কলকাতা: ২০২১ সালের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে, তিনি ছিলেন বিজেপির তারকা প্রচারক। ব্রিগেড ময়দানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভায় হাতে পদ্ম আঁকা পতাকা তুলে নিয়েছিলেন মিঠুন চক্রবর্তী। কিন্তু, ২০০ আসনের স্বপ্ন দেখে, বিজেপি মাত্র ৭৭-এ আটকে যাওয়ার পর থেকে আর সেই ভাবে তাঁকে সক্রিয় রাজনীতিতে দেখা যায়নি। সোমবার (৪ জুন) বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের ডাকে, রাজ্য বিজেপির সদর দফতরে আসলেন মিঠুন। আর এসেই দিলেন কামব্যাকের জোরালো বার্তা। বিজেপির অফিসে বসে সাংবাদিকদের মিঠুন বলেছেন, ‘সভাপতি বেশ কিছু কাজ দিয়েছেন, সেগুলো করবো।’ সুকান্ত মজুমদারও জানিয়েছেন, মিঠুন এখন থেকে বঙ্গ বিজেপির জন্য আরও বেশি সময় দেবেন। অর্থাৎ, বলা যেতেই পারে ‘মহাগুরু রিটার্নস’।
এদিন সন্ধ্যায় বিজেপির রাজ্য দফতরে এসে পৌঁছোন মিঠুন। স্বাভাবিকভাবেই তাঁকে ঘিরে বিজেপি নেতা-কর্মীদের মধ্য়ে ব্যাপক উৎসাহ-উন্মাদনা দেখা যায়। ‘মহাগুরু’কে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করা হয়। এরপর, সুকান্ত মজুমদার, রাহুল সিনহা,রুদ্রনীল সেন ঘোষের মতো রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেন মিঠুন। তবে, সেই বৈঠকে ঠিক কী কথা হয়েছে, স্পষ্ট করে বলতে চাননি এই টলি-বলি তারকা। শুধু বলেছেন, ‘মানুষের জন্য কিছু করব। আমায় সভাপতি আদেশ করেছেন। বেশ কিছু কাজ দিয়েছেন। তা করবো।’
মিঠুন চক্রবর্তীকে যে এরপর থেকে বঙ্গ বিজেপির কর্মসূচিতে আরও বেশি বেশি করে দেখা যাবে, তা নিশ্চিত করেছেন সভাপতি সুকান্ত গঙ্গোপাধ্য়ায়ও। তিনি বলেছেন, ‘ভারতীয় জনতা পার্টির হয়ে বিগত লোকসভা নির্বাচনে মিঠুনদা প্রায় ৫৫ দিন প্রচার করেছিলেন। নিরলস পরিশ্রম করেছিলেন এখানে বিজেপির ভোট বৃদ্ধির জন্য। তিনি বিজেপির সঙ্গে সেদিন যেভাবে ছিলেন, আজও সেভাবেই আছেন। উনি কথা দিয়েছেন আগামী দিনে বড় মাপের নির্বাচনগুলিতে বঙ্গ বিজেপিকে তিনি এর থেকেও বেশি সময় দেবেন।’
২০২১ এর নির্বাচনে বিজেপি ভালো ফল করেছে, কলকাতায় বিজেপির সদর কার্যালয়ে বৈঠকে যোগ দিলে বললেন মিঠুন চক্রবর্তী।#BJP #MithunChakraborty pic.twitter.com/S6140oQknm
— DD Bangla News (@DDBanglaNews) July 4, 2022
সম্প্রতি রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, ২০২৪ সালে একই সঙ্গে লোকসভা ও বিধানসভা ভোট করতে হবে। পতন ঘটবে তৃণমূল সরকারের। মিঠুন অবশ্য এই বিষয়ে কিছু বলতে চাননি। তিনি বলেন, ‘তৃণমূল থাকবে না যাবে, তা বলতে পারবো না। সেটা ভগবান বলবে। আমি আমাদের কথা বলতে পারি। (বিধানসভা নির্বাচনের ফলে) আমি খুব খুশি। ৩ থেকে ৭৭ হয়েছে। ৫৫ লক্ষ থেকে ২ কোটি ২৮ লক্ষ ভোট পেয়েছে।’ এটাকে ‘ইতিবাচক চিহ্ন’ হিসেবেই দেখছেন ‘মহাগুরু’। তাঁর মতে প্রথমবারেই বাজিমাত হয়ে যাবে, এমন ভাবার কারণ নেই। তবে, তা হতে পারত। কিন্তু হয়নি। তবে যে ফল করেছে গেরুয়া শিবির, তাতে মানুষের মধ্যে বিজেপিকে নিয়ে উৎসাহ বাড়ছে বলেই মনে করছেন মিঠুন চক্রবর্তী।
তবে, বিজেপি নেতাদের মধ্যে আরও উৎসাহ দেখতে চেয়েছেন মিঠুন। তিনি বলেন, ‘আমাদের নেতাদের মধ্যে, আমাদের কর্মীদের মধ্যে আরেকটু উৎসাহ দেখতে পেলে ভাল হত। তবে, এবার যা দেখছি, মনে হচ্ছে উৎসাহ আরও বাড়বে। আমাদের উপযুক্ত নেতা রয়েছে। আমাদের ক্ষমতা আছে। উৎসাহ বাড়বেই।’ বিধানসভা নির্বাচনের সময়, এক জনসভায় মিঠুন নিজেকে ‘জাত গোখরো’ বলে তাঁর অভিনিত ফিল্মের একটি সংলাপ বলেছিলেন। যা, নির্বাচনের সময় ও তার পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক হিংসার কারণ হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এদিন এই বিষয়ে মিঠুন বলেন, ‘হিংসার খবর কি আপনারা দেখিয়েছেন বা ছাপিয়েছেন? আমাকে প্রশ্ন করলে হবে? ওই সব ডায়লগ আমি গত ২৫ বছর ধরে দিচ্ছি। এমন কিছু ব্যাপার না।’