কলকাতা: শরীরের একাধিক জায়গায় ক্ষত। দৃশ্যত কোনও ধারাল অস্ত্রের কোপ। এলোপাথাড়িভাবে তা মারা হয়েছে। ক্ষতস্থান দিয়ে গলগল করে বেরোচ্ছে রক্ত। জামাতেও চাপ চাপ রক্তের ছোপ! ঠিক এই অবস্থাতেই স্ট্রাচের শুইয়ে এক কিশোরকে নিয়ে এসেছিল তিন আরও যুবক। কিন্তু চিকিত্সকরা জানিয়ে দেন তিনি মৃত! এক কিশোরের রহস্যমৃত্যু (Tangra Mysterious Murder) ঘিরে উত্তেজনা এন্টালিতে। খুনের অভিযোগে তোলপাড় এলাকা।
মৃত যুবকের নাম মহম্মদ সোনু। বছর ষোলোর ওই কিশোর ৬৬ নম্বর দেবেন্দ্র রোড এলাকার বাসিন্দা। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, রাত দুটো নাগাদ আচমকাই তিন যুবক হাসপাতালে ঢুকে চিত্কার করে চিকিত্সকদের ডাকতে থাকেন। হাসপাতাল কর্মীরা ছুটে এলে রক্তাক্ত ওই কিশোরকে দেখতে পান। চিকিত্সকরা দেখে জানিয়ে দেন, হাসপাতালে আনার আগেই মৃত্যু হয়েছে ওই কিশোরের।
এরপর হাসপাতালের তরফেই খবর যায় থানায়। ট্যাংরা থানার পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে ওই কিশোরের তিন সঙ্গীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। খবর যায় মৃতের পরিবারেও। পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
বাড়ির ছেলের এমন পরিস্থিতি কীভাবে হল, আর কেনই বা, তা আঁচ করতে পারছেন না তাঁরা। পরিবারের অভিযোগ, রড কিংবা ধারালো কোনও অস্ত্র দিয়ে শরীরের বারবার আঘাত করা হয়েছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই মৃত্যু হয়েছে কিশোরের। পরিবারের তরফ থেকে খুনের অভিযোগ তোলা হয়েছে।
পুলিশ কিশোরের তিন সঙ্গীকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। কেন কিশোরের এই পরিস্থিতি হল, তারাই এই ঘটনায় প্রত্যক্ষভাবে জড়িত কিনা, নাকি সাহায্যের জন্য কিশোরই তাদেরকে ডেকেছিলেন, কিশোরকে তারা কোথা থেকে উদ্ধার করেন- এসব একাধিক প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, পুরনো কোনও ইস্যু নিয়ে ফের বচসায় জড়িয়ে পড়েছিলেন ওই কিশোর। আর তার জেরেই মারধর। এই ঘটনায় কে কে জড়িত, তাঁদের খোঁজ করছে পুলিশ।
পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও কথা বলে কিশোরের বাকি বন্ধুদের তালিকা তৈরি করার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। কিশোরের এক আত্মীয়ের কথায়, “আমাদের ছেলে এমনিতে কোনও ঝামেলায় থাকে না। ওর শরীরে একাধিক জায়গায় ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। মনে হচ্ছে ব্লেড দিয়ে কেউ গা কেটে দিয়েছে, ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপান হয়েছে ওকে। প্রচুর রক্ত বেরিয়ে গিয়েছে শরীর থেকে। আমরা দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি চাই।” পরিবারের আরেক সদস্য বলছেন, “কিছুই বুঝতে পারছি না। কোনও সূত্রই মাথায় আসছে না। পুলিশ আপাতত ওকে যারা হাসপাতালে নিয়ে এসেছিল, তাদের থেকে কিছু জানার চেষ্টা করছে।”
ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ট্যাংরা থানার পুলিশ। তদন্তের স্বার্থে এখনই বিশেষ কিছু বলতে চাইছে না। তবে পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, অভিযোগ হয়েছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আপাতত ৩ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আরও পড়ুন: বাড়ছে বার-রেস্তোরাঁ ও দোকানপাট খোলার সময়সীমা, নতুন নির্দেশিকায় আরও ছাড় নবান্নর