কলকাতা: ভাইফোঁটার দিনই শহরে দুর্ঘটনা। শুক্রবার সকাল ৮.৪৫ মিনিট নাগাদ বাঘাযতীন উড়ালপুল থেকে নামার সময়ে বাগবাজার গড়িয়া রুটের বাস একটি স্কুটিকে ধাক্কা মারে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় এক যুবকের। মৃতের নাম শুভজিত সূর(২৫)।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গড়িয়ার ফরতাবাদেটর শুভজিত্ সবেমাত্র সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেছিলেন। চাকরির ইন্টারভিউ দিচ্ছিলেন তিনি। তাঁর জ্যেঠু কলকাতারই একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিত্সাধীন রয়েছেন। তাঁকেই দেখতে হাসপাতালে যাচ্ছিলেন তিনি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, স্কুটারের গতিবেগ স্বাভাবিক ছিল। বাগবাজার গড়িয়া স্টেশন রুটের একটি বাসের গতিবেগ স্বাভাবিকের থেকে বেশি ছিল। ব্রিজ থেকে নামার সময়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন চালক। তখনই স্কুটির পিছনে গিয়ে ধাক্কা মারে বাসটি। বাসের যাত্রীরা জানান, দুর্ঘটনার পর চলন্ত বাস থেকে লাফিয়ে পালায় চালক। প্রাণ বাঁচাতে বাস থামান বাসের যাত্রীরাই।
লাল রঙের স্কুটি থেকে ছিটকে অনেকটা দূরে পড়েন শুভজিত। হেলমেট থাকলেও মারাত্মক চোট পান মাথায়। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু তার আগেই মৃত্যু হয়েছে বলে চিকিত্সকরা জানিয়ে দেন।
হাসপাতালে বসে এক নাগাড়ে কেঁদে চলেছেন শুভজিতের দিদি। বাবা অবসরপ্রাপ্ত কর্মী। পেনশনের টাকায় সংসার চলত। বছর দেড়েক আগে শুভজিতের দিদির বিয়ে হয়। শুভজিত সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করার পর পরিবার কিছুটা আশার আলো দেখছিল। শুভজিত বিভিন্ন ক্যাম্পাসিংয়ে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
মাঝেই এমন বিপর্যয় নেমে আসবে ভাবতে পারেননি কেউই। শুভজিতের জ্যেঠু কিছুদিন আগে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাঁকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। জ্যেঠুকে দেখতেই এদিন হাসপাতালে যাচ্ছিলেন শুভজিত। ভাইফোঁটার দিনই ভাইকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ শুভজিতের দিদি। কথা বলার মতোও পরিস্থিতি নেই তিনি। শুধু একটাই কথা বলছে, “আমরা ভেসে গেলাম। ভাইফোঁটার দিনই ভাই চলে গেল। মায়ের কী হবে! মাকে কী বলব?”
আরও পড়ুন: Dilip Ghosh: ‘বাংলার অবস্থা চিনের মতো হয়ে যাবে’, উপনির্বাচনে ৪ গোল খেয়ে হারের ব্যাখ্যা দিলেন দিলীপ
আরও পড়ুন: কুকুরের পায়ে বাজি বেঁধে পৈশাচিক উল্লাস! সত্যি কি এমন আনন্দেরও দরকার ছিল?