
সায়ন্ত ভট্টাচার্য ও সুশোভন ভট্টাচার্যের রিপোর্ট
কলকাতা: শহর থাকল শব্দ ‘দানবের’ কবলে। সমন্বয় বৈঠক থেকে শব্দবাজি নিয়ে নানা বিধিনিষেধ জারি করেছিলেন কলকাতার নগরপাল মনোজ ভর্মা। কিন্তু দীপাবলির রাতে সেই বিধিনিষেধকেই যেন বুড়ো আঙুল দেখালেন একাংশ। দেদারে ফাটল শব্দবাজি। আকাশে উড়তে দেখা গেল ফানুস। বাতাসে বাড়ল বিষ।
এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স, যা বাতাসের গুণমানকে বুঝিয়ে থাকে, সেই তথ্য অনুযায়ী, এদিন সন্ধ্যা থেকে ক্রমে খারাপ হয়েছে শহরের চারটি মূল কেন্দ্রের আবহ। যথাক্রমে নিউটাউন, দমদম, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল সংলগ্ন এলাকা এবং যাদবপুর। যত্রতত্র ফেটেছে চকোলেট বোমা। আকাশে উড়েছে সেল। যার জেরে শহরের বাতাসে বেড়েছে বিষের পরিমাণ। সোমবার সবচেয়ে বেশি বিষ-বায়ু রেকর্ড হয়েছে নিউটাউনে। সেখানে বাতাসে একিউআই ছিল ১৯৯। এরপরেই দমদম, সেখানে আবার একিউআই ছিল ১৪০। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল সংলগ্ন এলাকার একিউআই ছিল ১৩৭। কসবায় ১০৫ ও যাদবপুরে ১০২।
কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রক বোর্ডের মাপকাঠি অনুযায়ী, বাতাসে AQI যদি ০ থেকে ৫০-র মধ্য়ে থাকে, তবে তা ভাল। কিন্তু এই সংখ্যা যদি ৫১ থেকে ১০০ এর গন্ডিতে ঢুকে যায়, তখন পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক। আর ১০০ থেকে ২০০-র মধ্য়ে থাকলে দূষণের মাত্রা থাকে মাঝারি। গুণমান সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে খারাপ বলেই বিবেচিত হয়। ৩০১ থেকে ৪০০ হলে খুব খারাপ এবং ৪০১ থেকে ৪৫০ হলে ভয়ানক।
উল্লেখ্য, শব্দবাজি নিয়ে প্রশাসনের জারি করা বিধিনিষেধ যাঁরা ভাঙবেন, তাঁদের বিরুদ্ধেই পদক্ষেপ করা হবে বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছিল কলকাতা পুলিশ। সোমবার রাতে ঠিক তেমনটাই হল। দেদারে যেমন ফেটেছে বাজি, তেমনই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের পাকড়াও করেছে পুলিশ। লালবাজার প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী, গতকাল রাতে মোট ৫২২ কেজি নিষিদ্ধ শব্দবাজি বাজেয়াপ্ত করেছে কলকাতা পুলিশ। এছাড়াও গ্রেফতার করা হয়েছে মোট ৪৫ জনকে। যাদের মধ্যে ১৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে নিষিদ্ধ শব্দবাজি ফাটানোর অভিযোগে। বাকি বাকি ২৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বাজি সংক্রান্ত অন্যান্য বিধিনিষেধ ভঙ্গের অভিযোগে।