Kolkata House Collapsed: ৭ ঘণ্টার পর চাদরে পেঁচিয়ে বস্তায় ভরে বার করা হল ৩ বছরের শিশুর লাশ! আহিরীটোলায় বাড়ি ধসে মৃত ২

Kolkata House Collapsed: প্রায় আট ঘণ্টা পর উদ্ধারকাজ শেষ হয়। চার জন মূলত একেবারে ভিতরের দিকে আটকে পড়েছিল।

Kolkata House Collapsed: ৭ ঘণ্টার পর চাদরে পেঁচিয়ে বস্তায় ভরে বার করা হল ৩ বছরের শিশুর লাশ! আহিরীটোলায় বাড়ি ধসে মৃত ২
আহিরীটোলায় ভাঙা বাড়ির ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার শিশুর দেহ (নিজস্ব চিত্র)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 29, 2021 | 1:29 PM

কলকাতা: এক টানা বৃষ্টিতে আহিরীটোলায় বাড়ি ভেঙে বিপর্যয়। মৃত্যু হল তিন বছরের শিশু-সহ ২। মৃত্যু হয়েছে ৫২ বছরের এক প্রৌঢ়ারও। প্রায় আট ঘণ্টা পর উদ্ধারকাজ শেষ হয়। চার জন মূলত একেবারে ভিতরের দিকে আটকে পড়েছিল। উদ্ধার হওয়া দুজনকে আরজিকর বাকি দুজনকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গঙ্গা ঘড়াই নামে ন’মাসের এক অন্তঃসত্ত্বাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁকে লেবার রুমে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।  শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, তাঁর অস্ত্রোপচার চলছে।

প্রায় সাত ঘণ্টার চেষ্টা ব্যর্থ হয় । ইটের পাজর, ধ্বংসস্তূপের বাইরে দাঁড়িয়ে উদ্বিগ্ন পরিবার। হাউ হাউ করে কাঁদছিলেন মা। তিনিও অন্তঃসত্ত্বা। আপ্রাণ লড়াই করছিলেন দমকল, পুলিশ, বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের সদস্যরা।

ইটের পাজরের নীচে তখন চাপা পড়ে তিন বছরের ছোট্ট শিশু। সাত ঘণ্টার এক টানা লড়াইয়ে আহিরীটোলার ভেঙে পড়া দোতলার বাড়ির ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা হয় সেই শিশু। দমকল কর্মীরা শিশুটিকে একটা বস্তায় শুইয়ে বাইরে নিয়ে আসেন।

তখনই সন্দেহ হয় পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীদের। কিন্তু উদ্ধারকর্তারা প্রকাশ্যে কিছুই বলেননি তখন। চাদরে পেঁচিয়ে বস্তার করে শিশুটিকে তুলে দেওয়া হয় অ্যাম্বুলেন্সে। উদ্ধারের ধরন দেখে কিছুটা বিপদ আঁচ করতে পারছিলেন প্রতিবেশীরা। বুক ফাঁটা কান্নায় ভেঙে পড়েন মাও। তিনি যে তখনও বাইরে প্রতীক্ষারত।

হাসপাতালে নিয়ে যেতেই চিকিত্সকরা নিশ্চিত করেন মৃত্যুর খবর। ভোরবেলায় ভেঙে পড়ে ১০ নম্বর আহিরীটোলার ওই বাড়ির একাংশ। পরিবারের অনান্যরা বেরিয়ে আসতে পারলেও আটকে পড়েন চার জন। ২ জনকে প্রথমে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উদ্ধার করা হয় এক অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে। কিন্তু তখনও আটকে থাকে শিশুটি। সাত ঘণ্টা পর তাকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনাস্থলে রয়েছেন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুও। শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ৫২ বছরের এক প্রৌঢ়ারও। তিনিও একেবারে বাড়ির ভিতরের দিকে আটকে পড়েছিলেন। ফলে তাঁদের উদ্ধার করতে সমস্যায় পড়তে হয় দমকল কর্মী ও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীদের। পরে ধ্বংসস্তূপের ভিতরে ঢুকে পড়েন এনডিআরএফ টিমের সদস্যরা।

স্থানীয়রা জানান, দোতলা ওই বাড়িটি দীর্ঘদিনের পুরনো। দীর্ঘদিন তাতে কোনও সংস্কারও হয়নি। তবে পুরনো ওই বাড়িতে কয়েকটি পরিবার থাকে। ভোর রাতে স্থানীয়রা হুড়মুড়িয়ে কিছু ভেঙে পড়ার শব্দ পান। বৃষ্টির সকালে তাঁরা প্রথমে তাতে আমল দেন নি। স্থানীয় দোকানদাররা বিষয়টি দেখতে পান। পরে তাঁদের চিত্কারে ছুটে আসেন স্থানীয়রা। বাড়ির ভিতর থেকে আর্তনাদ শুনতে পান।

খবর যায় দমকল-পুলিশে। বিপদের গুরুত্ব বুঝে পৌঁছয় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুও। পৌঁছন শশী পাঁজাও। বিপদ বুঝে এলাকায় পৌঁছয় এনডিআরএফ টিমও।

এই মুহূর্তে আশেপাশের এলাকা ঘিরে রাখা হয়েছে। ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ শুরু হয়েছে। এলাকার ব্যারিকেড করে ঘিরে রাখা হয়েছে। এলাকায় মাইকিং চলছে। ১০ নম্বর আহিরীটোলার ওই বাড়িটিকে আগেই বিপজ্জনক বাড়ি বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। ঝুলিয়ে দেওয়া  হয়েছিল সাইন বোর্ড। কিন্তু পুরসভার টাঙানো সেই বোর্ড খুলে ফেলেন বাড়ির বাসিন্দারা। বাড়িওয়ালা-ভাড়াটে বিবাদের জেরে বাড়ির সংস্কারও করা হয়নি।

আরও পড়ুন: West Bengal Weather Live Update: দুর্যোগ-দুর্বিপাকে বাংলা! কবে মিলবে মুক্তি?