
সন্দেশখালি: ক্ষোভ ফুঁসছে সন্দেশখালি। একদিকে যখন রাজ্য বাজেটে বাংলার মহিলাদের জন্য বড় ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তখন একেবারে রণংদেহি মূর্তিতে সন্দেশখালির মহিলারা। স্পষ্টই তাঁরা জানাচ্ছেন, লক্ষ্মীরা ভাণ্ডারের টাকা তাঁরা চান না। গর্জে উঠলেন মহিলারা। হাতে তাঁদের বাঁশ, লাঠি, ঝাঁটা। কিন্তু কেন?
বুধবার থেকেই তেঁতে ছিল সন্দেশখালির পরিস্থিতি। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রীতিমতো গর্জে ওঠে সন্দেশখালি। ঝাঁটা, লাঠি, বাঁশ -যে যেরকম পেয়েছেন, তা হাতে নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়েছেন গ্রামের হাজার হাজার মহিলা। পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিস্তর ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তাঁরা।
তাঁদের একটা বক্তব্য, কেবল শেখ শাহজাহান নয়, উত্তম সর্দার, শিবু হাজরা-সহ একাধিক ‘গুন্ডারা’ ১৩ বছর ধরে তাঁদের ওপর অত্যাচার চালিয়েছে। বাড়ি থেকে মহিলাদের মধ্য রাতে তুলে নিয়ে যাওয়া, জমি দখল, বাড়ির বাচ্চাদের হাতে বন্দুক তুলে দেওয়া-সহ বিস্ফোরক অভিযোগ তুলছেন গ্রামের মহিলারা। সঙ্গে এও বলছেন, “এতদিন ধরে পুলিশ প্রশাসন চুপ ছিল, এখন তাঁরা কী করছেন!”
কলকাতা বিধানসভা থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরত্ব। বিধানসভায় আজ রাজ্য বাজেট পেশ। সন্দেশখালিতে পড়ে সেই আঁচ। বিধানসভা দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, এবার থেকে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের বরাদ্দ বাড়িয়ে দ্বিগুণ করা হয়েছে। অর্থাৎ ৫০০ নয়, এবার থেকে ১০০০ টাকা করে পাবেন উপভোক্তারা। খুব স্বভবতই লোকসভা নির্বাচনের আগে এটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাস্টারস্ট্রোক! কিন্তু এ খবর শোনা মাত্রই রীতিমতো তেড়েফুঁড়ে ওঠেন সন্দেশখালির হাজার হাজার মহিলারা।
এক মহিলা বললেন, “আমাদের দিয়েছিল আমরা তখন নিয়েছি। আমরা এখন আর কোনও অশান্তি চাই না। শান্তি চাই। এটাই শুধু চাই। আমরা জব কার্ডে অনেক কাজ করেছি। কিন্তু এখন আর টাকা চাই না। এই অত্যাচার আর চাই না।”
আরেক মহিলা বলেন, “১০০০ টাকা দিয়ে আমাদের জনরোষ তৈরি করেছে। এটা আমরা চাই না। এই অত্যাচার আমরা চাই না। এই বাংলা আমরা চাই না। আমাদের শান্ত পরিবেশ দরকার। দিদির কাছে হাত জোড় করে বলছি। সন্দেশখালির আগের পরিবেশ আমাদের ফিরিয়ে দিন।”
আরেক মহিলা বলেন, “লক্ষ্মীর ভাণ্ডার আমরা চাই না। আমাদের টাকা প্রয়োজন। কিন্তু টাকা দিয়ে সব হয় না। শান্তিটাই আসল।” গর্জে উঠলেন সন্দেশখালি।