গাড়িতে নীল বাতি- কলকাতা হাইকোর্টের স্টিকার! শহরে ফের জালে ‘জালিয়াত’

TV9 Bangla Digital | Edited By: শর্মিষ্ঠা চক্রবর্তী

Jul 07, 2021 | 10:11 AM

Blue Light On Car: জানা যাচ্ছে, সনাতন নিজেকে স্ট্যান্ডিং কাউন্সিল অফ ওয়েস্ট বেঙ্গলের আধিকারিক পরিচয় দিতেন। নীল বাতি লাগানো গাড়ি নিয়ে ঘুরতেন।

গাড়িতে নীল বাতি- কলকাতা হাইকোর্টের স্টিকার! শহরে ফের জালে জালিয়াত
ডান দিকে- সনাতন

Follow Us

কলকাতা: ফের শহরে গ্রেফতার ‘জালিয়াত’ (Fraud)। ভুয়ো সরকারি অফিসার সেজে প্রতারণা। নীল বাতির গাড়ি নিয়ে জালিয়াতিরও অভিযোগ। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল গড়িয়াহাট থানার পুলিশ (Gariahat Police)। ধৃতের নাম সনাতন রায় চৌধুরী।

জানা যাচ্ছে, সনাতন নিজেকে কোর্টের স্ট্যান্ডিং পরিষদের সদস্য পরিচয় দিতেন। নীল বাতি লাগানো গাড়ি নিয়ে ঘুরতেন। দেবাঞ্জন কাণ্ডের পর থেকেই শহরের নীল বাতি লাগানো গাড়ির ওপর নজরদারি বেড়েছে পুলিশের। রাস্তায় চলছে চেকিংও। নীল বাতি লাগানো গাড়ি দেখলে, তা থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এরকম ভাবেই সনাতনের গাড়ি থামানো হয়। জানা গিয়েছে, গড়িয়াহাটের ১০ কোটি টাকার সম্পত্তি দখল করতে এসেছিলেন তিনি। জানা গিয়েছে, তালতলাতেও তাঁর বিরুদ্ধে একটি জমি দখলের অভিযোগ রয়েছে।  সনাতন এই নীল বাতি লাগানো গাড়ি নিয়ে ঘুরে কী কী সুবিধা ভোগ করেছেন, আদৌ দেবাঞ্জনের মতো প্রতারণা চক্রের সঙ্গে জড়িত কিনা, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

প্রশ্ন করা হলে তিনি নিজেকে উচ্চ পদস্থ সরকারি আধিকারিকের পরিচয় দেন। কিন্তু যথাযথ কাগজপত্র দেখাতে পারেন না। চাপ বাড়াতেই ঘাবড়ে যান তিনি। তাঁর কথায় একাধিক অসঙ্গতি ধরা পড়ে। এরপরই তাঁকে গ্রেফতার করে গড়িয়াহাট থানার পুলিশ।

সনাতনের বাড়ি বরানগরে। তিনি পেশায় আইনজীবীও। কিন্তু তিনি ইদানীং কোর্টের স্ট্যান্ডিং পরিষদের সদস্য পরিচয় দিয়ে একাধিক জায়গায় প্রভাব বিস্তার করেছিলেন। আইনজীবীর প্রভাব ছিল এলাকাতেও। বাড়ির সামনেই রাখতেন নীল বাতির গাড়ি। কিন্তু দেবাঞ্জনের কাণ্ড প্রকাশ্যে আসতেই নীল বাতি লাগানো গাড়ি নিয়ে খুব বেশি রাস্তায় বেরোতেন না। এদিন গড়িয়াহাটে গাড়ি নিয়ে গিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন।  গত সপ্তাহেই, সেন্ট্রাল ভিজিলেন্স কমিশনার সেজে গাড়িতে নীলবাতি লাগিয়ে ঘোরার অভিযোগ এক যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। বেনিয়াপুকুর থেকে মহম্মদ সাদিক নামে ওই যুবককে গ্রেফতার করা হয়।

চেকিংয়ের সময়ে গত মঙ্গলবার বেনিয়াপুকুর থানার নিউ পার্কস্ট্রিট এলাকায় এ ধরনের একটি লাল  গাড়ি দাঁড় করান পুলিশ কর্তারা। তাতে নীল বাতি লাগানো ছিল আর সামনে ভিআইপি পার্কিং লেখা ছিল।

আরও পড়ুন: বিশ্লেষণ: আজ নীল রঙে মিশে গেছে ভেজাল…কারা চড়েন জেনে নিন

সন্দেহ হয় পুলিশ কর্তাদের। গাড়ি চালাচ্ছিলেন মহম্মদ সাদিক নামে ওই যুবক। তিনি নিজেকে সেন্ট্রাল ভিজিল্যান্স অফিসার বলে দাবি করেন। তখন তাঁর কাছে সেই সংক্রান্ত নথি দেখতে চাওয়া হয়। প্রথমে পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন ওই যুবক। পরে কাগজ দেখাতে না পারায় ওই যুবককে গ্রেফতার করা হয়। জানা যায়. কমিশনার তো দূর অস্ত, কোনও ভাবেই তিনি ভিজিল্যান্স কমিশনের সঙ্গেই যুক্ত নন। তাঁর বাবাও দাবি করেন, ছেলে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়েছেন। এরপর একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরিও করতেন। পরে সেই চাকরি ছেড়ে দেন। এরপরই বাড়িতে জানান, তিনি এক উচ্চ পদস্থ কর্তার ইনফর্মার হিসাবে কাজ করছেন। পরিবারের লোক তা মানতে রাজি ছিলেন না। অভিযুক্তের বাবা দাবি করেছেন, তাঁর ছেলের মানসিক সমস্যা রয়েছে।

আরও পড়ুন: এক জন নিলে ৫০০, দু’জনের ৮৫০! স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভিতরেই রমরমিয়ে ভ্যাকসিনের ‘কালোবাজারি’

প্রসঙ্গত দেবাঞ্জন কাণ্ড প্রকাশ্যে আসার পরই শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এরকম ভুয়ো সরকারি আধিকারিকদের গ্রেফতার করছে পুলিশ। দেবাঞ্জন কাণ্ড নিয়ে বিস্ফোরক বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “নির্বাচনের সময় ভুয়ো গাড়ি, বাতি ব্যবহার করে ভোট প্রভাবিত করা হয়েছে। দেবাঞ্জনের মত আরও অনেকেই তাতে যুক্ত ছিলেন। সঠিক তদন্ত না হলে প্রয়োজনে আদালতে যাওয়া হবে।”

 

Next Article