
কলকাতা: কমিশনের নির্দেশ মানেনি রাজ্য সরকার। অফিসার সহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে এফআইআর করার যে সুপারিশ করা হয়েছিল, তা মানেনি রাজ্য। পাল্টা চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, অনুসন্ধান করা হবে, তারপর ব্যবস্থা। আর সেই চিঠি দেওয়ার পরই রাজ্যের মুখ্যসচিবের ডাক পড়েছিল দিল্লিতে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের দফতরে। কমিশনের ফুল বেঞ্চের সামনে এদিন হাজিরা দিতে হয় মনোজ পন্থকে। প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে চলে প্রশ্নোত্তর।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, এ দিনের ৪৫ মিনিটের বৈঠকে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সচিব। ফুল বেঞ্চ এদিন মুখ্যসচিবের কাছে জানতে চায়, রাজ্য সরকার এখনও পর্যন্ত কেন জাতীয় নির্বাচন কমিশনের সুপারিশ মেনে পাঁচ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর করেনি বা ব্যবস্থা নেয়নি?
সূত্রের খবর, এই প্রশ্নের উত্তরে মুখ্যসচিব জানান যে জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া আগের চিঠিতেই তিনি কারণগুলি উল্লেখ করেছেন। সূত্র মারফত পাওয়া খবর অনুযায়ী, একই সঙ্গে মুখ্যসচিব এদিন জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছেন যে প্রতিটি রাজ্যের প্রশাসনের নিজস্ব একটা স্ট্রাকচার বা গঠন আছে, কারও বিরুদ্ধে হঠাৎ করে ব্যবস্থা নিলে সেটা অন্যরকম প্রভাব ফেলতে পারত।
জানা যাচ্ছে, মনোজ পন্থ এদিন জানিয়েছেন যে, রাজ্যের তরফ থেকে ইতিমধ্যেই কমিটি করে এই পাঁচ জনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে এবং দুজনকে নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে সরানোর কথাও তুলে ধরেন তিনি। উল্লেখ্য, বারুইপুর পূর্বের ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার (ERO) দেবোত্তম দত্ত চৌধুরী, ওই কেন্দ্রের AERO তথাগত মণ্ডল, আর ময়নার ইআরও বিপ্লব সরকার এবং ওই কেন্দ্রের AERO সুদীপ্ত দাসের বিরুদ্ধে ওঠে অভিযোগ। এছাড়া, সুরজিৎ হালদার নামে এক ডেটা এন্ট্রি অপারেটরের বিরুদ্ধেও এফআইআরের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। রাজ্য শুধুমাত্র সুদীপ্ত দাস ও সুরজিৎ হালদারকে নির্বাচনী কাজ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে। কমিশনের সুপারিশ মতো তাঁদের সাসপেন্ড করা হয়নি, তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআরও করা হয়নি।
সূত্রের খবর, কমিশন এদিন পন্থের যুক্তি মানতে চাননি। মুখ্যসচিবকে বলে বলে দেওয়া হয়েছে যে, ‘আগে ব্যবস্থা নিন তারপর নিজেদের মতো করে অনুসন্ধান করুন।’ এদিকে, জাতীয় কমিশনের এই বক্তব্য মানতে মুখ্যসচিব রাজি হননি বলেই খবর। কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আগে অনুসন্ধান করার প্রয়োজনীয়তার কথা বারবার মুখ্যসচিব তুলে ধরেছেন বলে প্রশাসনিক সূত্রের খবর।
এখানেই শেষ নয়। জাতীয় নির্বাচন কমিশন চাপ দিলে মুখ্যসচিব জানিয়ে দিয়েছেন যে তিনি একা এই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। তিনি কেন্দ্র এবং রাজ্যের মধ্যে ‘মিডিয়াম’ হিসেবে কাজ করেন। চার জন কর্মচারী যাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে, তাঁরা বিভিন্ন দফতরের। সেই সব দফতরের সচিব বা আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেই তিনি সিদ্ধান্ত নিতে পারেন বলে জানিয়েছেন পন্থ।