কলকাতা: নবান্নে সর্বদল বৈঠকে মঙ্গলবার অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার বক্তব্য শুনে বেশ খুশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপিকে কখনও নাম করে, কখনও নাম না করে খোঁচা দিল এই ‘সনাতনী জাতীয়তবাদী’ সংগঠন। শুধু তাই নয়, যেভাবে তারা পয়লা বৈশাখের কথা, বাংলার কৃষ্টি-ঐতিহ্য-সংস্কৃতির কথা তুলে ধরলেন, যেভাবে বাংলা ভাগের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন, তা দেখে বেশ সন্তুষ্ট মুখ্যমন্ত্রী। অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার সভাপতি চন্দ্রচূড় গোস্বামীর বক্তব্য শেষ হতেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ‘হিন্দু মহাসভা সম্পর্কে আমাদের অনেকের অন্যরকম ধারণা ছিল। হতে পারে, আপনাদের নাম অপব্যবহার কেউ কেউ আপনাদের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলে একটি রাজনৈতিক দলকে।’
একইসঙ্গে অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার সভাপতিকে মুখ্যমন্ত্রী এও বললেন যাতে আগামী দিনে তাঁদের সংগঠন বাংলার উন্নয়নে, বাংলাকে পথ দেখাতে, বাংলার সংস্কৃতি-ঐতিহ্য-কৃষ্টিকে ধরে রাখতে রাজ্য সরকারের পাশে থাকে এবং মানুষের আরও কাছে পৌঁছে যায়। মমতা বললেন, ‘যে ভাষায় আপনারা কথা বললেন, তাতে আমাদের ভুলটা অনেকটা কাটল। আমরা আশা করি, আমাদের যে কোনও অনুষ্ঠানে আপনাদের পাব।’
নবান্নের সর্বদল বৈঠকে অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার সঙ্গে এদিন মুখ্যমন্ত্রীর কথাবার্তার প্রসঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল বিজেপির রাজ্য মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের সঙ্গেও। তিনি অবশ্য এসবে বাড়তি গুরুত্ব দিতে চান না। বলছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর এসব বক্তব্য নিয়ে আমাদের কোনও উৎসাহ নেই।’ একইসঙ্গে বিজেপি মুখপাত্র আরও বললেন, ‘কে হিন্দু মহাসভার লেবেল লাগিয়ে ঢুকে পড়েছে, নিজের দলের ইতিহাসটাই জানেন না। আর তা নিয়ে আবার বক্তব্য রাখছেন মুখ্যমন্ত্রী।’
অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার সঙ্গে মমতার এদিনের কথোপকথন প্রসঙ্গে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছিল। সুজনবাবু বলছেন, ‘আমরা আগেও বলেছি আরএসএস-এর বহু সংগঠন ঘুরে বেড়াচ্ছে। এটাও তাই। এটা কার্পেটের তলায় লুকানো ছিল, মাঝে মধ্যে বেরিয়ে পড়ে, এবারও বেরিয়ে পড়েছে। আরএসএস-এর নির্দেশেই তিনি এসব বাহিনীকে নিয়ে এসেছেন। বোঝা গেল, উনি অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার সাহায্য চেয়েছেন এবং তারাও সম্মত হয়েছে। এটাই তো আরএসএস-এর খেলা।’ এই নিয়ে কংগ্রেস নেতা ঋজু ঘোষাল বলেন, “বলার কিছু নেই। এসব কথা বলে তো বিজেপিকে বার্তা দিতে হবেই। সেই বার্তাই পাঠাচ্ছেন মমতা।”