
কলকাতা: মেয়ো রোডের মঞ্চে হাত দিল জওয়ানরা। ফোর্ট উইলিয়াম থেকে দল বেঁধে এসে খুলতে শুরু করল মঞ্চ। যে মঞ্চ তৃণমূল ব্যবহার করেছিল ভাষা আন্দোলনের জন্য। এমনকি, এখনও প্রত্যেক শনি ও রবিবার সেই ভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ওখানেই নানা কর্মসূচি করে থাকে তৃণমূল। সেই আন্দোলন মঞ্চকে ধীরে ধীরে খুলে ফেলছে সেনা। ফলত স্বাভাবিক নিয়মেই যেন চটে গেল শাসক শিবির।
কোন যুক্তিতে এই মঞ্চ খোলার সিদ্ধান্ত নিল সেনা?
ফোর্ট উইলিয়াম সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মঞ্চের জন্য যে নির্ধারিত সময়ের অনুমতি পেয়েছিল শাসক শিবির, তা আপাতত সমাপ্ত হয়েছে। তারপর কেন এই মঞ্চ থাকবে, সেই প্রশ্নই তুলেছেন সেনা-জওয়ানরা। অবশ্য, প্রতি সপ্তাহের শনিবার-রবিবার এই মঞ্চ থেকে নানা কর্মসূচি করে থাকে শাসকদল। যার অনুমতি তাদের কাছে রয়েছে। কিন্তু সেনার যুক্তি, শনিবার ও রবিবার কর্মসূচির অনুমতি রয়েছে আর বাকি দিন? বাড়তি পাঁচ দিন কেন এই মঞ্চ রাখা হবে? প্রশ্ন তুলেছেন সেনা আধিকারিকরা। এদিন যখন জওয়ানরা মঞ্চের বাঁশ খুলছেন, সেই সময় ঘটনাস্থলেই উপস্থিত ছিলেন ফোর্ট উইলিয়ামের উচ্চ পদস্থ কর্তারা। এমনকি, তাদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায় ডিসি সাউথ প্রিয়ব্রত রায়কে।
এই প্রসঙ্গে সেনা তরফ একটি বিবৃতিও প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে তারা জানিয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে গান্ধী মূর্তির পাদদেশের তৃণমূলের মঞ্চের জন্য দু’দিনের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময় পেরিয়ে টানা এক মাস ধরে ওই মঞ্চ ওখানেই পড়ে রয়েছে। অনুষ্ঠান আয়োজকদের সেই নিয়ে সতর্কও করা হয়েছে। কিন্তু তারপরেও ওই মঞ্চ সরানো হয়নি।
তৃণমূলের যুক্তি
সেনার এই আচরণকে ‘বিজেপির প্রতিহিংসার’ রাজনীতি বলেই দাগাচ্ছে শাসকদল। এদিন তৃণমূল নেতা তথা কাউন্সিলর বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বিজেপি বাঙালি বিদ্বেষী। ওরা কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ব্যবহার করে ভাষা আন্দোলনের মঞ্চ খুলে ফেলছে। আমরা অনুমতি নিয়েছে। ২০ হাজার ৫০০ টাকা সিকিউরিটি মানি জমা দিয়েছি। আমরা চেয়ার সরিয়ে দিয়েছি, ফ্যান সরিয়েছি, কোনও কাপড় নেই। শুধু বাঁশের কাঠামোটা পড়ে। সেটাও সরিয়ে দিতাম। কিন্তু লোক আসতে দিক। গতকালই অনুষ্ঠান শেষ হল। আমি আমার ৪৫ বছরের রাজনৈতিক জীবনে কোনও দিনও দেখিনি যে একটা রাজনৈতিক দলের মঞ্চ সেনা এসে খুলছে।”
মমতার আগমন
পরিস্থিতি যখন সরগরম, সেনাকে থামার আর্জি করে কাজ হচ্ছে না। সোমের দুপুর তখনই মেয়োর রোডের ওই মঞ্চের কাছে চলে আসেন মুখ্যমন্ত্রী। ঘটনাস্থল খতিয়ে দেখেন তিনি। তারপর শুরু করেন ভাষণ।