলি হয়েছেন ১২ জন। আর করোনা থেকে সুস্থতার হার এখন ৯৮.৩১ শতাংশ। মৃত্যুহার ১.২০ শতাংশ। কোভিড বুলেটিন জানাচ্ছে, ২৩ অক্টোবর মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৪৫ হাজার ১৫৯টি। রাজ্যে মোট পজিটিভিটি রেট এখন ২.২৬ শতাংশ। আর একদিনে সুস্থ হয়েছেন ৮০৮ জন।
এদিকে এখনও পর্যন্ত বিশেষজ্ঞরা তৃতীয় ঢেউয়ের (Third Wave) ইঙ্গিত দিচ্ছেন না বটে, তবে এ রাজ্যে পরিস্থিতিতে যে আশঙ্কার মেঘ তৈরি হচ্ছে, তা রাজ্য সরকারের করোনা সংক্রমণের রিপোর্ট থেকেই স্পষ্ট। আর এই প্রেক্ষিতে কলকাতা, মালদহ, নদিয়া, দার্জিলিং, উত্তর দিনাজপুর, হাওড়া- সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়া এই জেলাগুলিতে মাইক্রো কনটেনমেন্ট এবং কনটেইনমেন্ট জ়োন (Containment and Micro-Containment Zone) করার জন্য জোর দিয়েছেন মুখ্যসচিব।
আরও পড়ুন: Corona Update: থামবে কোথায়? একদিনে করোনা আক্রান্ত হাজার ছুঁইছুঁই, বলি আরও ১২