KMC Budget: চলতি অর্থবর্ষের বরাদ্দ টাকা খরচই হল না, এরই মধ্যে নতুন বাজেট পেশের পথে ফিরহাদ

Sayanta Bhattacharya | Edited By: Soumya Saha

Mar 14, 2023 | 5:03 PM

KMC Budget: অর্থ সংকটের কথা কলকাতার মেয়র অস্বীকার করলেও ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ অবশ্য জানিয়েছেন, যে টাকা আদায় হওয়া প্রয়োজন ছিল, তা হয়নি। তাই সংকট কাটতে সময় তো লাগবেই।

KMC Budget: চলতি অর্থবর্ষের বরাদ্দ টাকা খরচই হল না, এরই মধ্যে নতুন বাজেট পেশের পথে ফিরহাদ
ফাইল ছবি

Follow Us

কলকাতা: অর্থসঙ্কটে ধুঁকছে কলকাতা পুরনিগম। চলতি অর্থবর্ষের বরাদ্দ টাকাই এখনও খরচ করে উঠতে পারেনি পুরনিগম। এমনকী বরাদ্দের একাংশের অর্থের উপর যে নিষেধাজ্ঞা ছিল, তা-ও অক্ষত রয়েছে, এই পরিস্থিতির মধ্যে আগামী অর্থবর্ষের জন্য বাজেট প্রস্তাব রাখবেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। আগামী শুক্রবার কলকাতা পুরনিগমের বাজেট পেশ করবেন তিনি। উল্লেখ্য, করোনার ধাক্কা কাটিয়ে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে কার্যত চ্যালেঞ্জ নিয়ে বাজেট পেশ করেছিলেন মেয়র। একাধিক ক্ষেত্রে রাজস্ব আদায় যাতে বাড়ানো যায়, সেই নিয়ে বক্তব্য পেশ করেছিলেন তিনি। কিন্তু বাস্তবে দেখা গিয়েছে সম্পত্তি কর ছাড়া বাকি অন্যান্য খাতে তেমন কোনও রাজস্ব আদায় হয়নি।

উল্লেখ্য, গত বছর বাজেট পেশের ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই বাজেটে প্রস্তাবিত খরচের উপরে নিষেধাজ্ঞা (এমবার্গো) জারি করে দিয়েছিলেন তিনি। নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, পুর সম্পদের রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামত (কোড নং-৪০০) এবং স্থায়ী সম্পদ (কোড নং-৮০০) তৈরির জন্য যে অর্থ বাজেটে বরাদ্দ হয়েছে, তার মধ্যে ৬০ শতাংশ টাকার প্রাথমিক অনুমোদন কোষাগার থেকে দেওয়া হবে। বাকি ৪০ শতাংশ টাকা আপাতত আটকে রাখা হচ্ছে। বরাদ্দকৃত ৬০ শতাংশ টাকায় বিভাগীয় কাজগুলি সম্পাদন করে তার যাবতীয় নথি জমা দিলেই বাকি টাকা অনুমোদন করা হবে। কিন্তু দেখা গেল, সংশ্লিষ্ট অর্থবর্ষে যে ৬০ শতাংশ টাকা প্রথম ভাগে খরচ করার কথা ছিল, সেই টাকা জোগাড় করে উঠতেই পারেনি কলকাতা পুরনিগমের অর্থ বিভাগ।

ফলে খরচ করার তো দূর, প্রকল্পগুলিও মাঝপথে আটকে থেকেছে বলে জানা গিয়েছে। পুরনিগম সূত্রে খবর, এই কারণে বাকি ৪০ শতাংশ টাকার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তোলা যায়নি। এই অবস্থায় আগামী ১৭ মার্চ মেয়র ফিরহাদ হাকিমের বাজেট পেশ পুরনিগমের ইতিহাসে নজিরবিহীন বলে ব্যাখ্যা প্রশাসনিক কর্তাদের।

যদিও ফিরহাদ হাকিম দাবি করছেন, কলকাতা পৌরসভার রাজস্বের হাল এখন অনেকটাই ভাল। সম্পত্তি কর বকেয়া যা ছিল, আদায় করা সম্ভব হয়েছে। এদিকে কলকাতা পুরনিগমের অর্থ বিভাগ সূত্রে খবর, অর্থ সংকটে এতটাই জর্জরিত যে, বাধ্য হয়ে রাজ্য সরকারের যে অনুষ্ঠানগুলি কলকাতা পৌরনিগম নিজস্ব খরচ করে, সেই টাকা চেয়ে কলকাতা পুরনিগমকে রাজ্য সরকারের কাছে চিঠি দিতে হয়েছে। যেমন, ২১ ফেব্রুয়ারি দেশপ্রিয় পার্কে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন হয়েছিল। সেখানে প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকা কলকাতা পুরসভা খরচ করে। সেই টাকা চেয়ে কলকাতা পুরসভার তরফে রাজ্য প্রশাসনের কাছে চিঠি গিয়েছে বলে সূত্রের খবর। অর্থ বিভাগের এক কর্তা বলেন, যদি টানাটানি না থাকত, তাহলে কলকাতা পুরসভা কখনওই টাকা চেয়ে চিঠি দিত না। অর্থ সংকটের কথা কলকাতার মেয়র অস্বীকার করলেও ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ অবশ্য জানিয়েছেন, যে টাকা আদায় হওয়া প্রয়োজন ছিল, তা হয়নি। তাই সংকট কাটতে সময় তো লাগবেই।

চলতি ২০২২-’২৩ অর্থবর্ষে রাজস্ব আদায়ে ধরা হয়েছে ৪ হাজার ২৩৩ কোটি ১১ লক্ষ টাকা। ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৪১০ কোটি ১১ লক্ষ টাকা। বাজেট ঘাটতি ১৭৭ কোটি টাকা। বিরোধীদের ব্যাখ্যা, বাজেটের ঘাটতি কমিয়ে দেখানোর জন্যই প্রস্তাবিত প্রকল্প গুলি বাস্তবায়ন করার বদলে টাকা আটকে রাখার উপরে জোর দিয়েছে অর্থ বিভাগ। যদিও একাংশের মতে, টাকা থাকলে তো খরচ হবে। যেখানে প্রথমভাগে হাতে রাখা ৬০ শতাংশ টাকাই সম্পূর্ণভাবে বন্টন করে উঠতে পারল না, সেখানে টাকা আটকে রাখার প্রশ্নই উঠছে না।

Next Article