
কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় হাইকোর্টের নির্দেশে একের পর এক গ্রেফতারি দেখেছে বাংলা। কলকাতা হাইকোর্টের তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চে চলছিল একাধিক শিক্ষা সংক্রান্ত মামলা। তিনিই ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন। প্রাথমিক নিয়োগ মামলাতেই গ্রেফতার হয়েছিলেন বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য। আজ, বুধবার সেই মামলায় হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ হাইকোর্টের নির্দেশ খারিজ করে দিয়েছে। তারপর প্রতিক্রিয়া দিয়ে গিয়ে মানিক বললেন, ‘গাছেরও পাতা ঝরে, আবার নতুন কিশলয় আসে।’
বিচারপতি থাকাকালীন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে প্রাথমিক নিয়োগ মামলায় ৩২ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল হয়। যে সময় ওই নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ ওঠে, সেই সময় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যান ছিলেন মানিক ভট্টাচার্য। তাঁকে গ্রেফতার করে ইডি। পরে ওই মামলা চলাকালীন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এজলাসে ডেকে পাঠান মানিককে। প্রেসিডেন্সি জেল থেকে তড়িঘড়ি নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে।
এবার সেই মামলায় স্বস্তি পেয়েছেন ৩২,০০০ শিক্ষক-শিক্ষিকা। হাইকোর্ট তাদের চাকরি বহাল রেখেছে। বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর বেঞ্চ এই রায় দেওয়ার পর মানিক ভট্টাচার্য বলেন, “স্বচ্ছ প্রক্রিয়া ও দুর্নীতিমুক্ত প্রক্রিয়ার জয়। সব দিক থেকে কলঙ্কমুক্ত হল। স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়াই স্বীকৃতি পেল।”
মানিকের দাবি, “কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে বিবেচনাহীন, অমানবিক বলে মনে করেছে কোর্ট।” এই মামলায় যে দীর্ঘ সময় জেলে কাটাতে হয়েছে, সেই সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে মানিক বলেন, “লাঞ্ছনা, গঞ্জনা, কষ্ট সহ যা কিছু আমার জীবনে ঘটেছে, তা আসলে খুব সাংঘাতিক অবিবেচক ভিত্তিহীন মনগড়া অভিযোগের ভিত্তিতেই হয়েছিল। আজ সত্যের জয় হয়েছে।”
অনেকেরই মনে থাকবে, ২ লক্ষ এবং ৫ লক্ষ, মোট ৭ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছিল মানিককে। সেই জরিমানার টাকা দেননি মানিক। শুধু তাই নয়, দেশ বিদেশে মানিকের যত সম্পত্তি রয়েছে, তা বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশও দিয়েছিলেন তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।