কলকাতা: সরকারি প্যানেলে থাকা আইনজীবীও সরকারের হয়ে সওয়াল করতে চাইছেন না! রাজ্যকে বাঁচাতে আগ্রহী নন আইনজীবী! কলকাতা হাইকোর্টের একটি মামলায় সামনে এল এমনই তথ্য। আগ্রহ না থাকায় প্যানেল থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে নতুন প্যানেলের আইনজীবীকে। সরকারের মামলা লড়ার জন্য থাকে বিশেষ প্যানেল। সম্প্রতি সেই প্যানেলে আইনজীবী বদল হয়েছে। সেই বদলের পরই প্যানেল নিয়ে প্রশ্ন তুললেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু।
জানা যাচ্ছে, নতুন সরকারি প্যানেলে ঠাঁই হয়নি অনেকে সিনিয়র আইনজীবীর। কিন্তু নতুন প্যানেল বিবেচনা করা দরকার বলে মনে করছেন বিচারপতি বসু। তাই অর্ডার কপি রাজ্যের আইনমন্ত্রীকে জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
প্যানেল দেখে আগেও অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, সরকারি আইনজীবীদের প্যানেলে একমাত্র তৃণমূল কংগ্রেস পন্থীরাই কি থাকবেন? এই প্রশ্ন আইনজীবী মহলেও ঘোরাফেরা করে। সরকারি আইনজীবীদের উপস্থিতি নিয়ে মাঝেমধ্যে বিচারপতিরা বিরক্ত হন, এমন উদাহরণ দেখা গিয়েছে। কিন্তু তাই বলে একেবারে প্যানেল নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন বিচারপতি, এমন নজির খুব বেশি নেই। কিন্তু সম্প্রতি বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু তাঁর একটি মামলায় সরকারি প্যানেল নিয়ে প্রশ্ন তুলে মন্ত্রীর কাছে কৈফিয়ত চাইলেন।
ঘটনার সূত্রপাত একটি মামলা ঘিরে। একটি ব্যক্তিগত মামলায় মামলাকারীর আইনজীবী অভিযোগ করেন, গত ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে শুনানির জন্য ওঠে মামলাটি। কিন্তু রাজ্যের পক্ষের আইনজীবী না থাকায় মামলার শুনানি হয়নি। সম্প্রতি, শুনানির আগের দিন আলাদা করে রাজ্যকে জানানো হয় বিষয়টি। পরে খোঁজ নিয়ে মামলাকারীর আইনজীবী জানতে পারেন সহিদুর রহমান নামের এক আইনজীবীকে ওই মামলায় নিযুক্ত করা হয়েছে, কিন্তু তিনি নাকি ওই মামলা করতেই আগ্রহী নন। সে কথা আদালতে নিজেই জানিয়ে দেন আইনজীবী রহমান।
এ কথা শুনেই বিরক্ত হন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। তাঁর পর্যবেক্ষণ, ‘রাজ্যের এই অবস্থা দুখঃজনক’। বিচারপতি আরও বলেন, “একটি নয় অধিকাংশ মামলাতেই সরকারি উকিলরা এজলাসে যেতে চান না রাজ্যের হয়ে লড়াই করতে। রাজ্যকে এই প্যানেল নিয়ে বিবেচনা করতে হবে। নির্দেশের কপি আইনমন্ত্রীর কাছে পাঠাতে হবে। এরপর আইনজীবী সহিদুর রহমানকে মামলা থেকে বাদ দিয়ে দেয় হাইকোর্ট।