কলকাতা: তাঁর আঁকা ছবি নিয়ে বিতর্ক যতই থাকুক, আঁকতে তিনি বরাবরই ভালবাসেন। ব্যস্ততার জন্য অনেক সময় হয়ে ওঠে না ঠিকই, কিন্তু সুযোগ পেলেই ক্যানভাসে রং ফেলে তুলি দিয়ে দু’টো টান দিতে পিছপা হন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একুশের নির্বাচনে প্রচার এর চূড়ান্ত ব্যস্ততার মধ্যেই একটা গোটা দিন ফাঁকা পেয়ে যাওয়ায় নিজের সেই শিল্পীসত্তাকে জাগিয়ে তুললেন তৃণমূল নেত্রী। নির্বাচন কমিশনের নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে গান্ধীমূর্তির পাদদেশের ধরনায় বসে রং তুলি হাতে ক্যানভাসে একসঙ্গে অনেকগুলি ছবি এঁকে ফেললেন মমতা। তারপরই মমতার আঁকা ছবিগুলি আলোচ্য বস্তু হয়ে উঠেছে নেটিজেনদের।
ঠিক কিসের ছবি এঁকেছেন মমতা এই নিয়ে যখন নানা প্রশ্ন ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিক এবং তৃণমূল সমর্থকদের মনে উঁকিঝুঁকি দিচ্ছিল, তখন নিজেই ছবিগুলি তুলে দেখান মমতা। সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরায় যেটুকু ধরা পড়েছে, তাতে ছবিগুলি দেখে মনে হচ্ছে কোনও ফুলদানি বা বিরল প্রজাতির ফুলের ছবি আঁকার চেষ্টা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ছবি আঁকা শেষ হলে বেশ কিছুক্ষণ নিজের হুইল চেয়ারের ওপর বসে ছিলেন তিনি। পূর্বপরিকল্পনা মত এ দিন ১২ টার আগেই তিনি গান্ধী মূর্তি পাদদেশে পৌঁছেছিলেন ধরনা দিতে। কিন্তু, সেনাবাহিনী ধরনার অনুমতি না দেওয়ায় মেয়ো রোডে সংলগ্ন এলাকায় বসেই ঘণ্টাতিনেক সময় মমতা কাটান। এরপর কালীঘাটে ফিরে যান।
নিজের রাজনৈতিক ভাষণ নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করার অভিযোগে সোমবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্বাচনী প্রচারের ওপর ২৪ ঘণ্টার নিষেধাজ্ঞা জারি করে নির্বাচন কমিশন। তারপর থেকে সরাসরি তিনি কোনও মন্তব্য করেননি। তবে কমিশনের এই সিদ্ধান্তকে ‘অগণতান্ত্রিক’ এবং ‘অসাংবিধানিক’ বলে ধর্নায় বসবেন বলে টুইট করে জানিয়েছিলেন। সেইমতো মঙ্গলবার মেয়ো রোড সংলগ্ন এলাকায় ঘণ্টাতিনেক বসে থাকেন মমতা।
আরও পড়ুন: আবারও লকডাউন না নাইট কার্ফু? ঠিক কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হবে অর্থনীতি? নবান্নে আজ জরুরি বৈঠকে মুখ্যসচিব
তৃণমূল সূত্রের খবর, মঙ্গলবার রাত ৮ টায় নির্বাচন কমিশনের নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ ফুরোলেই নির্বাচনী প্রচারের ঝাঁপিয়ে পড়বেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথমে সন্ধ্যা সোওয়া ৮ টায় বারাসাতে একটি নির্বাচনী সভা করবেন তিনি এরপর রাত ৯ টায় বিধাননগর এলাকায় আরেকটি সভায় যোগ দেবেন। মঙ্গলবার মোট চারটি জনসভা করার কথা ছিল মমতার। কিন্তু, কমিশনের নিষেধাজ্ঞার কারণে মাত্র দু’টি জনসভা করতে পারবেন তিনি। যেহেতু ভোটের ৭২ ঘণ্টা আগে কমিশন প্রচার বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে, সেই কারণে আগামী ১৭ এপ্রিল পঞ্চম দফার নির্বাচনের আগে প্রচার করার জন্য কেবল দু’ঘণ্টা সময় পাবেন মমতা। সেই দু’ঘন্টার মধ্যেই জনসভা করে ফেলতে চাইছেন তিনি।
আরও পড়ুন: কমিশনের ‘শাস্তি’র মুখে রাহুল সিনহা, ৪৮ ঘণ্টা প্রচারে নিষেধাজ্ঞা