কলকাতা: সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। আর বছর পেরোলেই লোকসভা নির্বাচন। সে কারণেই হয়ত আর কোনও ঝুঁকি না নিয়ে দলের রাশ কার্যত নিজের হাতে রাখতে চাইছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জেলাস্তরের সংগঠন নিজে হাতে সামলাবেন তো বটেই, সেই সঙ্গে পঞ্চায়েতের টিকিট নিয়েও শেষ কথা বলবেন তিনি। সূত্রের খবর, শুক্রবার কালীঘাটের বৈঠকে দলের নেতাদের এ বিষয়টা স্পষ্ট করে দিয়েছেন নেত্রী। সদ্য উপ নির্বাচনে ধাক্কা খেয়েছে তৃণমূল। কেউ বলছেন, দুর্নীতিই বড় দায়। আবার কেউ বলছেন, সংখ্যালঘু অসন্তোষের কথা। কারণ যাই হোক না কেন সাগরদিঘির পুনরাবৃত্তি যে মমতা পঞ্চায়েত নির্বাচনে দেখতে চান না, এ কথা স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন। দলের বিধায়ক, সাংসদ থেকে শুরু করে প্রথম সারির প্রায় সব নেতাই উপস্থিত ছিলেন শুক্রবারের বৈঠকে।
মমতা যে বার্তা দলীয় স্তরে দিয়েছেন, তার মোদ্দা বিষয় হল এবার প্রার্থী বাছাই হবে কালীঘাট থেকেই। আতস কাচের নীচে ফেলে তবেই দেওয়া হবে টিকিট। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, সাম্প্রতিক অভিযোগ থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার আর কোনও কালির দাগ চান না মমতা। স্বচ্ছতা সহ বিভিন্ন মাপকাঠিতে প্রার্থীদের বিচার নিজেই করতে চান তিনি। ঠিক যেমন বিধানসভা ভোটের প্রচারে মমতা বলতেন, সব আসনে তিনিই প্রার্থী, পঞ্চায়েতেও সেই বার্তাই হাতিয়ার করতে পারে ঘাসফুল শিবির। এছাড়া রয়ে যাচ্ছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের প্রশ্ন। যা নিয়ে পুরভোটে কম শিক্ষা হয়নি। অনেক জায়গায় প্রার্থী বদল করতে হয়েছিল তালিকা প্রকাশের পরও। মনে করা হচ্ছে, এবার মমতা আর সেই বিষয়ে কোনও প্রশ্ন চান না।
পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে যে এই বৈঠকে আলোচনা হবে, এমনটা প্রত্যাশিতই ছিল। যদিও বৈঠক শেষে সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দাবি করেন, নির্বাচন নিয়ে তেমন কোনও আলোচনাই হয়নি। তবে সূত্রের খবর, বৈঠক চলাকালীন মমতা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন পঞ্চায়েতের প্রার্থী নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন তিনি। তাঁকে না জানিয়ে দলীয় স্তরে যেন কোনও প্রার্থী বাছাই না হয়, সেই বার্তাও নাকি দিয়েছেন তিনি।
আরও জানা গিয়েছে, মমতা নিজেই জেলাভিত্তিক সাংগঠনিক বৈঠক করবেন। প্রতি সপ্তাহে শুক্রবার করে নিজে জেলাগুলির নেতাদের ডেকে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন মমতা। দলকে আরও বেশি সময় দিতে চান তিনি।
একই সঙ্গে পঞ্চায়েতের আগে যুব সংগঠনগুলিকে আরও বেশি করে রাস্তায় নামতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আরও বেশি সক্রিয় হওয়ার কথা বলেছেন তিনি।