কলকাতা: লজ্জার ছবি! ধিক্কারের ছবি! কলঙ্কিত অধ্যায়ের ছবি! শনিবার বারবেলায় কলকাতা পুরসভার অধিবেশন চলাকালীন যে দৃশ্য দেখা গেল, এই সব বিশেষণও কম পড়ে যায় বলে মনে করছেন অনেকে। অধিবেশন চলাকালীন তুমুূল বচসায় জড়ালেন শাসক-বিরোধী কাউন্সিলররা। এক কথায় চুলোচুলি বেধে যায়। তৃণমূলের অসীম বসুর সঙ্গে বিজেপি-র সজল ঘোষ, বিজয় ওঝার কার্যত হাতাহাতি বাধে। একে অপরের উদ্দেশে কটূ কথা ছুড়ে দেন। কলার ধরাধরি-ধাক্কা-ঠেলাঠেলি কোনওটাই বাদ পড়ল না। শেষমেশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ময়দানে নামতে হয় মেয়র ফিরহাদ হাকিমকেও। অভিযোগ, হেনস্থার শিকার হতে হয় মেয়রকে।
শনিবার কলকাতা পুরসভার অধিবেশন চলছিল। সেই সময় বিরোধীদের কোনও প্রশ্ন ছিল না। অভিযোগ, সেই সময় তৃণমূলের মালা রায় সজল ঘোষকে কার্যত উদ্দেশ্য করে বলেন যে, বিরোধীদের কেন কোনও প্রশ্ন থাকে না? তার উত্তরে বিজেপি নেতা বলেন, “বলেও কোনও লাভ হয় না। মেয়র-ডেপুটি মেয়র কোনও উত্তর দেয় না।” সেই সময় সজল ঘোষ এবং বিজয় ওঝার দিকে তৃণমূল কাউন্সিল অসীম বসু তেড়ে যান বলে অভিযোগ। তাঁর দাবি মেয়রকে নিয়ে এই ধরনের মন্তব্য করা যায় না। এরপরই শুরু হয় বাকযুদ্ধ। তারপর তা গড়ায় হাতাহাতিতে।
অভিযোগ, তৃণমূল কাউন্সিলর সুদীপ পোল্লে, মহেশ শর্মা সহ একাধিক তৃণমূল কাউন্সিলর বিজেপি কাউন্সিলরদের উপর চড়াও হন। মারধরের অভিযোগ ওঠে। এরপর মালা রায় উঠে বেরিয়ে যান। মেয়র-ডেপুটি মেয়র থামাতে গেলে তাদেরও ধাক্কা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। বেশ কিছুক্ষণ গণ্ডগোল চলার পর পরিস্থিতি ঠান্ডা হয়। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “রাজ্যটাকে গোয়াল ঘরে পরিণত করেছে তৃণমূল। দোসর হয়েছে বিজেপি। ওইখানে মেয়র-চেয়ারম্যান রয়েছেন তাঁরা কী করছিলেন?শুধু লুঠের ব্যবসা চলে।”
বিজেপি নেতা সজল ঘোষ বলেন, “ওরা এত গালাগালি করেছে কান থেকে রক্ত বেরবে। ওরা মেরেছে। মালা রায় হাউসের মায়ের সমান। হাউসের অভিভাবিকা। তিনি একচোখে দেখছে। আমরা একটা বিতর্কে অংশ নিয়েছিলাম। তার জেরে সরাসরি গায়ে হাত দিয়ে দিল। প্রমাণ করে দেব ওরা কতটাকা চুরি করেছে।” তৃণমূল কাউন্সিলর অসীম বসু বলেন, “কাউকে মারা হয়নি। সজল ছোট ভাইয়ের মতো। ওকে মারব কেন? ওকে ভালবাসি। কিন্তু মাঝেমধ্যে ওর মাথা বিগড়ে যায়। কারোর দিকে আঙুল তুললে দেখবেন বাকি চারটে আঙুল আপনার দিকে রয়েছে। আর সবাই মিলে কি মেরেছে ওকে? আর ও সুস্থ হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে? সবার দরকার নেই। আমি একাই একশো।”