কলকাতা: টাকা নিয়ে চাকরি বিক্রি করা হয়েছে কি হয়নি, সেই সদুত্তর নেই রাজ্য সরকার তথা শাসক দলের কাছে। তবে শাসক-বিরোধী রাজনৈতিক চাপান-উতোরে নতুন রসদ জোগাচ্ছে বাম আমলের দুর্নীতির অভিযোগ। বেআইনিভাবে নেতার আত্মীয়দের চাকরি দেওয়া হয়েছিল বামফ্রন্ট সরকারের আমলে, তেমনটাই অভিযোগ তৃণমূল নেতৃত্বের। প্রায় দু’বেলা নেতা-নেত্রীরা সংবাদমাধ্যমের সামনে এই ইস্যুতেই সুর চড়াচ্ছেন। প্রাক্তন সাংসদ তথা বাম নেতা সুজন চক্রবর্তীর (Sujan Chakraborty) স্ত্রীর চাকরি নিয়েও অভিযোগ উঠেছে। আর এবার সুজনের পরিবারের একাধিক সদস্যের চাকরি নিয়ে প্রশ্ন তুললেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। সুজনের কতজন আত্মীয় সরকারি চাকরি করেন বা করতেন, টুইটারে সেই তালিকা প্রকাশ করেছেন কুণাল। তবে কুণালের তালিকায় আমল দিতে নারাজ সুজন।
দিন কয়েক আগে বাম আমলের দাপুটে নেতা সুশান্ত ঘোষের পরিবারের সদস্যের চাকরি সম্পর্কিত তালিকা সংবাদমাধ্যমের সামনে তুলে ধরেছিলেন মন্ত্রী রাজ্যের মন্ত্রী অখিল গিরি। আর এবার কুণালের নিশানায় সুজন।
টুইটে কুণাল দাবি করেছেন, সিপিএমের সূত্রেই নাকি তালিকা মিলেছে। বাম নেতাকে ‘দাদা’ সম্বোধন করে কুণাল ঘোষ লিখেছেন, ‘তালিকা কি ঠিক? যদি ঠিক হয়, এতজনের চাকরি দৃশ্যত কি স্বাভাবিক?’ সুজনের স্ত্রী মিলি চক্রবর্তী ছাড়াও একাধিক আত্মীয়ের নাম রয়েছে সেখানে।
কুণালের তালিকা অনুযায়ী- সুজনের শ্বশুর শান্তিময় ভট্টাচার্য ছিলেন জেলার প্রাথমিক শিক্ষা কাউন্সিলের প্রাক্তন চেয়ারম্যান। বড় ভায়রাভাই অমিতাভ সেন সোনারপুর কলেজে অবসরপ্রাপ্ত হেড ক্লার্ক, বড় শালি ছবি ভট্টাচার্য সরকারি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকা, বড় শালির ছেলে পুরসভায় কর্মরত, মেজ শালি নন্দিনী ভট্টাচার্য মহেশতলা হাইস্কুলের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা, সেজ শালি মৌমিতা ভট্টাচার্য সরকারি প্রাথমিক স্কুলের কর্মরত, ছোট শালি সম্পূর্ণা ভট্টাচার্য সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা, সুজনের বোন উমা চক্রবর্তী, আর এক বোন সঞ্চিতা চক্রবর্তী সরকারি স্কুলের শিক্ষিকা ও আরও এক বোন সুপর্ণা চক্রবর্তী সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক। এছাড়া মিলি চক্রবর্তীর কলেজের চাকরি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে আগেই। তালিকায় রয়েছে ছোট ভায়রাভাই দেবাশিস ভট্টাচার্যেরও, যিনি গণশক্তি পত্রিকার লাইব্রেরি বিভাগে কর্মরত।
এই তালিকা নিয়ে যখন চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে, তখন সুজনের স্পষ্ট জবাব, ‘মনে করলে কোর্টে যান, দেখা হবে।’ তিনি বলেন, ‘যে যার মতো লিস্ট নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এই আবোল-তাবোল কথার উত্তর দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করি না। দেবও না। মুখ্যমন্ত্রী তালিকা প্রকাশ করার নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রীকে। সেই তালিকা প্রকাশ করুন, আপত্তি নেই। জ্ঞানত আমার পরিচিত লোকেরা কেউ বেআইনি চাকরি করে না। টাকা দিয়েও চাকরি করে না। মনে করলে কোর্টে যান। উত্তর দেব।’ তাঁর দাবি, যে তৃণমূলের উচিত ছিল সরকারে থেকে বর্তমানকে সুরক্ষিত করা, তারা চাকরি বিক্রির বন্দোবস্ত করেছেন। ইস্যু ঘোরানোর জন্য এই ধরনের তালিকা প্রকাশ করছেন বলেও মন্তব্য করেছেন সুজন।
সুজন চক্রবর্তীকে ঘিরে আবার একটি তালিকা সামনে এসেছে। সিপিএমের সূত্রেই বেরিয়েছে। তখন রাজ্যে অত বেকার, আর ওই বৃত্তে সবাই চাকরিতে।
সুজনদা, তালিকা কি ঠিক?
যদি ঠিক হয়, এতজনের চাকরি দৃশ্যত কি স্বাভাবিক?
যদি তালিকা ভুল হয়, রটনা নিন্দার।
যদি ঠিক হয়, তদন্ত হোক। pic.twitter.com/AM9Hau5jW8— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain) March 31, 2023