কলকাতা: বোমার আঘাতে আহত মন্ত্রীকে ভোরেই নিয়ে আসা হল কলকাতায়। বৃহস্পতিবার ভোর ৪টে ৪৫ নাগাদ মুর্শিদাবাদ থেকে এসএসকেএম হাসপাতালের ট্রমা কেয়ারে ভর্তি করানো হয় শ্রম দফতরের প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনকে। বোমায় গুরুতর জখম আরও ৫-৬ জনকে কলকাতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, এখন তিনি স্থিতিশীল। তবে এদিনই অস্ত্রোপচার করা হবে তাঁর। অন্যদিকে নিমতিতা স্টেশনে বিস্ফোরণের তদন্তভার নিল সিআইডি। ঘটনাস্থলে যাচ্ছে তারা। ইতিমধ্যেই বিস্ফোরক আইনে মামলা দায়ের করেছে রেল পুলিশ। সিআইডি সেই তদন্ত নিজেদের হাতে নিল। সকালেই মুর্শিদাবাদের পথে রওনা দেয় কলকাতার বিশেষ ফরেন্সিক টিম। ঘটনাস্থল খতিয়ে দেখার পাশাপাশি স্থানীয় থানার সঙ্গে কথা বলবে তারা।
বুধবার রাতে মুর্শিদাবাদ থেকে কলকাতার পথে রওনা দেন জাকির হোসেন। নিমতিতা স্টেশন থেকে তিস্তা তোর্সা ধরার কথা ছিল তাঁর। স্টেশন ধরে হেঁটে যাওয়ার সময়ই আগুনের ফুলকি আর ভয়ঙ্কর শব্দে কেঁপে ওঠে স্টেশনচত্বর। একেবারে মন্ত্রীর সামনেই বোমা বিস্ফোরণ হয়।
আরও পড়ুন: রাজ্যের মন্ত্রী জাকির হোসেনের উপর বোমাবাজি, গুরুতর আহত তিনি
জাকির হোসেন-সহ তাঁর বহু অনুগামী গুরুতর আহত হন। প্রাথমিকভাবে তাঁদের মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে ভোরের দিকে মন্ত্রীকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়। তার বাঁ পায়ের গোড়ালি থেকে হাঁটু পর্যন্ত প্রচুর বোমার স্প্লিন্টার রয়েছে। সেগুলিকেই এদিন অস্ত্রোপচার করে বের করা হবে।
এসএসকেএম সূত্রে খবর, জাকির হোসেনের হাতে এবং পায়ে বোমার আঘাতজনিত ক্ষত রয়েছে। অর্থোপেডিক সার্জন, প্লাস্টিক সার্জনের একটি দল অস্ত্রোপচার করবেন। যুক্ত হবেন কার্ডিওলজিস্টও। সকালে তাঁর এক্স-রে হয়েছে। রক্তচাপও খানিক কমেছে। দেহে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ হয়েছে কি না তাও পরীক্ষা করা হচ্ছে।
কার্ডিওলজি, অ্যানাস্থেসিয়ার চিকিৎসকেরা সবুজ সঙ্কেত দিলে মন্ত্রীকে অস্ত্রোপচারের টেবিলে নিয়ে যাওয়া হবে। ইনভেস্টিগেশনের রিপোর্ট দেখে চিকিৎসক দলে অন্য সুপার স্পেশালিটি বিভাগের চিকিৎসকদের যুক্ত করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে কি না সে বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
অন্যদিকে এদিন সকাল থেকেই নিমতিতা স্টেশনে বম্ব স্কোয়াডের সদস্যরা তদন্তে নেমেছে। যেহেতু এই স্টেশনে কোনও সিসিটিভি নেই। তাই বিভিন্ন মোবাইল ফুটেজ একত্রিত করে ঘটনার সময় কার কী পরিস্থিতি ছিল তা পর্যালোচনা করা হবে। সিআইডি আধিকারিক ও ফরেন্সিক টিম পৌঁছলে তাদের সঙ্গেও এই বিষয়ে সবরকম আলোচনা করা হবে। আপাতত যেখানে বোমা বিস্ফোরণ হয়, সেই এলাকা ঘিরে রাখা হয়েছে।
দুপুরের আগেই সেখানে পৌঁছে যাবে ফরেন্সিক টিম। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নমুনা সংগ্রহ করবে তারা। মূলত কী ধরনের বোমা ছিল তার খুঁটিনাটি যেমন জানার চেষ্টা করবে, একইসঙ্গে বোমাটি সেখানে আগে থেকে রাখা ছিল নাকি তা ছোড়া হয়েছিল সেদিকটাও দেখবে তারা।