সুজয় পাল, কলকাতা: কলকাতা পুলিশের ট্র্যাফিক সার্জেন্টদের এ বার আরও উন্নত ও উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন বডি ক্যামেরা দিচ্ছে লালবাজার। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও গ্যাজেট ব্যবহার করার ক্ষেত্রে কলকাতা পুলিশ বরাবরই এগিয়ে থাকে। তাতেই এবার নতুন সংযোজন।
বডি ক্যামেরা অবশ্য গত কয়েক বছর ধরেই ব্যবহার করছেন কলকাতা পুলিশের সার্জেন্ট থেকে সব স্তরের পুলিশকর্মীরা। নতুন এই বডি ক্যামেরায় দিনে তো বটেই রাতে আরও ঝকঝকে ছবি ও ভিডিয়ো উঠবে। ইতিমধ্যেই কলকাতা পুলিশের বেশ কয়েকটি ট্রাফিক গার্ডের সার্জেন্টদের কাছে পৌঁছে গিয়েছে উন্নত ও উচ্চ প্রযুক্তির এই বডি ক্যামেরা।
নতুন এই বডি ক্যামেরায় ভিডিয়ো উঠবে ১০৮০ পিক্সেলে। 4K ভিডিয়ো তুলতেও সক্ষম এই ক্যামেরা। রাতের ছবি বা ভিডিয়ো তোলার জন্য এতে রয়েছে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন এলইডি ফ্ল্যাশ। নতুন এই বডি ক্যামেরার ব্যাটারি ব্যাকআপ ও স্টোরেজ ক্ষমতাও অনেক বেশি। অর্থাৎ একসঙ্গে পাঁচ-ছয় ঘণ্টা ভিডিয়ো রেকর্ড করা যাবে। এ ছাড়াও এই বডি ক্যামেরার সঙ্গেই রয়েছে এলসিডি ডিসপ্লে, যাতে কোনও ছবি ও ভিডিয়ো তোলার সঙ্গে সঙ্গেই তা দেখে নেওয়া যাবে।
এতদিন যে বডি ক্যামেরা পুলিশকর্মীরা ব্যবহার করছিলেন তা এতটা উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ছিল না। দিনের বেলা ঠিকঠাক কাজ করলেও রাতের স্পষ্ট ভিডিয়ো আসত না। সেজন্যই নতুন এই যদি ক্যামেরা দেওয়া হচ্ছে।
পুলিশকর্মীদের বডি ক্যামেরা দেওয়া হয়েছিল তাদের কাজের সুবিধার জন্যই। বিভিন্ন ঘটনা-দুর্ঘটনায় ট্রাফিক সার্জেন্ট কিংবা পুলিশকর্মীদের দিকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অভিযোগের আঙুল ওঠে। পুলিশকর্মীরা দুর্ব্যবহার করেছেন বলে প্রায়ই অভিযোগ করা হয়। কিন্তু সে ক্ষেত্রে ঠিক কি ঘটেছে তার কোনও প্রমাণ পাওয়া যেত না। সে জন্যই পুলিশকর্মীদের এই বডি ক্যামেরা দেওয়া হয়েছিল লালবাজারের তরফে। স্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে, কোথাও কোনও বেগতিক পরিস্থিতি দেখলেই বডি ক্যামেরা চালু করতে হবে। বডি ক্যামেরা অন থাকলেই সবটা রেকর্ড হবে। ফলে কার দোষ কার গুণ, সবটা জলের মতো স্পষ্ট হয়ে যাবে। বাস্তবে হয়েছেও তাই। বহু ক্ষেত্রে পুলিশের বিরুদ্ধেও গুরুতর অভিযোগ উঠলেও পরে বডি ক্যামেরার ভিডিয়ো ঘেঁটে দেখা গিয়েছে অভিযোগ মিথ্যা।
বডি ক্যামেরা চালু হওয়ার পর থেকেই কোথাও গোলমালের সূত্রপাত হতে দেখলেই পুলিশকর্মীরা বডি ক্যামেরা অন করে দেন। ফলে সামনের ব্যক্তি কী বলছেন, কী করছেন সবটাই রেকর্ড হয়ে যায়। পরবর্তীতে কোনও অভিযোগ উঠলেও কে দোষী তা জানিয়ে দেয় এই ডিভাইস। এই কারণেই বডি ক্যামেরা প্রথমে দেওয়া হয়েছিল সার্জেন্টদের। পরবর্তীতে এর উপকারিতা বুঝতে পেরে প্রত্যেক থানাতেও পুলিশকর্মীদের এই ক্যামেরা দেওয়া হয়। কিন্তু পুরনো মডেলের ওই ক্যামেরায় রাতেও কোনও গোলমালের ঘটনা রেকর্ড হলেও ভালোভাবে বোঝা যেত না। সেই কারণে অত্যাধুনিক এই বডি ক্যামেরা দেওয়া হল। আরও পড়ুন: দুটি বাইকে চার জন, এটাই গ্যাং! শহরের বুকে সাতসকালে ছিনতাইবাজরা এখন পুলিশের জালে