কলকাতা: ভোটের মুখে আরও একবার বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূলের ক্যাডারে পরিণত হয়েছে রাজ্য পুলিশ। তাই তাদের হাত ধরে কোনও ভাবেই নিরপেক্ষ ভোট সম্ভব নয়। সোমবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনে গিয়ে এ কথাই জানিয়ে এল বিজেপির প্রতিনিধি দল। তাদের দাবি, কলকাতা পুরসভার ভোটও কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করেই করাতে হবে। এদিন প্রতিনিধি দলে ছিলেন বিজেপির রাজ্য নেতা বিশ্বপ্রিয় চৌধুরী, শিশির বাজোরিয়া।
রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দফতর থেকে বেরিয়ে বিশ্বপ্রিয় চৌধুরী বলেন, “কেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়া কলকাতা পুরনিগমে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন কোনও ভাবেই সম্ভব নয়। আমরা কমিশনকেও তাই জানিয়ে গেলাম। রাজ্য পুলিশ এখন আর পুলিশ নেই, তৃণমূলের ক্যাডারে পরিণত হয়েছে। এই সরকার, পুলিশ, প্রশাসন সবকিছু মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছে। সেই জন্য আমাদের এদের উপর আর কোনও ভরসা নেই। একজন মন্ত্রী, তিনি পুরসভার মুখ ছিলেন, তিনি আজ বলে দিলেন তাঁরা ১৪০ থেকে ১৪৪টি আসনই জিততে চান। গণতন্ত্র যে এখানে নেই এই ভাষাতেই তা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে।”
প্রসঙ্গত এদিনই মনোনয়ন পত্র জমা দিয়ে ফিরহাদ হাকিম বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেসের জন্য যখনই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মানুষকে আহ্বান করেছেন, তাঁরাও সমর্থন করেছেন। গত বিধানসভায় মূল কলকাতায় ১১টি আসন এবং বাইরে সব আসন আমরাই পেয়েছি। এবারও কলকাতার পুরভোটে মানুষের উপর বিশ্বাস থেকে বলছি ১৪০ থেকে ১৪৪টি আসন তৃণমূল কংগ্রেসই জিতবে।”
সোমবারই কলকাতার ১৪৪টি ওয়ার্ডে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে বিজেপি। এদিনই তাদের প্রতিনিধিরা ঘুরে এলেন নির্বাচন কমিশনের দফতরে। প্রথম থেকেই রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছেন বঙ্গ বিজেপির প্রথম সারির নেতারা। এদিনও সেই সুরই শোনা গেল। এদিন বিজেপির তরফে স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়, কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়েই পুরভোট চাইছে তার
সূত্রের খবর, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দফতরে বিজেপি দাবি করেছে, ১৪৪টি ওয়ার্ডের জন্য ১০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হোক। যদিও কমিশন সূত্রে যা খবর তাতে রাজ্য পুলিশ দিয়েই ভোট করানোর পরিকল্পনা রয়েছে। বেশ কিছুদিন আগেই রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব, রাজ্য পুলিশের ডিজির কাছ থেকে নির্বাচনের নিরাপত্তা সংক্রান্ত পরিকল্পনা চেয়েছে কমিশন। সূত্রের দাবি, রাজ্য সরকারের তরফে এখনও সেই পরিকল্পনা জমা পড়েনি। তবে কমিশন এদিন বিজেপির প্রতিনিধি দলকে জানিয়েছে, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোট করতে সবরকম পদক্ষেপ করা হবে।
পাশাপাশি ভোটার তালিকা নিয়ে একটা অস্পষ্টতা ছিল বিজেপির কাছেও। তা নিয়েও এদিনের সাক্ষাতে কথা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। ১.১.২০২১-এর ভোটার তালিকা ধরেই কি ভোট হচ্ছে নাকি ১.১১.২০২১-এর ভোটার তালিকা ধরে ভোট হচ্ছে, তাও জানতে চান বিজেপির প্রতিনিধিরা। কমিশন জানিয়ে দিয়েছে, ১ নভেম্বর ২০২১-এর যে খসড়া ভোটার তালিকা রয়েছে তা সংশোধনের কাজ চলছে। তা ধরেই ভোট হবে। অর্থাৎ একদিকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবি, অন্যদিকে কোন ভোটার তালিকা ধরে ভোট হবে এই দু’টি বিষয়েই এদিন আলোচনা করে বিজেপি।