Kolkata Bus: করোনা হানায় একে একে ‘উধাও’ হয়ে যাচ্ছে কলকাতার বাস! নাজেহাল যাত্রীরা
Kolkata Bus: পেট্রোল-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে রাস্তায় বাস নামাননি অনেক বাস মালিকরা। পুজোর পর সেই পরিস্থিতি আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হতে দেখা যায়।
কলকাতা: ছিল ১০০, এখন ৬০। কোথাও ছিল ৪০, এখন ১৩। করোনা কালে সংখ্যাতত্ত্বের হিসাবে এও এক পরিসংখ্যান যা প্রতিনিয়ত নিত্যযাত্রীদের কালঘাম ছোটাচ্ছে। তা হল বেসরকারি-সরকারি বাস (Kolkata Bus)। করোনার কোপে এখন রাস্তায় সে সব বাসের ভিড়ও ফিকে হয়ে দাঁড়িয়েছে। সূত্রের খবর, চালক-কন্ডাক্টর থেকে কারিগর অধিকাংশই এই মুহূর্তে করোনা আক্রান্ত। যার জেরে রাস্তায় বাস কম দেখা যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে চিন্তার মধ্যে রয়েছেন বেসরকারি বাস মালিক সংগঠনের কর্তারা। বাস পরিষেবা ব্যাহত হওয়ায় স্বাভাবিকভাবে নাজেহাল নিত্যযাত্রীরাও।
পেট্রোল-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে রাস্তায় বাস নামাননি অনেক বাস মালিকরা। পুজোর পর সেই পরিস্থিতি আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হতে দেখা যায়। বাস মালিকরা নিজেরাই বাসের ভাড়া বাড়িয়ে রাস্তায় বাস নামায়। কিন্তু ফের করোনা প্রকোপে একের পর এক বাস চালক থেকে কন্ডাক্টর আক্রান্ত হচ্ছেন। জানা যাচ্ছে, পরিস্থিতি এতটাই শোচনীয় হয়ে দাঁড়াচ্ছে, বাধ্য হয়ে তাঁরা বাস নামাচ্ছেন না। বেসরকারি বাস মালিক সংগঠনের কর্তা টিটো সাহা জানিয়েছেন, এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে খুব তাড়াতাড়ি শহর কলকাতায় বেসরকারি বাসের সংখ্যা প্রায় অর্ধেক হয়ে যাবে। শুধুমাত্র করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যাওয়া নয়। অনেকেই এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে কাজ করতে চাইছেন না। বিশেষত যাঁরা জেলা থেকে শহর কলকাতায় আসেন তাঁদের একটা অংশ এই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে কাজ করার ক্ষেত্রে অনীহা প্রকাশ করছেন। সে কারণেই তাঁদের আশঙ্কা, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে শহর কলকাতার বেসরকারি বাস পরিষেবা যথেষ্ট চিন্তার মধ্যে পড়বে।
এক নজরে বাসের সংখ্যা: মহানগরে বাস পরিষেবা কতটা ব্যাহত হচ্ছে, তার একটা খণ্ডচিত্র তুলে ধরা যেতে পারে। যেমন, ৪৫ নম্বর রুট, দমদম বিমানবন্দর থেকে বৈষ্ণবঘাটা। এই রুটে পুজোর পর কমপক্ষে ১০০টি বাস চলত। এখন সেটা দাঁড়িয়েছে মাত্র ৬০-এ। যাদবপুর থানা থেকে বাগবাজার, ২৪০ নম্বর বাস রুটে ৪৪টি বাস চলছিল, এখন কমে মাত্র ২৫টি বাস চলছে। নাগেরবাজার-হাওড়া রুটে ২১৯ নম্বর বাস ৩০ থেকে এখন ১৯টি চলছে। শিয়ালদহ-পর্ণশ্রী রুটে ১৩ নম্বর বাস চলছে মাত্র ১৩টি। যেখানে পুজোর পর চলছিল ৪০টি। বাস মালিকদের কথায়, এখন যা চলছে আগামিকাল আদৌ সেই সংখ্যক বাস চলবে কিনা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।
সংগঠনের কর্তা টিটো সাহা বলেন, “করোনা আবহের মধ্যে রোজগার অনেকটাই কমেছে। যাত্রী সংখ্যাও কম হচ্ছে। রোজগার কমতে কমতে প্রায় অর্ধেকের কাছাকাছি। এই অবস্থায় পরিষেবা সচল রাখা যথেষ্টই চ্যালেঞ্জের।” বেসরকারি বাস পরিষেবা কমলেও সরকারি বাস পরিষেবাকে সচল রাখার ব্যাপারে আশাবাদী রাজ্য সরকার। প্রয়োজনের অতিরিক্ত বাস চালানোর কথা জানিয়ে রেখেছে রাজ্য পরিবহণ দফতর। কিন্তু শহর কলকাতায় যে সংখ্যায় বেসরকারি বাস চলে, সরকারি বাস দিয়ে তা সামাল দেওয়া এখনই সম্ভব নয়। ফলে করোনা আবহের মধ্যে বেসরকারি বাস কমতে থাকার বিষয়টি যথেষ্ট চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে গণপরিবহণের ক্ষেত্রে।
আরও পড়ুন- ঊর্ধ্বমুখী পারদ, দেখা নেই শীতের, আগামিকাল থেকেই বঙ্গে বৃষ্টি…কী বলছে হাওয়া অফিস?