কলকাতা: আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Alapan Bandyopadhyay) খুনের হুমকি চিঠি! বড় ‘ব্রেক থ্রু’ তদন্তকারীদের। ঘটনায় গ্রেফতার করা হল এক চিকিত্সক-সহ তিন জনকে। ধৃতদের নাম চিকিত্সক অরিন্দম সেন। তিনি রাজা রামমোহন রায় সরনির বাসিন্দা কেপিসি মেডিক্যাল কলেজের চিকিত্সক। গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁর চালক রমেশ ও পেশায় এক টাইপিস্ট বিজয় কুমার কয়ালকে।
ঘটনার তদন্তে নেমে সোমবার সকালে রাসবিহারী অ্যাভিনিউয়ের বিজন সেতুর সামনে থেকে প্রথমে গ্রেফতার করা হয় বিজয় কুমার কয়ালকে। তিনি পেশায় টাইপ রাইটার। তাঁকে জেরা করেই উঠে আসে মূল চক্রীর নাম। জানা যায়, রামমোহন রায় সরনির বাসিন্দা চিকিত্সক অরিন্দম সেন তাঁকে এই চিঠি টাইপ করতে পাঠিয়েছিলেন। এরপর ওই চিকিত্সককে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁকে জেরা করে উঠে আসে ঘটনায় জড়িত তৃতীয় জন অর্থাত্ চিকিত্সকের গাড়ি চালকের নামও।
চিকিত্সক অরিন্দম সেন কেপিসি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত। ধৃতদের জেরা করে জানা গিয়েছে, অরিন্দম তাঁর গাড়িচালকের হাত দিয়ে ওই চিঠি পাঠিয়েছিলেন টাইপ রাইটারের কাছে। গত দু’বছর ধরে এরকম চিঠি একাধিক ব্যক্তিকে পাঠিয়েছেন ওই চিকিত্সক। এখনও পর্যন্ত মোট ৭ জনকে তিনি এইভাবে হুমকি চিঠি পাঠিয়েছেন বলে জেরায় স্বীকার করেছেন। কিন্তু কেন পাঠিয়েছেন, তার কোনও কারণ জানা যায়নি। ওই চিকিত্সকের মানসিক স্থিতাবস্থা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
জেরায় ওই চিকিত্সক জানিয়েছেন, অনেক ক্ষেত্রে আক্রোশের জেরে তিনি চিঠি পাঠিয়ে থাকতেন। কেন তিনি গৌর হরি মিশ্রের নাম চিঠিতে উল্লেখ করেছিলেন? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানিয়েছেন, গৌর হরি মিশ্রকে অপদস্ত করতেই তাঁর নাম লিখেছিলেন। অনেকক্ষেত্রে নাকি তিনি সাংবাদমাধ্যমের প্রকাশিত খবরের দ্বারা প্রভাবিত হয়েও চিঠি লিখতেন। চিকিত্সকের মেন্টাল মেডিক্যাল রিপোর্ট খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
অক্টোবরের শেষ দিকে প্রাণনাশের হুমকি পান রাজ্য সরকারের মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় (Alapan Bandyopadhyay)। মঙ্গলবার স্পিড পোস্টে পাঠানো একটি চিঠিতে ওই হুমকি দেওয়া হয়েছে। চিঠি পাঠানো হয়েছে আলাপনবাবুর স্ত্রী সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে। যিনি ঘটনাচক্রে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।
এক লাইনের চিঠিতে ইংরেজিতে লেখা ছিল, ‘আপনার স্বামী নিহত হবেন। কেউ আপনার স্বামীকে বাঁচাতে পারবে না।’ চিঠিতে সই রয়েছে জনৈক গৌরহরি মিশ্রের। কেয়ার অব মহুয়া ঘোষ। সম্ভবত তিনি রাজাবাজার সায়েন্স কলেজের কেমিক্যাল টেকনোলজি বিভাগে কর্মরত।
চিঠির প্রতিলিপি পাঠানো হয় রাজাবাজার সায়েন্স কলেজের সায়েন্স সেক্রেটারিকেও। চিঠির খামে প্রেরকের নাম-ঠিকানা দেওয়া ছিল। চিঠিটির কথা পুলিশকে জানানো হয়। জানানো হয়েছে রাজ্য সরকারকেও। হেয়ারস্ট্রিট থানায় মামলা রুজু করা হয়। মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টার নিরাপত্তাও বাড়ানো হয়।
আরও পড়ুন: অবস্থান বদল রাজ্যপালের, শেষবেলায় বললেন শপথ পড়াবেন অধ্যক্ষই
আরও পড়ুন: দারিদ্রতার বেড়ি ভেঙে স্বপ্নের উড়ান! নিটে স্থান দখল চা ও ফল বিক্রেতার ছেলেদের