‘মামার সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছি’, কথার সূত্র ধরেই তিলজলা হত্যাকাণ্ডের রহস্যভেদ
ওই বাসিন্দা পুলিসকে জানায়, "শুভ জানিয়েছিল সে জয়ন্তমামার সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছে।" এরপর সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে পুলিস।
কলকাতা: ফ্ল্যাটে ঢোকার সময়ে আবাসনের এক বাসিন্দার মুখোমুখি হয়ে যাওয়ায় ওরা শুধু বলেছিল ‘মামার সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছি…’ সমস্ত ‘অপারেশন’ নিখুঁতভাবে করলেও এই একটা কথাই কাল হল। আর পুলিস সেই কথার সূত্র ধরেই ১২ ঘণ্টার মধ্যে কিনারা করল তিলজলা হত্যাকাণ্ডের (Tiljala Murder Case)।
বৃহস্পতিবার তিলজলার কুষ্টিয়া রোডের একটি সরকারি আবাসন থেকে জয়ন্ত মুখোপাধ্যায় নামে বছর পঁয়তাল্লিশের এক ব্যক্তির গলাকাটা দেহ উদ্ধার করে পুলিস। তদন্তে নেমে পুলিস জানতে পারে, বেশ কয়েক বছর ধরে ওই ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন জয়ন্ত। ইদানীং তিনি কর্মহীন ছিলেন। লকডাউনপর্বে তিনি স্যানিটাইজারের ব্যবসা শুরু করেছিলেন, পরে তাও বন্ধ হয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে একটি ছুরি, নোঁড়া, বঁটি উদ্ধার করে পুলিস। খোলা আলমারি, তছনছ ঘর দেখে পুলিস মনে করে ডাকাতির উদ্দেশ্যেই এই খুন।
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিসের সন্দেহের তালিকায় উঠে আসে জয়ন্তর পূর্ব পরিচারিকার ছেলে শুভ সর্দারের নাম। জিজ্ঞাসাবাদে পুলিস জানতে পারে, গত ৬ ডিসেম্বর ফ্ল্যাটে এসেছিল শুভ। ঢোকার সময়ে আবাসনেরই এক বাসিন্দার সঙ্গে দেখা হয় তার। ওই বাসিন্দা পুলিসকে জানায়, “শুভ জানিয়েছিল সে জয়ন্তমামার সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছে।” এরপর সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে পুলিস।
আরও পড়ুন: নাড্ডার কনভয়ে ‘হামলা’র পরই হঠাৎ রাজ্যে আসছেন অমিত শাহ
জয়ন্তর ফ্ল্যাটে যে শুভ ঢুকেছিল তার প্রমাণ মেলে। আর সেদিনের পর থেকে জয়ন্তকে যে দেখাও যায়নি আর, তাও জানতে পারে পুলিস। শুভকে গ্রেফতার করে পুলিস। টানা জেরার মুখে ভেঙে পড়ে শুভ। পুলিসের কাছে সে স্বীকার করেছে, প্রথমে নোঁড়া দিয়ে থেঁতলে দেওয়া হয় জয়ন্তর মাথা। এরপর ছুরি দিয়ে গলা কাটা হয়। রক্ত ছিটকে লাগে দেওয়ালে। এরপর ঘর তছনছ করে তারা। ঘটনায় রাহুল হালদার নামে তার এক বন্ধু সাহায্য করেছিল বলেও জেরায় জানায় শুভ। রাহুলকেও গ্রেফতার করেছে পুলিস।