
কলকাতা: শিশু থেকে বৃদ্ধ, প্রত্যেকের পানীয়ের দামেই মূল্যবৃদ্ধির আঁচ। নতুন বছরের আগেই বাড়ছে মদের দাম। ‘বিপ্লব’ দেখা গেল দুধের দামেও। রাজ্য়ের আবগারি দফতর সূত্রে খবর, ইংরেজি নববর্ষের আগেই অর্থাৎ ১লা ডিসেম্বর ২০২৫ থেকে নতুন অতিরিক্ত আবগারি শুল্ক কার্যকর হতে চলেছে। অবশ্য, এই নতুন শুল্ক নীতিতে বিয়ারকে রেহাই দেবে রাজ্য সরকার। সুতরাং ৩০ নভেম্বর অবধি ‘ডেডলাইন’। এর আগেই পুরনো স্টক খালি করে ফেলতে হবে রাজ্যের সমস্ত উৎপাদক, ডিস্ট্রিবিউটর ও হোলসেল বিক্রেতাদের।
যাঁরা খালি করতে পারবেন না? প্রশাসন সূত্রে খবর, যে সকল স্টক নির্দিষ্ট সময়ের মধ্য়ে বিক্রি করা সম্ভব হবে না। তার উপরেও প্রযোজ্য হবে নতুন দাম। লাগানো হবে নতুন স্টিকার। কিন্তু হঠাৎ করে এই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত কেন? বর্তমানে রাজ্য সরকার অনেকাংশেই নির্ভর করে রয়েছে আবগারি রাজস্বের উপর। সামনেই নির্বাচন। তার আগে বাড়তি রাজস্ব আদায় করতে পারলে আখেড়ে নতুন প্রকল্পের ঘোষণা করতেই সুবিধা হবে।
এই মদের দাম বাড়ার ঘটনাকে কেমন চোখে দেখছেন ব্যবসায়ীরা? একাংশ বলছেন, ‘মদের দাম তো শুধু এখন নয় আগেও বেড়েছে। কিন্তু রাজ্য় সরকারকে বুঝতে হবে রাজস্ব বৃদ্ধির জন্য গ্রাহকরাই সমস্য়ায় পড়বেন। আগে বিদেশি মদ অনেকটাই বিক্রি হত, কিন্তু দাম বাড়ার কারণে তা এখন অনেকটাই পড়ে গিয়েছে পরিবর্তে গ্রাহকরা ভারতে তৈরি বিদেশি মদের দিকে ঝোঁক বাড়িছেন। এর মধ্যেই আবার দাম বাড়লে একটা চাপ তো তৈরিহ হবেই।’
দুধের দামে পরিবর্তন আগেই লক্ষ্য করা গিয়েছিল। কখনও ১ টাকা, কখনও বা ২ টাকা। কিন্তু এবার এক ধাক্কায় বাড়ল ৪ টাকা। যা আগে ছিল মাদার ডেয়ারি, তা এখন নাম পরিবর্তন করে হয়েছে বাংলার ডেয়ারি। সেই সংস্থারই সর্বোচ্চ গুণমানের দুধের ব্র্যান্ড ‘সুপ্রিম’-এর আগে দাম ছিল ৫৬ টাকা। কিন্তু নভেম্বর থেকে তা বেড়ে হয়েছে ৬০ টাকা। এছাড়াও, ‘স্বাস্থ্যসাথী ডবল টোন’ দুধের দাম ছিল ৪৬ টাকা। এখন হয়েছে ৪৮ টাকা লিটার।
এই মূল্য়বৃদ্ধির জেরে মধ্য়বিত্ত থেকে নিম্ন মধ্যবিত্ত। বিশেষ করে শহরের মানুষদের জীবনে একটা বড় প্রভাব পড়বে বলেই মনে করছেন একাংশ। শুধু তা-ই নয়, যেখানে বেসরকারি সরকারি সংস্থার দুধের দাম বৃদ্ধি কিছুটা হলেও থেকেছে সীমিত। সেখানে সরকারি সংস্থার দুধের দাম ছাপিয়ে গিয়েছে সমস্ত নজির। কিন্তু এই দাম বাড়ার ঘটনাকে সাধারণ কীভাবে দেখছে? কেউ কেউ বলছেন, ‘এটা সত্যিই অভাবনীয়। মাসে ৩০ দিনই দুধের প্রয়োজন হয়। তার মধ্যেই এমন দাম বৃদ্ধি। মাস শেষে খরচটা কোথায় পৌঁছবে ভেবেই ভয় করছে।’