‘এসএসসি-র ওপর আমার কোনও বিশ্বাসই নেই’, আদালতের পর্যবেক্ষণে উঠল একাধিক প্রশ্ন

সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলা করেন আইনজীবী ফিরদৌসি শাসিম।

'এসএসসি-র ওপর আমার কোনও বিশ্বাসই নেই', আদালতের পর্যবেক্ষণে উঠল একাধিক প্রশ্ন
TET নিয়োগে পর্যবেক্ষণ হাইকোর্টের
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 07, 2021 | 2:34 PM

কলকাতা: ‘এসএসসি-র ওপর আমার কোনও বিশ্বাসই নেই।’ এবার কলকাতা হাইকোর্টের চরম ভর্তসনার মুখে পড়তে হল স্কুল সার্ভিস কমিশনকে।

সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলা করেন আইনজীবী ফিরদৌসি শাসিম। তাঁর মক্কেল গোপাল মণ্ডল ২০১৬ সালে স্কুল সার্ভিস পরীক্ষায় বসেছিলেন। তাঁর বিষয় ছিল গণিত। ২০১৯ সালে ফল প্রকাশের পর তিনি দেখতে পান, তিনি চাকরি পাননি। এরপর তাঁর সন্দেহ হয়। তিনি আরটিআই করেন। দেখতে পান মেধাতালিকায় তাঁর নাম রয়েছে ২১৪ নম্বরে। তিনি ৬০ শতাংশ নম্বর পয়েছেন। কিন্তু তিনি চাকরি পাননি, পরিবর্তে চাকরি পেয়েছেন নীলমনি বর্মন নামে এক ব্যক্তি।

অথচ মেধাতালিকায় নীলমনির নাম রয়েছে ২৫২ নম্বরে। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৫৮.৬৭ শতাংশ। এরপর এসএলএসটি গণিতে নিয়োগে বেনিয়মের অভিযোগ তুলে আদালতের দ্বারস্থ হন গোবিন্দ মণ্ডল। মামলাটি ওঠে বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়ের ঘরে। মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানি ছিল।

মামলার সওয়াল জবাব চলাকালীন নিজের ভুল স্বীকার করে নেয় স্কুল সার্ভিস কমিশন। তাদের বক্তব্য, নিয়োগে মেধাতালিকার নম্বরের ভিত্তিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে তাদের  ভুল হয়েছে। ভুল স্বীকার করে কার্যত রিপোর্টও জমা করে কমিশন। এরপর শুনানির সময় এদিন সেই রিপোর্ট স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফে আদালতে পেশ করেন অ্যাডভোকেট জেনারেল।

রিপোর্ট দেখে অত্যন্ত রেগে যান বিচারপতি। তিনি বিস্ময়ও প্রকাশ করেন। এরপরই অ্যাডভোকেট জেনারেলের উদ্দেশে তিনি বলেন, “স্কুল সার্ভিস কমিশনের ওপর আমার কোনও ভরসা নেই।” উল্লেখ্য, টেট ও এসএসসি পরীক্ষা নিয়ে বেনিয়মের অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে, সেগুলি সবই বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়ের ঘরে বিচারাধীন।

নানান জটিলতায় জড়িয়ে এসএসসি-টেট! একাধিক ক্ষেত্রে বেনিয়ম, নিয়োগে অস্বচ্ছতার অভিযোগ উঠেছে। তবে এই মামলাটি কার্যত নজিরবিহীন। যেখানে স্কুল সার্ভিস কমিশন নিজের ভুল স্বীকার করে নিয়েছে। এদিনের মামলায় কমিশনের কাজে বিরক্তি প্রকাশ করেন বিচারপতি। মামলা থেকে সরে দাঁড়ালেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।

প্রসঙ্গত, এই প্রথম নয়, এর আগেও এসএসসি কমিশন হাইকোর্টের ভর্তসনার মুখে পড়েছিল। জুলাইয়ের প্রথমেই উচ্চ প্রাথমিকে বেনিয়মের মামলায় সরাসরি এসএসসি-র চেয়ারম্যানকে তলব করেছিল হাইকোর্ট। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছিল আগেই। সেবারও চেয়ারম্যানকে হাইকোর্টে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।

সেই বারও বিচারপতি স্কুল সার্ভিস কমিশনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, ‘স্কুল সার্ভিস কমিশন অপদার্থ। কী ধরনের আধিকারিকরা চালাচ্ছে কমিশন? এই কমিশনকে অবিলম্বে খারিজ করা উচিত।’ বেনিয়মের অভিযোগ তুলে হাইকোর্টে মামলা করেছেন দুই প্রার্থী মৌমিতা মিত্র ও শেখ জামালউদ্দিন। তাঁদের দাবি, তাঁদের থেকে কম নম্বর পাওয়া প্রার্থীরা ইন্টারভিউর তালিকায় জায়গা পেলেও তাঁদের নাম ওই তালিকায় নেই। ২০১৯ এর ১ অক্টোবর আদালত নির্দেশ দেওয়ার পর সেই নির্দেশ মেনে ইন্টারভিউ লিস্ট প্রকাশ করা হয়নি কেন? সেই প্রশ্নও তোলেন বিচারপতি। আরও পড়ুন: দুপুর ২ থেকে ৪টে পর্যন্ত ফোন বন্ধ ছিল স্বামীর, ঠিক এখানেই মিসিং লিঙ্ক! পর্ণশ্রী খুনে শিউরে ওঠার মতো তথ্য