কলকাতা: ডাক্তারি পরীক্ষাতেও ‘টুকলি’! কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রথম বর্ষের ফিজিওলজির পরীক্ষা ছিল। সেই পরীক্ষায় দেদার টুকলির অভিযোগ উঠল চিকিৎসক পড়ুয়াদের একাংশের বিরুদ্ধে। এমনকি পরীক্ষায় টুকলি ধরার জন্য জয়ন্ত সরকার নামে এক চিকিৎসককে ইনভিজিলেটরের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ উঠছে তেমনটাও। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের (Kolkata Medical College Hospital) যে ঘরে পরীক্ষা চলছে, তার পিছনেই ইনভিজিলেটদের ঘর। আরেক পাশে শৌচালয়। সোমবার দুপুরে সেই শৌচালয়ের পিছনে দিয়ে দেখা যায়, সেখানে পড়ে রয়েছে টুকলির কাগজ। বইয়ের পাতা রীতিমতো মাইক্রো জেরক্স করে আনা হয়েছিল। সেগুলিই জানালার ওপর রাখা ছিল। শৌচালয়ের নীচেও পড়ে রয়েছে একাধিক কাগজ। ওই চত্বর জুড়ে চারদিকেই টুকলির কাগজ। এই ছাত্রছাত্রীদের বিরুদ্ধে এক ইনভিজিলেটর কড়া অবস্থান নিয়েছিলেন। অভিযোগ, টুকলি ধরার কারণেই তাঁকে ইনভিজিলেটর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। দায়িত্ব থেকে অপসারণ করা হয় তাঁকে।
স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার চিকিৎসক বনশ্রী ভদ্রও এদিন গোটা বিষয়টি দেখেছেন। টুকলি সংক্রান্ত সমস্ত নথি স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে জমা পড়েছে। TV9 বাংলার তরফে বনশ্রী ভদ্রের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হয়। তিনি সবটা শুনেছেন। কিন্তু কোনও উত্তর না দিয়ে তিনি ফোনটা কেটে দেন। ডিন মানব নন্দীও পরীক্ষার হলে উপস্থিত ছিলেন। তাঁকে প্রশ্ন করা হলে, তিনি বিষয়টা অস্বীকার করেননি। তিনি জানিয়েছেন, বিষয়টি প্রিন্সিপ্যাল জানাবেন। বাকি ইনভিজিলেটরাও সংবাদমাধ্যমকে এড়িয়ে যান।
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের অধ্য়ক্ষ ইন্দ্রনীল বিশ্বাস বলেন, “পরীক্ষা হলের ভিতরে টোকাটুকির কোনও ঘটনা হল পরিদর্শকদের চোখে পড়েনি। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ যাঁরা পড়তে আসেন তাঁরা সকলে মেধাবী। কেউ কেউ প্রথমবার এমবিবিএস পরীক্ষা দিতে গিয়ে অসৎ উপায় অবলম্বন করেন। আগামী দিনে তাও যাতে না হয় সে বিষয়ে শিক্ষকরা পড়ুয়াদের কাউন্সেলিং করবেন। পরীক্ষা হলের পাশাপাশি শৌচাগারেও যাতে টুকলির কোনও কাগজ না থাকে, তার জন্য এবার থেকে পরীক্ষা চলাকালীন সেখানে রক্ষীদের টহল দেওয়ার বিষয়টা নিশ্চিত করা হবে।”