জেনেটিক্সে এমএসসি, বাবা আবগারি দফতরের প্রাক্তন কর্তা! কে দেবাঞ্জন? ‘ফ্যামিলি হিস্ট্রি’তে তাজ্জব পুলিশ কর্তা
দেবাঞ্জনের বাবা মনোরঞ্জন দেব আবগারি দফতরের প্রাক্তন ডেপুটি কালেক্টর। ২০০৭ সালে আনন্দপুরের মাদুরদহে ২১৮ নম্বর হোসেনপুরের বাড়িতে বাবা-বোনকে নিয়ে বসবাস করতে শুরু করেন দেবাঞ্জন।
কলকাতা: কসবা কাণ্ডের (Kasba False Vaccination Camp) মূল পাণ্ডা হিসাবে ইতিমধ্যেই উঠে এসেছে তাঁর নাম। তাঁর কীর্তি কলাপের কথা শুনে চোখ কপালে উঠেছে দুঁদে তদন্তকারীদেরও। দেবাঞ্জন কে (Debanjan Deb)? কেনই বা নিজের পকেট থেকে টাকা খরচ করে ভ্যাক্সিনেশন ক্যাম্প চালাতে গেলেন তিনি? এই ব্যক্তিকে ঘিরে জটিল ধাঁধা।
এই ব্যক্তির ভুয়ো পরিচয়পত্রের খোঁজ আগেই মিলেছিল। সেই মতো ১৫ জুন নিউ মার্কেট থানায় একটি অভিযোগও দায়ের হয়। তখনও পুলিশের জানা ছিল না, কোভিডের টিকা দেওয়ার নামে কসবায় ভুয়ো ক্যাম্প চালাচ্ছেন দেবাঞ্জন। মাদুরদহের বাসিন্দা বছর ২৮ এর দেবাঞ্জন জেনেটিক্সে এমএসসি। বাড়িতে দেবাঞ্জনের নেম প্লেটে ছিল ভুয়ো আইএএস পরিচয়, ঘুরতেন নীল বাতি লাগানো গাড়িতে। এক প্রাক্তন বিএসএফ জওয়ানকে ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী হিসাবে নিয়োগ করেছিলেন তিনি। নিজের অফিসের ১০-১২ জন কর্মীকে ২৫-২৫ হাজার টাকা বেতনও দিতেন তিনি।
কিন্তু এত টাকা কোথা থেকে পেতেন দেবাঞ্জন? তাঁর আয়ের উৎস-সহ সব দিকই খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ডিভিশনাল কমিশনার রশিদ মুনির খান বলেন, “চার বছর ধরে এই কাজ চলছে। জেরায় জানিয়েছে, দেবাঞ্জনের বাবা ওঁকে বলেছিলেন আইএএস হতে। তাই বাইরে থেকে ঘুরে এসে বলেছিলেন আমি আইএএস হয়ে গেছি। বাড়ির বাইরে নেম প্লেট লাগিয়ে নেন, নীল বাতি লাগানো গাড়িতে ঘুরতেন।”
দেবাঞ্জনের বাবা মনোরঞ্জন দেব আবগারি দফতরের প্রাক্তন ডেপুটি কালেক্টর। ২০০৭ সালে আনন্দপুরের মাদুরদহে ২১৮ নম্বর হোসেনপুরের বাড়িতে বাবা-বোনকে নিয়ে বসবাস করতে শুরু করেন দেবাঞ্জন। তবে এই ঘটনার পর মাদুরদহের বাড়িতে কাউকেই খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তবে কীর্তি কেবল দেবাঞ্জনের নয়, তাঁর বাবা মনোরঞ্জনও নাকি একাধিক সময়ে প্রতিবেশীদের কাছে মিথ্যা দাবি করেছেন। কখন দাবি করেছেন, তাঁর ছেলে রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত। কখনও আবার দাবি করতেন কান থেকে পুরস্কার জিতেছেন। এমনকি একটি বিদেশি সিনেমায় নাকি শিশু চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন দেবাঞ্জন।
আরও পড়ুন: কসবার সেই ভ্যাক্সিনেশন ক্যাম্পে টিকা নিয়েই খটকা লেগেছিল মিমির! পাকড়াও ‘আইএএস’
এক প্রতিবেশী বলছেন, “এক্কেবারে আইএএস-রা যেভাবে চলাফেরা করতেন, দেবাঞ্জনও সেরকমই ছিলেন। রাতে দেহ রক্ষীরা একেবারে বাড়িতে ঢুকিয়ে দিয়ে যেতেন। নীল বাতি লাগানো গাড়িতে ঘুরতেন।” দেবাঞ্জনের একেবারে পাশের বাড়ির ‘কাকিমা’ বলছেন, “মাঝেমধ্যে সন্দেহ হত বটে! তবে আমাদের হাতে তো কোনও প্রমাণ ছিল না। মিথ্যা যে অনেক সময়ই বলতেন ওঁর বাবাও, তা স্পষ্ট বুঝতাম।”