কলকাতা: নতুন পুরসভার তালিকায় যুক্ত হয়েছে আরও দু’টি নাম। এই দুই পুরসভাই উত্তরবঙ্গে। একটি জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়ি (Moynaguri), অন্যটি আলিপুরদুয়ারের ফালাকাটা (Falakata)। মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের পরই আনুষ্ঠানিক ভাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুই পুরসভার নাম ঘোষণা করেছিলেন। এই দুই পুরসভার সীমানা পুনর্বিন্যাসের কাজও শেষ হয়েছে।
সংরক্ষণের কাজও শুরু হবে কিছুদিনের মধ্যেই। সূত্রের খবর, আগামী নভেম্বরের মধ্যেই এই কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। ভোট প্রক্রিয়ার সঙ্গেও ময়নাগুড়ি ও ফালাকাটা পুরসভাকে যুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে রাজ্যের তরফে জানানোও হয়েছে। তবে রাজ্য নির্বাচন কমিশন সূত্রে যা খবর তাতে ২০২২ সালের আগে নতুন দুই পুরসভার ভোট হবে না।
এতদিন রাজ্যে ১২৫টি পুরসভা ছিল। নতুন দুই পুরসভা ময়নাগুড়ি ও ফালাকাটা সেই তালিকায় যুক্ত হওয়ায় সংখ্যাটা বেড়ে ১২৭-এ দাঁড়িয়েছে। পঞ্চায়েতের তুলনায় অনেক বেশি সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায় পুরসভা এলাকায়। পুরসভার ক্ষেত্রে অর্থও অনেক বেশি বরাদ্দ হয়। স্বাভাবিকভাবেই জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়ি পুরসভার সমস্ত সুযোগ সুবিধা এবার এলাকার মানুষ পাবেন।
একই ভাবে আলিপুরদুয়ারের ফালাকাটার বাসিন্দদেরও সেই সুযোগ মিলবে। সম্প্রতি পুর নগরোন্নয়ন দফতর এই দুই পুরসভার বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করে। এদিকে নতুন পুরসভা মানেই সেখানে নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তা থাকবে। তার জন্য পুর নগরোন্নয়ন দফতর রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে ইতিমধ্যেই বিস্তারিত তথ্যও পাঠিয়েছে। রাজ্য চায় যে ১১২টি পুরসভায় ভোট বাকি রয়েছে তার সঙ্গে এই দুই নতুন পুরসভাতেও ভোট হোক। এ ক্ষেত্রে ১১৪টি পুরসভায় ভোট হবে।
দীর্ঘ সময় কেটে গেলেও রাজ্যে পুরভোটের বালাই নেই। যা নিয়ে বারংবার প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ২০১৯ সাল থেকেই। কারণ ২০১৮ সালেই রাজ্যের বেশিরভাগ পুরসভার মেয়াদ ফুরিয়ে গিয়েছে। তার পর থেকে পুরভোট ভেঙে দিয়ে সেখানে প্রশাসক এবং প্রশাসনিক বোর্ড নিয়োগ করা হয়েছে। কিন্তু সেই বোর্ড নিয়েও ব্যাপক রাজনীতিকরণ হয়েছে বলে দাবি বিজেপি ও সিপিএম-সহ বাকি বিরোধীদের।
গত লোকসভা ভোটের পাট চুকে যাওয়ার কয়েকমাসের মধ্যেই পুরভোট করা হতে পারে। এমন একটা সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছিল। কিন্তু করোনা সেই সমস্ত সম্ভাবনায় জল ঢেলে দেয়। বর্তমানে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরে আসায় ও একের পর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ায় এ বার পুরভোটও আর ফেলে রাখতে চাইছে না রাজ্য সরকার। আপাতত তেমনই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা যাচ্ছে, সব কিছু ঠিক থাকলে খুব তাড়াতাড়িই রাজ্যে বকেয়া পুর নির্বাচন হতে পারে। এ বিষয়ে তৃণমূলের তরফে বারবারই দাবি করা হয়েছে, তারা পুরভোটের জন্য প্রস্তুত। আগেই তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেছিলেন, ‘আমরা তাড়াতাড়ি পুর ভোটের পক্ষে।’
বিজেপিও জানিয়েছে, তারা বহু আগে থেকে পুর নির্বাচন করানোর দাবি জানিয়ে আসছিল। কিন্তু রাজ্য সরকারের কোনও ইচ্ছা ছিল না। এবার ভোট হলে তা যেন কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করে করা হয়, তেমনই দাবি বিজেপির।
আরও পড়ুন: Fire at Chetla: ভয়াবহ আগুন চেতলার ঝুপড়িতে, অগ্নিদগ্ধ তিন শিশু