কলকাতা: তিনি অভিনেতা। তাঁর অভিনয়ে দর্শকরা হেসেছেন, কেঁদেছেন। বিগত কয়েক বছর আগে তিনি যোগ দিয়েছেন রাজনীতিতে। কথা হচ্ছে কাঞ্চন মল্লিককে নিয়ে। সম্প্রতি, কন্যা সন্তানের বাবা হয়েছেন কাঞ্চন। জন্মের খরচ ছ’লক্ষ টাকা। বিধানসভায় সেই বিল জমা দিতেই শুরু হয়েছে ফিসফাস। যদিও, কাঞ্চন মল্লিক নিজে দাবি করেছেন, “আমি কোনও বিল জমাই দিইনি। আমি যদি বিল জমা দিই সেই বিল তো আমার কাছে রয়েছে। আমরা বিধায়ক হিসাবে একটা মেডিকেল পাই। সেই হিসাবে আমি বিল জমা দেব। কিন্তু সেই বিলটা কত সেটা আমার একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়।” অপরদিকে, তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, “কাঞ্চন কোনও বিল জমা দেননি। ছ’লক্ষ টাকার বিল নিয়ে বিধানসভায় খোঁজ নিয়েছেন উনি জমা দিতে পারেন কি না। আলোচনা করেছেন। নিয়ম জেনেছেন। কিন্তু বিল জমা দেননি, রিপিট, বিল জমা দেননি। তার আগেই তিনি বিল জমা দিয়েছেন বলে সমালোচনা শুরু।”
বস্তুত, রাজ্য বিধানসভার বিধায়করা বেতনের পাশাপাশি একাধিক সুবিধা পেয়ে থাকেন রাজ্যের বিধায়করা। তার মধ্যে অন্যতম হল স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা। অর্থাৎ কোনও বিধায়ক হাসপাতালের বিল জমা দিলে তার খরচ বহন করে বিধানসভা। সেই মতো মঙ্গলবার হুগলির উত্তরপাড়ার বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিক সন্তান জন্মের বিল জমা দিয়েছেন বিধানসভায়। যা নিয়েই শুরু হয়েছে আলোচনা।
দক্ষিণ কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে কন্যা সন্তান জন্ম দেন কাঞ্চনের স্ত্রী শ্রীময়ী। তারই খরচ ৬ লক্ষ টাকা তেমনটাই জানা যাচ্ছে কাঞ্চনের জমা দেওয়া বিল থেকে। কিন্তু এত টাকার অঙ্ক কি বিধানসভা মিটিয়ে দেবে? চর্চা শুরু হয়েছে তা নিয়েই। জানা গিয়েছে, ছ’লক্ষের মধ্যে চিকিৎসক নিয়েছেন চার লক্ষ টাকা। আর বাকি খরচ হয়েছে ২ লক্ষ টাকা।
বস্তুত, বিধানসভায় স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে বিলের কোনও উর্ধ্বসীমা নেই। তবে একমাত্র চশমার বিল তৈরিতে রয়েছে ঊর্ধ্বসীমা রয়েছে। এর আগে মানিকচকের বিধায়ক সাবিত্রি মিত্র চশমার জন্য পঞ্চাশ হাজার টাকার বিল ধরিয়েছিলেন। তারপর চশমার বিলের ক্ষেত্রে ৫ হাজার টাকা উর্ধ্বসীমা ধরা হয়। বাকি চিকিৎসার ক্ষেত্রে কোনও নির্দিষ্ট মাপকাঠি নেই। এক্ষেত্রে রি-ইমবার্সমেন্ট পাওয়ার জন্য বিল জমা দিয়েছেন কাঞ্চন মল্লিক।
স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমরা সব কাগজ পত্র দেখব। যাচাই করব। তারপরে যদি মনে হয় যে এই বিষয়টি নিয়ে কথা বলার প্রয়োজন রয়েছে তাহলে ডেকে পাঠাব। বিষয়টি আমাদের নজরে রয়েছে।” এখানে উল্লেখ্য, বিধানসভায় এভাবে বেশি অঙ্কের বিল হলে প্রয়োজনে হাসপাতালে সুপার অথবা চিকিৎসককে ডেকে পাঠিয়ে গোটা বিষয়টি জানতে চান অধ্যক্ষ।