কলকাতা: ভবানীপুরে রেকর্ড ভোটে জিতেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জঙ্গিপুর, সামশেরগঞ্জেও এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল। কিন্তু এখনও চার কেন্দ্রের ভোট বাকি। চলতি মাসের শেষেই রয়েছে রাজ্যের চার কেন্দ্রের উপনির্বাচনে। খড়দহ, দিনহাটা, শান্তিপুর আর গোসাবা। আজ ভবানীপুরের জয়ের পরেও সেই চিন্তা রয়ে গিয়েছে মমতার মাথায়। কর্মী-সমর্থকদের বাধভাঙা উচ্ছাসের মধ্যেই চার কেন্দ্রের উপনির্বাচনে দলের প্রার্থী ঘোষণা করে দিল তৃণমূল নেতৃত্ব।
খড়দহ উপনির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। এর আগে ভবানীপুর কেন্দ্র থেকে দাঁড়িয়েছিলেন শোভনদেব। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিজেপির তারকা প্রার্থী রুদ্রনীল ঘোষ। তারকা-অভিনেতার ক্যারিশ্মা একেবারেই কাজ করেনি সেই বার। রুদ্রনীলকে ২৮ হাজারের বেশি ভোটে হারিয়েছিলেন তৃণমূলের দুঁদে রাজনীতিক শোভনদেব। কিন্তু জিতলে কী হবে! নেত্রী যে হেরেছিলেন! অগত্যা ভবানীপুরের আসন নেত্রীর জন্য ছেড়ে দিতে বাধ্য হন ‘অনুগত’ শোভনদেব।
এবার সেই ‘আনুগত্যের পুরস্কার’ পেলেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। ভবানীপুরের আসন ছেড়ে দিলেও দল তাঁকে আবার টিকিট দিয়েছে। খড়দহ বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী হচ্ছেন শোভনদেব। এছাড়া দিনহাটায় প্রার্থী হচ্ছেন উদয়ন গুহ। ফরওয়ার্ড ব্লক ছেড়ে তৃণমূলের পতাকা যেদিন থেকে ধরেছেন উদয়ন, সেদিন থেকেই উত্তরবঙ্গে বেশ সক্রিয় তিনি। এমনকী কলকাতার নেতৃত্বকে ‘খুশি’ রাখতে বিরোধীদের অবিরাম আক্রমণ শানিয়ে গিয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়াতেও বেশ সক্রিয় থেকেছেন বিরোধীদের বিরুদ্ধে। আজ সেই সক্রিয়তার পুরস্কার পেলেন তিনিও। দিনহাটা বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে মমতার পছন্দের প্রার্থী তিনিই।
এর পাশাপাশি, শান্তিপুর বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থীর নামও আজ ঘোষণা করে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখান থেকে দল প্রার্থী করছে ব্রজকিশোর গোস্বামীকে। গোসাবা কেন্দ্রে দল ভরসা রাখছে সুব্রত মণ্ডলের উপর।
গতকাল সকালে উপ নির্বাচনের প্রচারের প্রথম দিন ছিল খড়দহে। এ দিন দলীয় কার্যালয় উদ্বোধনে আসেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। সাংসদ (TMC MP) সৌগত রায় ছাড়াও এ দিন উপস্থিত ছিলেন এলাকার একাধিক তৃণমূলের নেতা-কর্মী। প্রত্যেকেই শোভনদেবকে স্বাগত জানাতে এগিয়ে আসেন। কে আগে স্বাগত জানাবে, এই নিয়ে সংঘর্ষের পরিস্থিতি তৈরি হয় দুই গোষ্ঠীর মধ্যে। প্রথমে বচসা, পরে হাতাহাতি। কর্মীদের থামানোর চেষ্টা করেন সৌগত রায়। যদিও তৃণমূল নেতাদের দাবি, কোনও সংঘর্ষ নয়, আদলে খড়দহের মানুষের উৎসাহের জন্যই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছে।
এক তৃণমূল কর্মী জানান, শোভনদেবকে দেখার জন্য এত ভিড় যে ভিতরে প্রবেশ করতেই পারছেন না অনেক তৃণমূলকর্মী। কর্মীদের দাবি, তৃণমূলের প্রথম নির্বাচিত বিধায়ক শোভনদেবকে পেয়েছে খড়দহের মানুষ। কাজল সিনহার মৃত্যুতে যে যন্ত্রণা পেয়েছে এখানকার মানুষ, তা কাটিয়ে উঠে শোভনদেবকে পেয়ে কিছুটা আশার আলো দেখছেন সবাই। তাই এ দিন উৎসাহী মানুষের ভিড় চোখে পড়ছে।