
বোলপুর: আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি আমাদের পাড়া আমাদের সমাধানে পুলিশকে সক্রিয় হতে হবে। বোলপুরের প্রশাসনিক সভায় গিয়ে এ কথাই বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। কী কী কাজ শেষ করতে হবে, সেই বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ খুললেন পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ নিয়ে।
ডিভিসি-কে বার্তা দিয়ে মমতা বলেন, “জল যেভাবে ডিভিসি ছাড়ছে, জেলাগুলিকে ডুবিয়ে দিচ্ছে। ডিভিসি’র আজ ২০ বছর ড্রেজিং হয়নি। তাহলে ৪ লক্ষ কিউসেক ওয়াটার জল বেশি ধরতে পারত। যাতে ঝাড়খণ্ড না ডোবে তাড়াতাড়ি ছেড়ে দিচ্ছে বাংলায়। এবার ড্রেজিং না করলে ওদের বাঁধের সামনে বাঁধ তৈরি করে দেব! যাতে ওদের জলে ওরাই ডোবে। এটাই হবে আমাদের পরবর্তী প্ল্যানিং! গায়ে আঘাত না লাগে ততক্ষণ বুঝতে পারে না কেউ।”
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এখানে এখনও যেগুলো পাচার হয়, আমি মনে করি অন্য রাজনৈতিক দল যুক্ত আছে। প্রশাসনের অনেকে যুক্ত আছে। এই কাজটা দয়া করে কেউ করবেন না। বারবার বলা সত্ত্বেও অ্যাকশন না হলে, অনেক নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়েছে। দোষ দেওয়া হয় শাসক দলকে। যারা করে খাচ্ছে, তাদের ভয় পাচ্ছেন। তাদের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে ৫০-৫০ অঙ্ক কষছেন।”
পুলিশ প্রশাসনকে বার্তা দিয়ে মমতা বলেন, “এই জেলায় সাতদিনের মধ্যে দুই কর্মী খুন হয়েছেন। থানার আইসি-র দায়িত্ব ছিল খবর রাখা। ডিএম, এসপি-দের এমন কিছু কথা বলা উচিত নয়, যাতে মানুষ ব্যঙ্গ করে।
আধিকারিকদের উদ্দেশে মমতা বলেন, “ভোটার লিস্টটা দেখবেন, মানুষকে যাতে হেনস্থা করা না হয়। কোনও নির্দেশ এলে মুখ্যসচিবকে জানাবেন। আমাদের না জানিয়ে হুটপাট সিদ্ধান্ত নিয়ে নিচ্ছেন। কখনও এই জিনিস হয়নি। ভয় দেখালেই ভয় পাবেন! তাহলে ঘরে বসে থাকুন।”
‘একতারার সুরে’ নামে একটি রিলিজিয়াস সার্কিট তৈরি হচ্ছে। সেই সার্কিটের মধ্যে পড়ছে, রাঙাবিতান বোলপুর থেকে শুরু করে হেতমপুর রাজবাড়ি, বক্রেশ্বব, নন্দীকেশ্বরী, কঙ্কালিতলা সতীপীঠ। ‘মাদলের তালে’ নামে আরও একটি সার্কিট তৈরি হচ্ছে। রাঙাবিতান থেকে শুরু করে তারাপীঠ, নলাটেশ্বরী, আকালিপুর, কল্যাণেশ্বর থাকছে সেই সার্কিটে।
মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন, দেউচা পচামিতে ৩৫০০০ কোটি বিনিয়োগ হচ্ছে, ১ লক্ষ কর্মসংস্থান হবে। এছাড়াও আশপাশে অনেক কোল মাইন হচ্ছে। কেষ্ট বারবার আহমেদপুরের কথা বলেছিল। সেখানে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক করছি। সেখানেও অনেক কর্মসংস্থান হবে।
ব্যাসল্ট পাথর মাইনিং-এর কাজ শুরু হয়েছে। ১২ একর জায়গায় সেই কাজ চলছে। ৩১৪ একর জমির জন্য ই টেন্ডার ডাকা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “পশ্চিমবঙ্গ থেকে এক হাজার লোককে ট্রেনিংয়ের জন্য দিল্লি নিয়ে গিয়েছে। আমি জানতামই না। অনেক সময় ডিএম খেয়াল রাখছেন না। ডিএম’দের চোখ কান খুলে রাখতে হবে। আপনারা তো দেখছেন যাঁরা বাংলা যারা ভাষায় কথা বলছে, তাদের উপরে অত্যাচার হচ্ছে।”
ভিনরাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ আরও একবার সামনে আনলেন মমতা। অবিলম্বে পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরাতে স্কিম তৈরি করার কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়।
বোলপুরের সভায় তিনি বলেন, “আমাদের ২২ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক আছে। শামিরুল, মলয় মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠক করে ওদের ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা কর। শিশুদের পর্যন্ত ছাড়ছে না। সংখ্যালঘুরাও আছে। একটা স্কিম তৈরি কর। যারা আসতে চায়, তাদের ফিরিয়ে আনো। যাদের থাকার জায়গা নেই, তাদের ক্যাম্প করে দেব। ইমিডিয়েট জব কার্ড হোল্ডারে ঢোকাব। স্বাস্থ্যসাথী তো আছেই।”