কলকাতা: বুধবার সকাল থেকেই রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটকের মোট ৬ টি বাড়িতে হানা দিয়েছে সিবিআই। তল্লাশি চালানো হচ্ছে তাঁর হিসাব রক্ষকের বাড়িতেও। এ দিন, রীতিমত অতর্কিতে হানা দিয়েছেন গোয়েন্দারা। ঘটনার প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া দিলেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। বলেন, ‘তদন্তের বিষয়ে মন্তব্য করব না। সেই বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও তাঁর আইনজীবীরা মন্তব্য করবেন।’
কুণালের বক্তব্য
মূলত, নিয়োগ দুর্নীতি থেকে শুরু করে গরুপাচার, কয়লা কেলেঙ্কারির মতো ঘটনায় নাম জড়িয়েছে তৃণমূলের তাবড়-তাবড় নেতাদের। ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার হাতে গ্রেফতার হয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অনুব্রত মণ্ডলের মত হেভিওয়েট নেতা। এরপর আজ কয়লা পাচার মামলার তদন্তের জন্যই সকালবেলা আইনমন্ত্রীর বাড়িতে হানা দেয় গোয়েন্দা। চলে লাগাতাল তল্লাশি অভিযান। সেই প্রসঙ্গেই এ দিন মন্তব্য করেন কুণাল। সন্দেহ প্রকাশ করেন সিবিআই-এর নিরপেক্ষতা নিয়ে। বলেন, ‘ যে ঘটনা প্রবাহ ঘটছে। পরপর খালি তৃণমূল নেতাদের বাড়িতে তল্লাশি চলছে। আর বিজেপি নেতারা যেভাবে বিভিন্ন জনের নাম উল্লেখ করে বলে দিচ্ছেন তাতে স্পষ্ট যে তদন্তের থেকেও বেশি এটি রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্য প্রণোদিত। তৃণমূলকে চাপে ফেলতেই এটা বিজেপির রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। বিজেপি সিবিআই এর বিশ্বাস যোগ্যতা নষ্ট করে দিচ্ছে।’
দিলীপ-সুকান্তকে একযোগে আক্রমণ
এরপর বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষকে এক যোগে কটাক্ষ করে কুণাল বলেন, ‘দিলীপ ঘোষ কি সিবিআই এর নব নিযুক্ত অতিরিক্ত অধিকর্তা? ত না হলে তিনি আগে থেকে এত কি করে জানেন একটি তদন্তকারী সংস্থার কাজ নিয়ে। এতেই প্রমাণ, এটা রাজনৈতিক উদ্দেশে চাপ দিতে করা হচ্ছে।’ একই সঙ্গে সুকান্ত মজুমদারকে শিক্ষানবিশ সভাপতি কটাক্ষ করে বলেন, ‘উনি তো নিজের ওয়ার্ডেই দলকে জেতাতে পারেনা। অহেতুক নিজের এলাকার বাইরে বিষ ঢালতে গিয়েছেন।’
বস্তুত, জুলাই মাসে মলয় ঘটককে ডেকে পাঠিয়েছিলেন ইডি। কিন্তু সে সময় ইডি দফতরে হাজিরা দেননি তিনি। আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর ইডি দফতরে হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু তার মধ্যেই সিবিআই হানা। কয়লা পাচারকাণ্ডে সিবিআই ও ইডি সমান্তরাল ভাবে তদন্ত করছেন। আজ সকাল ৮.১৫ মিনিট নাগাদ মন্ত্রীর পুরনো বাড়িতে যায় সিবিআই। সেখানে বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করেন। তারপর সেখান থেকে বেরিয়ে পুরনো বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন তদন্তকারীরা। যদিও, কয়লা পাচার কাণ্ডে বেশ কয়েক বার নোটিস দেওয়া সত্ত্বেও মলয় তদন্তকারীদের মুখোমুখি হননি। ১৪ সেপ্টেম্বর তাঁর হাজিরা দেওয়ার কথা রয়েছে। এই নিয়ে আগেই মলয় ঘটকের প্রতিক্রিয়া জানার জন্য ফোন করা হয়েছিল, কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি।