কলকাতা: মদন মিত্রকে সতর্ক করল তৃণমূলের শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি। ‘সমস্যা থাকলে দলের ভিতরে বলুন’, মদন মিত্রকে ফোন করে বললেন দলের মহাসচিব তথা তথা তৃণমূলের শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তৃণমূল সূত্রে এমনটাই খবর মিলেছে। কামারহাটির বিধায়ককে নির্দেশ দেওয়া, কিছু বলার থাকলে তিনি যেন দলের ভিতরেই তা বলেন। প্রকাশ্যে এভাবে মুখ খোলা যাবে না। তাতে দলের শৃঙ্খলাভঙ্গ হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, কখনও সাংবাদিক বৈঠক, কখনও ফেসবুকে, কখনও প্রকাশ্য সভায় এমন বেশ কিছু মন্তব্য ইতিমধ্যেই করেছেন মদন মিত্র, যাতে দলের শৃঙ্খলাভঙ্গ হয়। তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফেই এই অভিযোগ উঠেছে। তাতে সতর্ক করেছে শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি।
এই প্রতিবেদনটি যখন প্রকাশিত হচ্ছে, তার ঠিক কিছুক্ষণ আগেই মদন মিত্রকে ফোন করেছিলেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়। সূত্র মারফত তেমনটাই খবর মিলছে। জানা যাচ্ছে তিনি পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে এই মর্মে সতর্ক করেছেন যে, কোনওভাবেই সামাজিক মাধ্যমের দলের সম্পর্কে কোনও বিবৃতি দেওয়া যাবে না। কিছু বলার থাকতেই পারে। কিন্তু তা নিয়ে আলোচনা কেবল দলের অন্দরেই করতে হবে।
যদিও এই নিয়ে মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তিনি এই বিষয়টিকে ‘সতর্ক করা’ বলছেন না। তিনি বলেছেন, “আমি কথা বলেছি ওর সঙ্গে। যা বলার ওকে বুঝিয়ে বলেছি।” সার্বিকভাবে মদন মিত্রের বিস্ফোরক এক বিবৃতিতে ইতিমধ্যেই অস্বস্তিতে দল। আর সেই অস্বত্বিতে ইতি টানতেই উদ্যোগী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
TV9 বাংলাকে একান্তভাবে মদন মিত্র বলেছেন, “মেরা নাম হি কাফি হ্যায়, যাহা ম্যায় খাঁড়া হো যাতা হু, ওয়াহা সে লাইন শুরু হো যাতা হ্যায়”
শনিবার থেকে বঙ্গ রাজনীতি তোলপাড় করেছে মদন মিত্রের সাড়ে ২২ মিনিটের ফেসবুক লাইভ। একের পর এক বোমা ফাটিয়েছেন কামারহাটির বিধায়ক। ফেসবুক লাইভে মদন মিত্র বলেছিলেন, “কিছু চুটকি নেতা হঠাৎ আমি দেখছি বলছে, ‘এই জানিস আমি কে’ বলে নাচানাচি করছেন। মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন…আমি বলছি মহাসচিব মহাশয়, আপনি বলছেন আপনি কেবল পার্থ চট্টোপাধ্যায় নন, মহাসচিবও…শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির সভাপতি, আপনি বলুন, কোথায় কখন শৃঙ্খলা রক্ষা করতে হবে, কতটুকু করতে হবে। এটা তো অস্বীকার করার জায়গা নেই, অভিষেকের অফিসে গেলে অভিষেককে পাওয়া যায় না। অফিসের তলায় যাঁরা দায়িত্বে থাকেন তাঁদের পাওয়া যায়।”
রবিবারও মদন মিত্র বলেছেন, “পার্টি বার বার বলছে আইনশৃঙ্খলা, শৃঙ্খলা রক্ষা। কিন্তু পার্থ তো খুব ব্যস্ত! তাঁর এত ডিপার্টমেন্ট। তারপর মন্ত্রিসভা! পারছে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন ভারতবর্ষের বিকল্প মুখ। আর অভিষেক ভারতবর্ষের নব যৌবনের দূত। তা হলে আমরা কোথায় যাব? আমাদের বাড়িতে লোক আসলে জিজ্ঞাসা করে ওয়াশরুমটা কোন দিকে? আমরা দেখিয়ে ওদিকে। তেমনি নিয়মরক্ষা কোনদিকে বলে দিলে, সেদিকে যেতে পারি। আমারও যদি কিছু মনে হয় নিয়মরক্ষায় জানাব। পার্টি যদি মনে করে বেআইনি আমাকে চিঠি দেবে, আমি উত্তর দেব।”
যদিও এ প্রসঙ্গে এর আগেও বিশেষ কোনও মন্তব্য করতে চাননি দলের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ‘দলের বিষয়, এটি দলকে বুঝে নিতে দিন’ বলে বিষয়টি সাংবাদিকদের সামনে এড়িয়ে গিয়েছেন তিনি।