
কলকাতা: একের পর এক বাড়ি পুড়ে ছারখার। বেতবোনা, জাফনাবাদের মতো গ্রাম চোখে দেখা যাচ্ছে না। এখনও ঘরে ফেরার সাহস পাচ্ছেন না অনেকে। মুর্শিদাবাদের সেই অশান্তি নিয়ে চারটি মামলা হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। আজ, বৃহস্পতিবার সেই মামলার শুনানি হল বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি রাজা বসু চৌধুরীর বেঞ্চে।
এদিনের শুনানিতে রাজ্য পুলিশের ব্যর্থতা সহ একের পর অভিযোগ উঠল রাজ্য়ের বিরুদ্ধে। কেন্দ্রীয় সংস্থা এনআইএ (NIA)-কে দিয়ে তদন্তের দাবিও জানানো হয়েছে আদালতে। সব ছবি ও ভিডিয়ো হাইকোর্টে জমা পড়েছে। জমা পড়ল কেন্দ্রের রিপোর্টও।
কী অভিযোগ মামলাকারীর আইনজীবীর
আইনজীবীর দাবি, সংবাদমাধ্যমের কাউকে ছাড়া হয়নি। UAPA আইন লাগু প্রয়োজন। আইনজীবী আরও উল্লেখ করেছেন, এজেন্সি থেকে জানা গিয়েছে যে, বাংলাদেশি দুষ্কৃতীরা হামলা চালিয়েছে।
আরও অভিযোগ, ‘তুরস্ক থেকে টাকা এসেছে বাংলায়। ইমামদের এমন ইন্টারভিউ রয়েছে যেখানে প্রকাশ্যে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা বলা হচ্ছে, হুমকি দেওয়া হচ্ছে।’
আইনজীবীদের বক্তব্য, প্রতিবার শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের নামে এটা চলতে পারে না। রাজ্য কোনও আন্দোলনের অনুমতি যেন না দেয়, কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হোক।
আইনজীবী অনিন্দ্য সুন্দর দাস বলেন, ‘এর আগেও একই ঘটনা ঘটেছে। রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হোক।’
কী দাবি কেন্দ্রের?
এদিন আদালতে জমা পড়েছে কেন্দ্রের রিপোর্ট। অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল, অশোক চক্রবর্তী দাবি করেন, কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন রাখার মেয়াদ বাড়ানো হোক। তিনি আরও বলেন, “কোনও বোমাবাজি হলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে এনআইএ তদন্ত দেওয়ার ক্ষমতা আছে। আমাদের সেই অনুযায়ী অনুমতি দেওয়া হোক।”
মুর্শিদাবাদ সহ বাকি জায়গাতেও একই ধরণের হামলার আশঙ্কা রয়েছে বলে দাবি করে কেন্দ্রের বক্তব্য, উপদ্রুত এলাকায় বাহিনী মোতায়েন করার ক্ষমতা রয়েছে কেন্দ্রের।
বিচারপতি সৌমেন সেন বলেন, রাজ্যের সঙ্গে সহযোগিতা মানে বিএসএফ (BSF)-এর ক্ষমতা কমছে না।
এনআইএ-র বক্তব্য, “আমাদের নির্দেশ দিলে প্রাথমিকভাবে আমরা রিপোর্ট দিতে পারি। আমরা কেন্দ্র বা আদালতের অনুমতি ছাড়া একা কিছু করতে পারি না।”
কী জানাল রাজ্য?
তিনি আরও জানান, ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করা হয়েছে গুজব ছড়ানো বন্ধ করার জন্য। জঙ্গিপুরে পুলিশ মোতায়েন করার পর দুদিন কোনও সমস্যা হয়নি বলেও জাবি কর হয়েছে। ইমামদের সঙ্গে বৈঠক করে শান্তি বজায় রাখার আর্জি জানানো হয়েছে। রাজ্যের যা কর্তব্য সেটা করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন রাজ্যের আইনজীবী।
রাজ্যের অভিযোগ, রাজনৈতিক নেতাদের পক্ষ থেকে উস্কানিমূলক বক্তব্য রাখা হয়েছে। তবে তাঁর প্রশ্ন, কেন্দ্রের আইনের বিরুদ্ধে যখন আন্দোলন চলছে, তখন তারাই কেন এসে নিয়ন্ত্রণ করবে? এটা কি বেয়াইনি নয়?