
কলকাতা: স্টিফেন কোর্ট, আমরির স্মৃতি ফিরল মেছুয়া বাজারে। হোটেলে বিধ্বংসী আগুনে মৃত্যু হল কমপক্ষে ১৪ জনের। কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণের পর বের করা হয় একের পর এক মৃতদেহ। হোটেলে আগুন লাগার কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনার পর থেকে হোটেল মালিক পলাতক।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ মেছুয়ার ফলবাজার সংলগ্ন ওই হোটেলে আগুন লাগে। দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আতঙ্কে হুড়োহুড়ি শুরু হয়ে যায়। আতঙ্কে ছাদে উঠে যান অনেকে। প্রাণ বাঁচাতে ঝাঁপও দেন কেউ কেউ। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধারকাজ শুরু হয়। যাঁরা ছাদে উঠে গিয়েছিলেন, তাঁদের উদ্ধারে হাইট্রোলিক ল্যাডার আনা হয়। প্রায় ২৫ জনকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকারী দল হোটেলের প্রত্যেকটি রুমে গিয়েছেন। আর কেউ আটকে নেই বলে জানা গিয়েছে। দমকল জানিয়েছে, প্রায় ৮ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ১৩ জন শ্বাসরোধ হয়ে মারা গিয়েছেন। আর হোটেলে আগুন লাগার পর প্রাণ বাঁচাতে দুই হোটেলকর্মী ঝাঁপ দিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
হোটেলে আগুন লাগার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। আসেন মন্ত্রী শশী পাঁজাও। ফিরহাদ হাকিম জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর কাছ থেকে ঘটনার খোঁজ নিয়েছেন। ঘটনার তদন্ত হবে জানিয়ে মেয়র বলেন, “কীভাবে এই ঘটনা ঘটল, তা দমকল ও পুলিশ খতিয়ে দেখবে। এফআইআর হবে। ঘটনার তদন্ত হবে।”
ঘটনাস্থলে ফিরহাদ হাকিম ও শশী পাঁজা
কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মাও ঘটনাস্থলে যান। তিনি বলেন, হোটেল মালিক পলাতক। তাঁর খোঁজ শুরু হয়েছে। বুধবার সকালে ফরেনসিক দল ঘটনাস্থলে পৌঁছবে।
ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী তথা রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আটকাতে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার উপর কড়া নজরদারির জন্য রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
২০১০ সালের মার্চে স্টিফেন কোর্ট ভবনে বিধ্বংসী আগুনে ৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল। আবার ২০১১ সালের ৯ ডিসেম্বর ঢাকুরিয়ার আমরি হাসপাতালে বিধ্বংসী আগুনে ৯৩ জনের মৃত্যু হয়। সেই দুই বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডের স্মৃতি উসকে দিল মেছুয়া বাজারের হোটেলে এই অগ্নিকাণ্ড।