
কলকাতা: দিঘা থেকে ফিরেই মেছুয়া বাজারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে দাঁড়িয়েই বড়বাজারের ব্যবসায়ীদের দেন কড়া বার্তা। বড়বাজারে গত কয়েক বছরে একের পর এক বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু তারপরও যে হোটেল মালিক-ব্যবসায়ীদের মধ্যে বিন্দুমাত্র সচেতনতা, হুঁশ ফেরেনি, তা এদিন নিজেই সামনে আনলেন মুখ্যমন্ত্রী।
‘জতুগৃহ’ বড়বাজারের মেছুয়া বাজারে দাঁড়িয়ে হোটেলের একাধিক বেনিয়মের কথা উল্লেখ করেন। আর সেই সূত্রেই নাম নেন পার্কস্ট্রিটের ম্যাগমা বিল্ডিংয়ের। সেখানে একাধিক নিয়ম ভাঙা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন, সারপ্রাইজ ভিজিটে যাবেনও বলেন। আর বলা মাত্রই কাজ! মেছুয়া বাজার থেকে সটান ম্যাগমা বিল্ডিংয়ে মমতা। আর সেখানে গিয়ে রীতিমতো চক্ষু চড়কগাছ। ঘিঞ্জি এলাকায় সেই বিল্ডিং, আর তার বাইরে সারি দিয়ে মজুত গ্যাস সিলিন্ডার। এক সঙ্গে গাদাগাদি করে ২৪টা গ্যাস সিলিন্ডার মজুত করা রয়েছে সেখানে। তা দেখে মমতা বললেন, “আমার কাছে পাক্কা খবর ছিল বলে আমি দেখে গেলাম। এবার আমি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে গেলাম। এবার কলকাতা পুলিশ কমিশনার, মেয়র, দমকলমন্ত্রী মিটিংয়ে বসবেন। ওদের ডাকা হবে।”
এত গ্যাস সিলিন্ডার হোটেলের সামনে মজুত! আগুন লাগার ঘটনা ঘটলে, ভয়াবহ বিস্ফোরণ হবে। আর ওই ঘিঞ্জি এলাকায় বিস্ফোরণ হলে, কত মানুষের মৃত্যু হতে পারে, তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু তাঁর কাছে খবর এল কীভাবে? কেনই বা খবর পেলেন না প্রশাসনের কেউ? মুখ্যমন্ত্রী নিজেই দিলেন সেই জবাব।
মমতা বলেন, ” আমি কোনও একজনের থেকে শুনেছিলাম। কিছুদিন আগে তিনি এই রেস্টুরেন্টে এসেছিলেন। আমাকে গিয়ে বলেছিলেন, ইমিডিয়েট দেখো, আমরা চার-পাঁচ জনের লোক আছি, একটা কিছু হলে, আমরা নামতে পারব না, একটা ছোট্ট সিঁড়ি। আর দুটো লিফট রয়েছে। লিফটে লোকে ওপরে যাতায়াত করে। তাঁরা তো জানেন না। আগুন লাগলে তো আর লিফটে নামতে পারবেন না। আর তারওপর যদি এত গ্যাস সিলিন্ডার ফাটে, তাহলে তো ৫০ হাজার লোক মারা যাবে।”
বৈঠকে বসে দমকল, পৌরসভা, কলকাতা পুলিশ। পরে ৬টি রেস্তোরাঁ বন্ধের নির্দেশ দেয় প্রশাসন।