কলকাতা : রাজ্যের উৎকর্ষ কেন্দ্র এসএসকেএমে বিকল এমআরআই। প্রায় দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে অকেজো অবস্থায় পড়ে রয়েছে যন্ত্র। আর এর জেরে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন রোগীরা। শুধু কী তাই! সরকারি পরিকাঠামোয় একমাত্র এমআরআই সেন্টার বিকল হওয়ার অন্য তাৎপর্যও রয়েছে। পিপিপি মডেলে পরিচালিত ডায়গনিস্টিক সেন্টারের জন্য সরকারকে বাড়তি টাকা গুনতে হয়। সরকারি পরিকাঠামোয় পরিচালিত এমআরআই সেন্টার সরকারের নিজস্ব। প্রশ্ন উঠছে, দু’সপ্তাহ ধরে সরকারি এমআরআই সেন্টার অকেজো থাকার জন্য পিপিপি মডেল পরিচালিত সেন্টারগুলি যে ভাবে লাভবান হচ্ছে তার দায় কার?
জানা গিয়েছে, শীতাতপ যন্ত্রে কাজ করছে না বলে অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে এমআরআই। এসএসকেএম হাসপাতাল রাজ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রথম সারির সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা কেন্দ্র। এসএসকেএম হাসপাতালে রোগীর চাপ অত্যন্ত বেশি। প্রতিদিন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ আসেন এখানে পরিষেবা পাওয়ার জন্য। এ হেন একটি হাসপাতাল, যা কি না রাজ্যের উৎকর্ষ কেন্দ্র সেখানে দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে এমআরআই যন্ত্র অকেজো হয়ে পড়ে থাকায় সমস্যার পড়তে হচ্ছে দূর দূরান্ত থেকে আসা রোগীদের।
এ ক্ষেত্রে আরও কিছু প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। পিপিপি মডেলে অন্য যে এমআরআইগুলি রয়েছে, সেগুলি কাজ করলেও তার জন্য সরকারকে বাড়তি টাকা গুণতে হয়। স্বাস্থ্য ভবনের তরফে স্পষ্ট বার্তা রয়েছে, সরকারি পরিকাঠামোয় যে এমআরআই রয়েছে, তাতেই বেশি সংখ্যক এমআরআই করাতে হবে। যদি সেখানে চাপ পড়ে, তাহলে সহায়ক হিসেবে রয়েছে পিপিপি মডেলে গড়ে ওঠা এমআরআই পরীক্ষাকেন্দ্র। এ হেন পরিস্থিতিতে সরকারি পরিকাঠামোয় গড়ে ওঠা এমআরআই অকেজো হয়ে পড়ে থাকায় পিপিপি মডেলে গড়ে ওঠা ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলিতে পাঠাতে হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে যে অতিরিক্ত অর্থের চাপ পড়ছে, তার দায় কার? সেই প্রশ্ন ইতিমধ্যেই উঠতে শুরু করে গিয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে এসএসকেএম হাসপাতালের এমএসভিপি পীয়ূষ রায় জানিয়েছেন, “রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত কিছু সমস্যা চলছে। যন্ত্রটি ১০ বছর হয়ে গিয়েছে তো, সেই নিয়ে চেষ্টা চলছে যাতে তাড়াতাড়ি সমস্যা সমাধান করা যায়।”
এই বিষয়ে চিকিৎসক সংগঠন সার্ভিস ডক্টর্স ফোরামের নেতা সজল বিশ্বাস বলেন, “অন্তঃসার শূন্য স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। রাজ্যজুড়ে একই ছবি। কেবল নতুন নতুন বাড়ি তৈরি ও রঙের পরে রঙের প্রলেপ লাগিয়ে মানুষকে ধোকা দেওয়া এবং মোটা অঙ্কের কাটমানি খাওয়া। ফলে কম বাজেটের কাজ অথচ পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যেখান থেকে কাটমানি খাওয়ার সুযোগ কম, সেগুলি বন্ধ রাখা হচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবার সংকোচন ঘটিয়ে পিপিপি মডেলের পরিষেবা এবং কর্পোরেট হাসপাতালের মুনাফাকে সুনিশ্চিত করা হচ্ছে। মানুষ হারাচ্ছে স্বাস্থ্যের অধিকার।”