Murder in Baguiati: পকেটে ছিল আম, একটা ছুরি! মুড়ি খেতে খেতে টিভি দেখছিল ১৩ বছরের বাচ্চা ছেলেটা, তারপর কেন ‘দিদাকে মেরে ফেলল’ সে?
Murder in Baguiati: কী বলছেন ওই বৃদ্ধার প্রতিবেশী? তাঁর বয়ানে উঠে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
কলকাতা: ‘একটা অদ্ভূত গোঙানি শব্দ কানে এসেছিল। মাসিমা আমাকে ডাকতেও পাচ্ছিলেন না সেভাবে। জানলা দিয়ে বাইরে তাকাতেই দেখি গ্রিল ধরে কেমনভাবে একটা দাঁড়িয়ে রয়েছেন মাসিমা। দেখেই মনে হচ্ছিল পড়ে যাবেন এখনই। সে এক ভয়ানক দৃশ্য। তখনও বুঝিনি মাসিমার গলা চিড়ে গিয়েছে…’ বাগুইআটিতে পাশের বাড়ির তেরো বছরের নাবালকের ‘চালানো ক্ষুরে’ মৃত্যু হয়েছে সরস্বতী সরকার নামে এক বৃদ্ধার। এই ঘটনা রীতিমতো চমকে দিয়েছে গোটা শহর কলকাতা-বাংলাকে। একটা তেরো বছরের ছেলে কীভাবে এতটা নৃশংস কাজ করতে পারে, সবটা জানার পর একটাই প্রশ্ন সকলের মুখে। এই ঘটনার সে অর্থে কোনও প্রত্যক্ষদর্শী নেই। তবে পাশের বাড়ির এক গৃহবধূ ঘটনার পরবর্তী পরিস্থিতির ব্যাখ্যা দিয়েছেন। এবং সেটাও রীতিমতো শিউরে ওঠার মতোই। বাগুইআটির নিহত বৃদ্ধার বাড়ির দু’হাত ধরেই এই মহিলার বাড়ি।
বৃদ্ধার প্রতিবেশী ওই মহিলা জানাচ্ছেন, “আমি তখনও দেখি নি মাসিমার গলা দিয়ে রক্ত ঝরছে। আমি বললাম কী হয়েছে মাসিমা? শরীর খারাপ লাগছে? আমি তখন আমার বাচ্চাটাকে পড়াচ্ছিলাম। কারণ মাসিমা কয়েকদিন আগেই অসুস্থ হয়েছিলেন। কথা বলতে বলতেই মাসিমা বললেন বাঁচাও বাঁচাও। তখন দেখি সারা গা রক্তে ভেসে যাচ্ছে। তারপর আমিও চিৎকার করে সবাইকে ডাকি। ওঁ তখনও কথা বলতে পারছিলেন। পাড়ার ছেলেরা সব শুনল। পাড়ার ছেলেদের কাছেই ওই মাসিমা বলে গিয়েছিলেন ওই ছেলেটার নাম। ওই পাশেই থাকে।”
প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, সরস্বতী সরকারের কয়েকটা বাড়ির পরেই মূল অভিযুক্ত ওই কিশোরের বাড়ি। বুধবার রাতে ঘটনার পরও সে বাড়িতেই ছিল। জানা যাচ্ছে, ওই বৃদ্ধার বাড়িতে নিত্য যাতায়াত ছিল কিশোরের। সে সরস্বতীকে দিদা বলে ডাকত। তার সঙ্গে খেলত, খাবার খেত, টিভি দেখত। কিন্তু কেন যে বুধবার রাতে সে এই ঘটনা ঘটাল, তা বুঝতে পারছেন না পড়শিরাই।
অভিযুক্ত ওই নাবালককে ইতিমধ্যেই আটক করেছে বাগুইআটি থানার পুলিশ। জেরায় প্রাথমিকভাবে সে জানিয়েছে, বুধবার সন্ধ্যায় একসঙ্গেই টিভি দেখছিল, মুড়িও খাচ্ছিল তারা। কিন্তু তারপরই এমন কী হল, সেটা আর স্পষ্ট করছে না সে। ধারালো অস্ত্র দিয়ে সে যে বৃদ্ধার গলার নলিতে আঘাত করেছে, তা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছে পুলিশও। উল্লেখ্য, বৃদ্ধা মৃত্যুর আগেও পাড়া প্রতিবেশী ও ছেলের কাছে এমনটাই জানিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু এই ধারালো অস্ত্র পেল কোথায়? পুলিশ জানতে পেরেছে, তেরো বছরের কিশোরের প্যান্টের পকেটে একটা আম ছিল। তা কাটার জন্য একটা ছুরিও ছিল। মনে করা হচ্ছে, সেই ছুরি দিয়েই হামলা চালিয়েছে সে। এখনও ওই কিশোরকেই জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। জেরায় হামলার আসল কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। সেটাই জানতে চাইছেন তদন্তকারীরা।